Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শ্রীলঙ্কায় গোলযোগের আড়ালে চীন-ভারতের লড়াই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম | আপডেট : ১:৪১ এএম, ১০ নভেম্বর, ২০১৮

 পুরোদস্তুর কাজ চলছে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে নতুন একটি বাণিজ্যিক এলাকা সৃষ্টিতে। হোটেল, মেরিনা, মটর রেসিং ট্র্যাকসহ অনেক কিছুই থাকছে ১.৫ বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পটিতে। কাজটি করছে চীনা কোম্পানি। তবে চীনাদের এই উপস্থিতিতে ভারতও পিছিয়ে থাকতে রাজি নয়। তারাও কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। বিশ্বের ব্যস্ততম জাহাজ চলাচল রুটের পাশে থাকা শ্রীলঙ্কা যাতে চীনা সামরিক চৌকিতে পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ভারত।

চীন-ভারতের এই প্রতিযোগিতার ফলে শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক গোলযোগের সৃষ্টি হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনা ও বরখাস্তকৃত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্গের মধ্যকার বিরোধের মূলে রয়েছে ভারতীয় স্বার্থের সাথে সমন্বয় সাধন। ভারতীয় স্বার্থ নিয়ে মতবিরোধের কারণেই সিরিসেনা-বিক্রমাসিঙ্গের জাতীয় ঐক্য সরকারের পতন হয়েছে। গত ২৬ অক্টোবর ভারতপন্থী হিসেবে পরিচিত বিক্রমাসিঙ্গেকে বরখাস্ত করে চীনপন্থী মহিন্দা রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছে।
বিক্রমাসিঙ্গে রয়টার্সকে বলেন, কলম্বো বন্দর প্রকল্পটি জাপান-ভারত যৌথ উদ্যোগে না দিতে গত মাসে সিরিসেনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তীব্র বাদানুবাদ হয়। ভারত-জাপানকে প্রকল্পটি না দিতে মন্ত্রিসভায় একটি নোট আসে বলেও তিনি জানান। তিনি অবশ্য তাকে বরখাস্ত করার পেছনে চীন-ভারত দ্ব›েদ্বর কথা অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে সিরিসেনার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে কলম্বোতে অবস্থিত চীনা দূতাবাস শ্রীলঙ্কার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে। তারা জানায়, চীন এ ধরনের হস্তক্ষেপে বিশ্বাস করে না।
সরকার বরখাস্ত করার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি জাপান। তবে বিক্রমসিঙ্গে ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সির এক কর্মকর্তা বলেন, কলম্বোতে রেলওয়ের জন্য যে ১.৪ বিলিয়ন ডলার সফট লোন দেয়ার কথা ছিল, তা স্থগিত করা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় কেবল শ্রীলঙ্কাতেই নয়, আরো কয়েকটি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চীন-ভারত প্রতিদ্ব›িদ্বতা দেখা যাচ্ছে।
পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও নেপালে বন্দর, বিদ্যুৎকেন্দ্র, মহাসড়ক তৈরি করছে চীন। এগুলো চীনকে এশিয়া ও এর বাইরের দুনিয়ার সাথে যুক্ত করার উচ্চাভিলাষী বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অংশবিশেষ। গত সেপ্টেম্বরে মালদ্বীপের নির্বাচনে চীনপন্থী প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিন হেরে যাওয়ায় বেইজিংয়ের জন্য কঠিন অবস্থার সৃষ্টি হয়। চীন ও ভারত উভয় দেশই তাদের প্রভাব বাড়ানোর জন্য ঋণ কূটনীতির আশ্রয় নিচ্ছে বলে বিশ্লেষকেরা বলছেন। আর তা করা হচ্ছে, নতুন নতুন নানা প্রকল্পের আকারে। চীন ও ভারত কেবল শ্রীলঙ্কাতেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, বিভিন্ন স্থানে তারা তাদের প্রকল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ