পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের রফতানিমুখী প্রধান গার্মেন্টস শিল্প খাতে ২৫ শতাংশ দক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে। এ শিল্পের জন্য যথোপযোগী অবকাঠামো অর্থাৎ ‘অ্যাকর্ড অ্যালায়েন্স’ এবং আইএলও দিক-নির্দেশনার আলোকে কমপ্লায়েন্সের শর্তাবলী পূরণের সাথে সাথে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবলের চাহিদা বাড়ছে। অধিকাংশ শ্রমিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন কারখানায় চাকরিকালীন সময়ে অথবা স্থানীয় বেসিক সুইং স্কুলগুলোতে। আগামী ২০২০ সালে গার্মেন্টস শিল্পে রফতানি প্রবৃদ্ধির জন্য ৬০ লাখেরও বেশি শ্রমিকের প্রয়োজন হবে। বেশিরভাগ কারখানাই ঢাকা ও এর আশপাশ, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত। পর্যাপ্ত দক্ষ শ্রমিকের স্বল্পতা নিরসনে গার্মেন্টস শিল্পের সুষম ভৌগোলিক বিস্তারের উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার। বিরাজমান শ্রমিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, পশ্চিমাঞ্চলে গার্মেন্টস কারখানা স্থাপন এবং অবকাঠামো সুবিধার সমন্বয়ে উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক একটি নামিদামি গ্লোবাল ম্যানেজম্যান্ট কনসালটিং প্রতিষ্ঠান ‘ম্যাককিনসে এন্ড কোম্পানি’ কর্তৃক পরিচালিত জরিপ প্রতিবেদনে উপরোক্ত সুপারিশ করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, ক্রেতারা (বায়ার) বাংলাদেশে উৎপাদিত অধিকতর ফ্যাশন্যবল, বৈচিত্র্যময় নজরকাড়া এবং জমকালো পোশাকপণ্য কিনতে আগ্রহী। এরজন্য পারদর্শিতা ও সক্ষমতায় কারখানা মালিক-শ্রমিকদের আরও মনোযোগী হতে হবে। সুদক্ষ শ্রমিকের প্রাপ্তি নিশ্চিত থাকা চাই। কারখানাগুলোর উৎপাদনশীলতার মান উন্নয়ন প্রয়োজন। বাংলাদেশ যদি গার্মেন্টস শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধির সুযোগকে ২০২০ সালে ৩ গুণ উন্নীত করতে চায় তাহলে পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের গড় উৎপাদনশীলতা ভারতের সমপর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। ভারতে গার্মেন্টস কারখানায় গড় উৎপাদনশীলতা ৯২। সেখানে বাংলাদেশের ৭৭ পয়েন্ট।
ম্যাককিনসে এন্ড কোম্পানির প্রতিবেদনে বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্পখাতে বিদ্যমান বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি, সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার তাগিদ দেয়া হয়। এরমধ্যে রয়েছে- অবকাঠামো সুযোগ-সুবিধার উন্নয়ন, মানবসম্পদের অধিকতর দক্ষতা, কাঁচামালের জোগান সহজতর করা, রাজনৈতিক স্থিতিশীল পরিবেশের নিশ্চয়তা, পণ্যসামগ্রী সুনির্দিষ্ট সময়ানুযায়ী আমদানির লিড টাইম নিশ্চিত রাখা, দেশের ‘লাইফ লাইন’ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে আরও সম্প্রসারণ ও গতিশীল করে যানজট দূরীকরণ, অনেক বেশি ‘ফ্যাশন্যবল ও সফিস্টিকেটেড’ তৈরিপোশাক পণ্য উৎপাদনের জন্য পোশাক প্রস্তুতকারকদের দক্ষতার মান বৃদ্ধি, যুগোপযোগী নতুন মেশিনারিজ স্থাপন ও এরজন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগ, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার অভাব পূরণ ইত্যাদি। মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ে বলা হয়, দেশে গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে দক্ষ শ্রমিক ছাড়াও মাঝারি সারির ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজন হয়ে পড়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক দক্ষ মানবসম্পদ। অথচ বাংলাদেশে পর্যাপ্ত দক্ষ মানবসম্পদের মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। স্থানীয় মেধার অভাবে পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিদেশ থেকে মিডল ম্যানেজম্যান্ট আমদানি করতে হয়। সাংস্কৃতিক ভিন্নতার কারণে এই বিদেশি মিডল ম্যানেজম্যান্টে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক নামিদামি অপর এক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘নিয়েলসেন কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডে’র জরিপ প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতির প্রাণ গার্মেন্টস শিল্পখাত দুর্দমনীয় যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। এ শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৪ কোটিরও বেশি লোক জড়িত। ব্যাংক ও বীমা, পোর্ট-শিপিং, পরিবহন, শুল্ক-কর ও রাজস্ব, সেবাখাত, প্রকৌশল খাত, জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি, আবাসন, হোটেলস ও পর্যটনসহ অনেকগুলো খাতে গার্মেন্টস শিল্পের অথনৈতিক ও সামাজিক অবদান রয়েছে।
দেশের গার্মেন্টস শিল্পখাতের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে দেশের পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাসির গতকাল (শনিবার) দৈনিক ইনকিলাবকে বলেছেন, সুদক্ষ শ্রমিক গড়ে তোলা, গ্যাস-বিদ্যুৎ শিল্প স্থাপনের জন্য অবকাঠামো সৃজন, মহাসড়কে নিত্য যানজট নিরসন, সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো সমন্বিতভাবে যদি গ্রহণ করা হয় তাহলে এ শিল্পের মাধ্যমে দেশে রফতানি আয়ের অবদান অনেক বৃদ্ধি পাবে। তিনি জানান, বর্তমানে বিশ্ব বাজারে ৪৫৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক পণ্যসামগ্রী রফতানি হচ্ছে। এর মধ্যে এককভাবে প্রায় ৩৬ শতাংশ গার্মেন্টস পণ্য রফতানি করছে চীন। গত বছর বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্য রফতানি মাত্র ৬ শতাংশ (৩০ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার)। তবে বাংলাদেশের সামনে রফতানির সুযোগ আরও ব্যাপক। কেননা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও বিভিন্ন সংস্থার গবেষণায় বলা হয়েছে, উচ্চ মজুরির কারণে ২০২১ সালে চীনের রফতানি নেমে যাবে ২০ থেকে ২২ শতাংশে। চীনের অবশিষ্ট ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ রফতানি বাজারের আংশিক হলেও আয়ত্তে আনা বাংলাদেশের জন্য খুব কঠিন হবে না। এর জন্য প্রয়োজন অবকাঠামো ও দক্ষতার উন্নয়ন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।