Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০১৮, ১১:৫৫ এএম

অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের সামান্যতম পরিবেশ তৈরী করতে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দেওয়া, গ্রেফতার ও হয়রানী বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলেও এখনও পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ভুয়া মামলা দায়ের করা হচ্ছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে, তল্লাশীর নামে বাড়ীতে বাড়ীতে হানা দিয়ে হুমকি দেয়া হচ্ছে এখনও । এছাড়াও নির্বাচনে বিদেশী পর্যবেক্ষকরা যাতে না থাকতে পারে সেজন্য ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন নির্ধারণ করেছে ইসি। ২৫ ডিসেম্বর বড় দিন, থার্টি ফার্ষ্ট ও ইংরেজি নর্ববর্ষের কারণে বিদেশী পর্যবেক্ষক, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাই কমিশনার ও কর্মকর্তারা ছুটিতে থাকবেন। সুতরাং তাদের দৃষ্টির অন্তরালেই একটি বড় ভোট চুরির নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে সরকারের কৌশলী নির্দেশেই ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন ঘোষনা করেছে ইসি। বিএনপি পক্ষ থেকে পূর্বের দাবি অনুযায়ী নির্বাচন এক মাস পেছানো, পুন:তফশীল, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারে সব রাজনৈতিক দলকে সমান সুযোগ দেওয়ারও দাবি জানান রিজভী। মঙ্গলবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে রিজভী বলেন, খালেদা জিয়াকে আদালতের নির্দেশে বিএসএমএমইউ (পিজি)-তে ভর্তি করে সরকারের নির্দেশে চিকিৎসা না দিয়েই আবারও কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে তাঁর কোন চিকিৎসা চলছে না। নিয়মিত যে থেরাপী দেয়া হতো তা থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে, বর্তমানে তিনি গুরুতর অসুস্থ। নির্দোষ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার জন্যই কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে। এছাড়া আর কোন কারণ নেই। এ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া যতগুলো নির্বাচনে যত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন সবগুলোতেই লাখ লাখ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন, অনেকেই তা পারেননি, এজন্যই বেগম জিয়ার প্রতি এত প্রতিহিংসা। আমি এই মূহুর্তে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবী জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্রদের ছাড়া বিএনপিসহ দেশের সব রাজনৈতিক দল, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি ও জনমতকে উপেক্ষা করে সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহারের ঘোষনা দিয়েছিলেন সিইসি। কিন্তু দু’দিন আগে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) সাহাদাত হোসেন ৮০ থেকে ১০০টি আসনে ইভিএম ব্যবহারের ঘোষনা দিয়েছেন। যা আরও গভীর চক্রান্ত বলেই সকলেই বিশ্বাস করছে। ইভিএম শুধু দেশে দেশে বিতর্কিতই নয়, ইভিএমে ভোট কারচুপি হয় বলেই পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এটি নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। ভারতসহ যে দু’একটি দেশে যেখানে সীমিত আকারে ব্যবহার করা শুরু হয়েছিল সেখানেও জালিয়াতির কারণেই ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে উঠেছে। ঐসব দেশে রাজনৈতিক দলের নেতারা ইভিএমের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। ভোট কারচুপি ও ভোট ডাকাতির এই মেশিন আরও ব্যাপকভাবে ব্যবহার করার এই সিদ্ধান্ত আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট জালিয়াতিরই মহাপরিকল্পনা। নির্বাচনে কোন ইভিএম ব্যবহার করা চলবে না। ভোট ডাকাতির যন্ত্র ইভিএম ব্যবহারের এই মহাপরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হবে। নির্বাচন কমিশনের সচিব বলেছেন-ইভিএম সেন্টারে সেনাবাহিনী নিয়োগ থাকবে। তার এই বক্তব্যে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। ইভিএম তো একটি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র, যা বহুদুর থেকে ম্যানিপুলেট করা যায়, তাহলে সেখানে সেনাবাহিনী নিয়োগ দিয়ে কী লাভ ? বরং ম্যানুয়ালী ভোটগ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যালট পেপার কেড়ে নেয়া, জোর করে সীল মারতে গুন্ডামী হয়, সুতরাং গুন্ডামী-সন্ত্রাসী ঠেকাতে সেনাবাহিনীর প্রয়োজন। এজন্যই ক্ষমতাসীন দল ছাড়া দলমত নির্বিশেষে ৩০০ আসনে প্রতিটি সেন্টারে সেন্টারে ম্যাজেষ্ট্রেসী ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী নিয়োগের দাবি জানিয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ