Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট

এক মাস পিছিয়ে নতুন তফসিল ঘোষণার দাবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এ ছাড়া তফসিল বাতিল করে তা এক মাস পিছিয়ে নতুন তফসিল ঘোষণারও দাবি জানিয়েছে তারা। গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার এ সিদ্ধান্ত জানায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের উপস্থিতিতে তাঁর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এ জোটের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ন্যূনতম শর্তও পূরণ হয়নি। তফসিল ঘোষনার পরও বিটিভিসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম প্রচার হচ্ছে। এটা আচরণবিধির লঙ্ঘন। ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে আপত্তি থাকা সত্তে¡ও তা বাতিল হয়নি। এ রকম পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণমূলক, গ্রুহণযোগ্য নির্বাচন হওয়া প্রায় অসম্ভব। এ অবস্থায় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন। তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের অংশ হিসেবে একাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
লিখিত বক্তব্য পাঠের আগে ড. কামাল হোসেন বলেন, সংবিধানের মৌলিক বিষয় ও মূল্যবোধ রক্ষার জন্য এ ঐক্য গঠন করা হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য জনগণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করা। সংবিধানমতে জনগণ রাষ্ট্রের মালিক। আশা করি এ ঐক্যবদ্ধ শক্তি নির্বাচনে জনগণের আস্থা অর্জন করে জনগণের মালিকানা কায়েম করবে। আমাদের দেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যতবার জনগণের ঐক্য হয়েছে ততবারই বিজয় হয়েছে। এবারও আমাদের জয় হবে ইনশাঅল্লাহ।
সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি না হলে ঐক্যফ্রন্ট ভিন্নপথে হাঁটবে কিনা -সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ড. কামাল হোসেন বলেন, অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রত্যেক দিনই অবস্থার মূল্যায়ন করা হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য আন্দোলনও চলতে থাকবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের গেলে দলীয় প্রতীকের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রতীকের বিষয়ে পরে জানানো হবে। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করতে গিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে এ বিষয়ে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ড.কামাল বলেন, প্রয়োজনে আইনী পদক্ষেপও নেওয়া হবে।
লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, সংকট সমাধানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতাকে গুরুত্ব দিয়েছে। কিন্তু সরকারি দলের মধ্যে সমঝোতা করার মানসিকতা দেখা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী সভা-সমাবেশে বিধি-নিষেধ না থাকা, হয়রানিমূলক মামলা না করার ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও তা পূরণ করা হয়নি। রাজশাহীর সমাবেশের আগে রাজশাহীগামী বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। অনেক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার করা হয়।
তফসিল ঘোষণা পেছানোর দাবি করে ইসিকে চিঠি দিয়েছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে গত ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৯ নভেম্বর, বাছাইয়ের তারিখ ২২ নভেম্বর ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ নভেম্বর।
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকারি দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপের আগেই নির্বাচন কমিশন জানায়, প্রধান দুই অংশীজন একমত হলে তফসিল পিছিয়ে দেওয়া হবে। তবে তা করা হয়নি। সরকারি দলের তফসিল পেছানোর আহ্বান না জানানো ও নির্বাচন কমিশনের তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা প্রমাণ করে সরকার কোনো সমঝোতা চায়নি। সরকার ২০১৪ সালের মতো আরও একটি নির্বাচন করতে চায় বলে মনে করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
সাত দফা দাবি থেকে সরে আসেনি জানিয়ে ঐক্যফ্রন্ট বলেছে, সাত দফার সাথে বর্তমান তফসিল আরও এক মাস পিছিয়ে দিয়ে নতুন তফসিল ঘোষণার দাবি যুক্ত হয়েছে। ২০০৮ সালে তফসিল দুইবার পিছিয়ে দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। নির্বাচনে অংশ নেওয়াকেও আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিবেচনা করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
লিখিত বক্তব্যে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, একটা অংশগ্রহনমূলক এবং গ্রহনযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের যাবতীয় দায়িত্ব সরকার ও নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতির পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কড়া নজর রাখবে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের আচরণের প্রতি। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমরা বলে দিতে চাই, জনগনের দাবি মানা না হলে উদ্ভুত পরিস্থিতির দায়-দায়িত্ব সরকার ও নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, জেএসডির আ স ম আবদুর রব, আবদুল মালেক রতন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, ইকবাল সিদ্দিকী, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ। #



 

Show all comments
  • Zain Imam ১২ নভেম্বর, ২০১৮, ২:৪১ এএম says : 0
    কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তমকে আরো গুরুত্ববহ ভূমিকা নিতে হবে।জাতি আবার আপনার বীরত্ব দেখতে চায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Kazi anas ১২ নভেম্বর, ২০১৮, ২:৪৩ এএম says : 0
    এর আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও তো এই কথা েবলে ভোট করেছিলেন, কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়েছে
    Total Reply(0) Reply
  • Ameen Munshi ১২ নভেম্বর, ২০১৮, ২:৪৪ এএম says : 0
    সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচনে গিয়ে কিভাবে আন্দোলন করবেন আমাদের বুঝে আসছে না।
    Total Reply(0) Reply
  • হাসান আলি . ১২ নভেম্বর, ২০১৮, ৮:৫২ এএম says : 0
    নিবাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হবে এবং মহাজোট 220 টি আসন জিতে নতুন সরকার গঠন করবে শতভাগ নিশ্চিত.
    Total Reply(0) Reply
  • রানা ১২ নভেম্বর, ২০১৮, ৮:৫৭ এএম says : 0
    আমি নিশ্চিত মহাজোট আবার সরকার গঠন করবে কারণ এই জোটের ভোটার
    Total Reply(0) Reply
  • ১২ নভেম্বর, ২০১৮, ৮:৫৮ এএম says : 0
    যে যাই বলুক মহাজোট সরকার গঠন করবে নিশ্চিত.
    Total Reply(0) Reply
  • কামরুল ১২ নভেম্বর, ২০১৮, ১:২০ পিএম says : 0
    আমার মনে বি এন পি জোট চরম ভাবে পরাজিত হবে এবং চোরাবালিতে হারিয়ে যাবে নিশ্চিত.
    Total Reply(0) Reply
  • ১২ নভেম্বর, ২০১৮, ১:৩২ পিএম says : 0
    BNP must be failure all sides so in that moment there's nothing to do contest general election coming month it is very shame for BNP alliance.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ