Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুন্দরগঞ্জে তিস্তা চরের সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাবঞ্চিত

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) থেকে মোশাররফ হোসেন বুলু | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের চর মাদারীপাড়া গ্রামে স্থাপিত হরিপুর বিএসএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় এলাকাবাসী ও প্রধান শিক্ষক কর্তৃক তিস্তা নদীর দুই পাড়ে চরের মধ্যে পৃথক পৃথক চালাঘর তুলে দুটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করায় শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এলাকাবাসীর দলিলকৃত জমিতে নির্মিত চালাঘরের বিদ্যালয়ে এক মাস থেকে শিক্ষকরা অনুপস্থিত থাকলেও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত রয়েছে।

অপর দিকে, প্রধান শিক্ষক কর্তৃক নির্মিত চালঘরের বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা উপস্থিত থাকলেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নেই। প্রধান শিক্ষক ও এলাকাবাসীর চরম দ্বদ্বে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শিক্ষার আলো হতে বঞ্চিত হচ্ছে। আসন্ন বার্ষিক ও সমাপনী পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন।

এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা ১৯১৪ সালে হরিপুর ইউনিয়নের মাদারীপাড়ায় হরিপুর বিএসএম নামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে। সকল শিশুর পড়ালেখা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করেন। বিদ্যালয়টি স্থাপনের পরে কয়েক দফা নদী ভাঙনের কবলে পরায় পরবর্তীতে চর মাদারী পাড়ায় বিদ্যালয়টি স্থাপন করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। তিস্তা নদীর ভাঙন অব্যাহত থাকায় বিদ্যালয়টি আবারো ভাঙনের সম্ভাবনা দেখা দিলে এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের টিন খুলে নিয়ে গিয়ে নিরাপদ দূরত্বে থাকা বিদ্যালয়ের নামীয় জমিতে একটি চালাঘর স্থাপন করেন। কিন্তু ওই নির্মাণকৃত বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষক দীর্ঘ এক মাস থেকে অনুপস্থিত থাকায় শিক্ষার্থীরা পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

অপর দিকে, প্রধান শিক্ষক তিস্তা নদীর দক্ষিণ পাড়ে চরে একটি চালাঘর তুলে অন্যান্য শিক্ষকসহ উপস্থিত থাকেন। এখানে শিক্ষার্থী তেমন একটা নেই। হাতে গোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী। কারণ বিদ্যালয়টি তিস্তার উত্তর পাড়েই অবস্থান ছিল। তাই লেখাপড়াও করত উত্তর চরের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এলাকাবাসী আব্দুল মান্নান মিয়াসহ কয়েকজন জানান, বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমিতে আপাতত চালাঘর তুলে দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক কেন সেখানে যাচ্ছেন না তা আমরা চরবাসী জানি না। সে জন্যই বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। যেহেতু বিদ্যালয়টি উত্তর পাড়েই ছিল, সেহেতু উত্তরপাড়ের শিশুরাই লেখাপড়া করত। দক্ষিণ পাড়ে বিদ্যালয়টি নিয়ে যাওয়াতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে দিতে পারি না।

প্রধান শিক্ষক গুলশান আরা হামিদা জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসারের পরামর্শক্রমে তিস্তা নদীর দক্ষিণ পাড়ে বিদ্যালয় স্থাপন করে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এ কারণে নদীর উত্তরপাড়ে এলাকাবাসী কর্তৃক নির্মিত চালাঘরে আমি ও আমার শিক্ষকরা যাচ্ছি না। উপজেলা শিক্ষা অফিসার এ কে এম হারুন-অর-রশিদ জানান, জনস্বার্থে সুবিধামত সময়ে স্থায়ীভাবে বিদ্যালয়টি স্থাপনের ব্যবস্থা করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ