Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আজ ঢাকা-পঞ্চগড় ট্রেনের উদ্বোধন

বিশেষ সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আজ থেকে চালু হচ্ছে ঢাকা-পঞ্চগড় ট্রেন যোগাযোগ। দেশের সর্ব উত্তরে পঞ্চগড় রেল স্টেশন থেকে আজ সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ছেড়ে আসবে দ্রুতযান এক্সপ্রেস। একইভাবে রাত ৯টায় ছেড়ে আসবে একতা এক্সপ্রেস। দেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম রেলপথে এই দুটি ট্রেন আজ থেকে সপ্তাহের প্রতিদিন চলাচল করবে। দীর্ঘদিন পর সরাসরি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচলের ঘোষণায় ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়বাসীর মধ্যে স্থানীয়দের মাঝে আনন্দ উল্লাস দেখা গেছে।
রেলভবন সূত্র জানায়, বহুল প্রতীক্ষিত ট্রেনটি উদ্বোধনের কথা ছিল রেলমন্ত্রীর। যেহেতু পঞ্চগড় থেকে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করছে সেহেতু পঞ্চগড়েই গিয়ে ট্রেনটি উদ্বোধন করতে হবে। কিন্তকু নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় রেলমন্ত্রী আর ট্রেনটি উদ্বোধন করতে চাননি। এ কারণে রেলওয়ের মহাপরিচালক রাজশাহী বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়ে ট্রেনটি উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম (৫৮৬ কি.মি.) রেলপথ পাড়ি দেয়ার জন্য ট্রেন দুটি যাতে সময় মেনে চলতে পারে সেজন্যও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনটি রেকে (১৩ কোচ সমন্বয়ে এক রেক) ট্রেন দুটি চলবে। দুটি থাকবে চলাচলরত অবস্থায় বাকী একটি রেক প্রস্তুত রাখা হবে। এতে করে ঢাকা থেকে কোন ট্রেন বিলম্বে পঞ্চগড় পৌঁছালেও পঞ্চগড় থেকে ঢাকামুখি ট্রেন সঠিক সময়ে ছাড়তে পারবে। বাড়তি এই রেক নেয়া হচ্ছে নীলসাগর থেকে। আর নীলসাগরে যুক্ত হচ্ছে ভারত থেকে আমদানীকৃত এলএইচবি কোচ। অর্থাৎ একতা ও দ্রুতযান ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানীকৃত পিটি ইনকা কোচে চলবে।
সূত্র জানায়, দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটি পঞ্চগড় স্টেশন থেকে ছাড়বে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে। ট্রেনটি ঢাকা এসে পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে। একতা এক্সপ্রেস পঞ্চগড় থেকে রাত ৯টায় ছেড়ে ঢাকায় আসবে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে। পক্ষান্তরে, দ্রুতযান এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে ছাড়বে রাত ৮টায়। পঞ্চগড়ে পৌঁছাবে ভোর ৬টা ৪৫ মিনিটে। একতা এক্সপ্রেস সকাল ১০টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে পঞ্চগড় পৌঁছাবে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে। এ দুটি ট্রেনের কোনো সাপ্তাহিক বিরতি থাকবে না।
এদিকে, আমাদের পঞ্চগড় সংবাদদাতা জানান, আজ সকাল এবং রাতে দুই দফায় দুটি ট্রেন উদ্বোধন করা হবে। এ উপলক্ষে সন্ধ্যায় পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন। পঞ্চগড় নাগরিক কমিটিসহ বিভিন্ন সংগঠনও আনন্দ র‌্যালির আয়োজন করেছে। তবে আন্তঃনগর ট্রেন দুটিতে পঞ্চগড়ের যাত্রীদের জন্য বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা নিয়ে মনোকষ্ট রয়েছে অনেকের মধ্যে।
২০১৩ সালে পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চগড় থেকে পাবর্তীপুর পর্যন্ত আধুনিক রেল যোগাযোগের উদ্বোধন করেন। এরপর বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিম জোনের আওতায় ২০১৬ সালে উন্নয়ন কাজ শেষ হয়। কিন্তু সুযোগ সুবিধা থাকা সত্তে¡ও নতুন কোচের অভাবে পঞ্চগড় থেকে সরাসরি আন্তঃনগর ট্রেন চালু সম্ভব হয়নি।
গত বছরের ১৭ জুন রেলমন্ত্রী মজিবুল হক পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত দুটি শাটল ট্রেন উদ্বোধন করেন।
ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী আশ্বাস দেন ইন্দোনেশিয়া থেকে নতুন ৫০টি নতুন কোচ আনার প্রক্রিয়া চলছে। নতুন কোচ আসলে পঞ্চগড়-ঢাকা রুটে সরাসরি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু হবে। দীর্ঘ ১৬ মাস পরে হলেও রেলমন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হওয়ায় ঠাকুরগঁও ও পঞ্চগড়বাসী বেজায় খুশি।
জানা গেছে, ঢাকা থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত দ্রুতযান ও একতায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) বার্থের ভাড়া ১ হাজার ৯৪২ টাকা, এসি চেয়ারের ভাড়া ১ হাজার ৫৩ টাকা, নন এসি বার্থের ভাড়া ১ হাজার ১৪৫ টাকা এবং শোভন চেয়ারের ভাড়া ৫৫০ টাকা।
এই দুই ট্রেনে ১৩টি করে বগি রয়েছে। একতা এক্সপ্রেসে ৮৯৪ এবং দ্রুতযানে মোট ৯৪৪টি আসন রয়েছে। এসব ট্রেনে এক হাজার ২০০ পর্যন্ত যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। তবে পঞ্চগড় জেলার জন্য দুই ট্রেনে মাত্র ৩৫টি করে শোভন চেয়ার, একটি এসি চেয়ার এবং ১টি দুই জনের নন এসি বার্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় অতি নগন্য। এজন্য নতুন কোচ না দেয়া এবং বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা নিয়ে মনোকষ্ট দেখা দিয়েছে সাধারণ যাত্রীদের মাঝে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রেনের উদ্বোধন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ