Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রংপুর আদালতে তুলকালাম

ব্যারিস্টার মইনুলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর

রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

রংপুরে আদালতে সাবেক তত্ত্ববাধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐক্যের অন্যতম রুপকার ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন শুনানির ঘটনাকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে দিনভর ছিল উত্তেজনা। গতকাল রোববার মানহানির মামলায় জামিন শুনানির জন্য কারগার থেকে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে রংপুর জেলা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। জামিনের আবেদনে করা হলে আদালত নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।
মইনুল হোসেনকে আদালতে নেয়ায় আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই সেখানে নাজেহাল করার চেস্টা করে। প্রতিবাদে বিএনপি সমর্থকরা এগিয়ে এলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় উভয় পক্ষ্যের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে।
এদিকে জামিন শুনানি শেষে বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মুক্তা মইনুলের জামিন নামঞ্জুর করে ২২ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল মালেক এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেকে আদালতে হাজির করা হবে, এমন খবর জানাজানি হলে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে আদালত চত্বরে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আদালত চত্বরে সমবেত হন। তাঁরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে মইনুল হোসেনের বিপক্ষে বিভিন্ন শ্লোগান দেন। এ সময় থেমে থেমে আওয়ামী লীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আদালত চত্বরে কয়েক দফা ঝাড়ু মিছিল করেন। রংপুর জেলা কারাগার থেকে ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনকে আদালতে নেয়ার আগেই পুরো আদালত চত্বরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
মূলত রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশের একটি সাদা গাড়িতে ব্যারিষ্টার মইনুলকে আদালতে নেয়া হয়। এ সময় সামনে- পেছনে ছিল পুলিশের গাড়ি। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান ফটকে গাড়ি দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি ও মইনুল হোসেনকে লক্ষ্য করে উশৃংখল কিছু যুবক ঝাড়ু প্রদর্শন করে। এ সময় স্যান্ডেল, জুতা ও ডিম নিক্ষেপ করা হয়। মইনুলের মাথায় হেলমেট ছিল।
বাইরে উত্তেজনা ও বিশৃংখলার মধ্যেই ব্যারিস্টার মইনুলকে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিনের শুনানি হয়। মইনুল হোসেনের পক্ষে জামিন শুনানি করেন আইনজীবী আফতাব হোসেনসহ আরও অনেকে। শুনানি শেষে বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মুক্তা জানান পরে আদেশ দেয়া হবে। এরপর বেলা দেড়টার দিকে আদালত থেকে ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনকে বের করে পুনরায় পুলিশের গাড়িতে ওঠানোর সময় আবারও তাঁর দিকে তেড়ে আসে কিছু উৎশৃংখল যুবক। এ সময় পুলিশ কার্যত নীরব ছিল। আদালতের অন্য পাশ থেকে মইনুলের পক্ষে খালেদা জিয়ার নামে বিএনপির কিছু কর্মী শ্লোগান দিতে শুরু করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েকটি কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। সংঘর্ষে ইটপাটকেল নিক্ষেপে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হন। রংপুর মেট্রোপলিটনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আলতাব হোসেন বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক তৌহিদুর রহমান বলেন, ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে দলের অনেক নেতা-কর্মী আদালতে উপস্থিত হওয়ায় বিক্ষোভ প্রদর্শন হয়েছে। মহানগর বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা মামলার হাজিরা দিতে আদালতে গিয়েছিলাম। পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার ব্যারিস্টার মইনুলকে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কারাগার থেকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসা হয়। গত ২২ অক্টোবর রংপুরের বাসিন্দা মিলি মায়া বেগম রংপুরের মুখ্য বিচারিক আদালতে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মানাহানির মামলা করেন। ওই দিন আদালতের বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মামলাটি আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলা দায়েরের কিছুক্ষণের মধ্যেই মইনুল হোসেনকে ঢাকায় গ্রেফতার করা হয়। এর আগে গত ১৬ অক্টোবর মইনুল হোসেন বেসরকারি একটি টক শোতে আলোচনার মাসুদা ভাট্টি নামে এক সাংবাদিককে ‘চরিত্রহীন’ বলেন। এরপর এই ঘটনায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এখন পর্যন্ত ২২টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ২০টি মানাহানির মামলা এবং অপর ২টি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা হয়েছে।#



 

Show all comments
  • লাভলু ৫ নভেম্বর, ২০১৮, ৩:৫৫ এএম says : 0
    কি যে হচ্ছে কিছুই বুঝতেছি না।
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ৫ নভেম্বর, ২০১৮, ৮:২৫ এএম says : 0
    Eakjon koydike nirapotta deoa polisher dai o korttobbo kintu shodoshshoder je kono ayn birodhi karjo kolap polish dekheo na dekhar van kore,tasara moynul hoshen eakjon kheto nama aynjibi,ebong new nation potrikar shompadok khetonama shangbadik tofajjol hoshen manik miar sele....
    Total Reply(0) Reply
  • Kamal Pasha ৫ নভেম্বর, ২০১৮, ২:১৮ পিএম says : 0
    তুলকালাম না লেখেন তান্ডব।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যারিস্টার মইনুল

৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ