Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয় আদালতের -ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৮, ১১:৩০ পিএম | আপডেট : ১২:০৬ এএম, ২ নভেম্বর, ২০১৮

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি সরকারের নয়, আইন-আদালতের বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে দুটি মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে সেটি আওয়ামী লীগ করেনি, করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও ১৫টি মামলা করেছিল এসব মামলা তদন্ত করে অপরাধ প্রমানিত হয়নি। তাই খালেদা জিয়ার মামলা ও সাজার বিষয়টিও আদালতের মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে। এটি আলোচনায় আসতে পারে না। বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) গণভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ১৪ দলের মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত সংলাপ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, উভয়পক্ষের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। আলোচনার পরিবেশ সুন্দর ছিল। তারা কিছু বিষয়ে অভিযোগ করেছেন তার প্রেক্ষিতে আমরা ভদ্রভাবে, শালীনতার সাথে কথা বলেছি। কিছু কিছু বিষয়ে একমত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন- সভা, সমাবেশ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। তারা যেখানে চাইবেন সভা-সমাবেশ করতে পারবেন। তবে রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করা যাবে না। খোলা মাঠে করতে হবে। ঢাকায় সোহরওয়ার্দী উদ্যানে চাইলে সমাবেশ করতে পারে। এছাড়া তাদের সাত দফার মধ্যে বলা হয়েছে বিদেশী পর্যবেক্ষক আসবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে। এব্যাপারে আমাদের সমর্থন ও সহযোগিতা থাকবে। ইভিএমের বিষয়ে তারা অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এবার নির্বাচন কমিশন সীমিতভাবে ইভিএম ব্যবহার করবে। মামলার বিষয়ে তাদের বড় অভিযোগ রয়েছে যে, তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেছেন, তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার একটা তালিকা দিতে। তদন্ত করে দেখা হবে যে কোনগুলো রাজনৈতিক মামলা।

সংসদ ভেঙে দেয়ার বিষয়ে কোন আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা জানান, আমরা বলেছি সংবিধান সম্মত সকল বিষয়ে আলোচনা হবে। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখে। পৃথিবীর কোন দেশে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন হয় না। ভারতের উদাহরণও তাদেরকে দেয়া হয়েছে। কারণ নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবে। তফসিল ঘোষণার পরপর আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীসহ নির্বাচনের সামগ্রিক বিষয় ইসির অধীনে থাকবে।

বিরোধী পক্ষের ভয়ের কোন কারণ নেই উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইসি সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করবে। তারা চাইলে সরকার তাদেরকে সহযোগিতা করবে।

সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনকে বলেছেন আপনি ১৯৭৩ সাল থেকে সব নির্বাচনই দেখেছেন ২০০১ সাল ছাড়া আর কোন নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে মেজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে মোতায়েন করা হয়নি।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত সংলাপ শেষ হয়। সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হওয়া এই বৈঠক শেষ হয় রাত ১০টা ৪০ মিনিটে। বৈঠক শেষে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আগে গণভবন থেকে বের হয়ে যান। এরপর একে একে বের হন ১৪ দলের নেতারা। বৈঠক শেষে বের হয়ে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ আবদুর রজ্জাক বলেন, ড. কামাল প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আলোচনা সুন্দর হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

জাসদ (একাংশ) নেতা মইন উদ্দীন খান বাদল বলেন, আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে। বিরোধী পক্ষ যদি চায় তাহলে সবকিছুর সমাধান হবে। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন আলোচনার দুয়ার সব সময় খোলা। তবে যে প্রশ্নগুলো এসেছে সেগুলোর সমাধানে পৌছানো কঠিন।

বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ড. কামাল আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলবেন। আর ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মহাসচিব গণমাধ্যমকে তা জানাবেন। তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আনুষ্ঠানিকভাবে গণভবনে গণমাধ্যমকে জানাবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামীলীগ নেতারা। অন্যদিকে ড. কামাল হোসেন তার বেইলি রোডের বাসায় একই বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানাবেন।

কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি দলে ছিলেন- গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মহসীন মন্টু, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, সহ-সভাপতি তানিয়া রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, এস এম আকরাম, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আ ব ম মোস্তফা আমিন, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান, জগলুল হায়দার আফ্রিক ও গণফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিক উল্লাহ।

অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই সংলাপে ১৪ দলীয় জোট থেকে ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া অন্যরা হলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, মো. আবদুর রাজ্জাক, কাজী জাফর উল্যাহ, আবদুল মতিন খসরু, রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি, আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও জাসদের একাংশের সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল।



 

Show all comments
  • Mitila ২ নভেম্বর, ২০১৮, ১:৫৭ এএম says : 0
    Age tekee folafol sajano silo ty ja hoar hoese.songlaf hole jatir jonno mullo takto aker jonno keho korar na.akane kaleda r bsoe keno ? 10 bettar then 1
    Total Reply(0) Reply
  • Shaikh Hossain ২ নভেম্বর, ২০১৮, ৩:৪৮ এএম says : 0
    Yes, AL's decision is court's decision. What a drama?
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ২ নভেম্বর, ২০১৮, ৮:৪৯ এএম says : 0
    Valo kotha bolsen,khaleda ziar muktir bishoy adolote,kintu eakta prosno apnar kase eai adalotke ki apnara influence koren nai?achsa jodi na kore thaken taha hole bicharer rai deoar agei potrikai apnader mukhe khaledar shaja hobe eai kothati ken asholo ebong kisu potrikai khaledar raier fol akoter raier agei prokash pelo kivabe?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবায়দুল কাদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ