Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন এবং এ দেশে তাদের অবস্থানকালে বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছে ডেনমার্কের সরকার ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।
গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সরকারি বাসভবন গণভবনে সফররত ডেনমার্কের উন্নয়ন সহযোগী বিষয়কমন্ত্রী উলা পেডারসন টরনাস এবং ডব্লিউএফপি-এর নির্বাহী পরিচালক বিসলে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এ আশ্বাস দেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, উলা পেডারসন টরনাস মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য ডেনমার্ক সরকারের মানবিক সহায়তা হিসেবে ৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের অভিনন্দন জানিয়ে ডেনিশ মন্ত্রী বলেন, বিপুলসংখ্যাক জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয়া বাস্তবিকভাবেই একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। উলা পেডারসন টরনাস বলেন, ক্যাম্পগুলো সফরকালে তিনি দেখেছেন সেখানকার পরিস্থিতি আগের তুলনায় পুরোপুরি বদলে গেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার তার নাগরিকদের ফেরত নিতে সম্মত হওয়ায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া খুব শিগগিরই শুরু হবে। তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে ৪৮৫টি পরিবারের ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গা নিজ দেশে ফিরে যাবেন। শেখ হাসিনা প্রত্যাবাসনের পরও রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা অব্যাহত রাখতে ডেনিশ সরকার এবং ডব্লিউএফপি-এর প্রতি অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে ব্যাপকসংখ্যক রোহিঙ্গার আশ্রয়দানের ফলে স্থানীয় জনগণের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে বলেন, মিয়ানমারের নাগরিকরা স্থানীয় অধিবাসীদের চাষাবাদের জমি ব্যবহার করায় সরকার স্থানীয় জনগণকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছে। রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশকে অব্যাহত সমর্থন এবং তাদের (রোহিঙ্গা) মানবিক সহায়তা প্রদান করায় প্রধানমন্ত্রী ডেনমার্ক সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি এই সংকটে টেকসই সমাধানে অব্যাহত মনোযোগ দেয়ায় ডব্লিউএফপি-কে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
প্রেস সচিব বলেন, তাদের আলোচনায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গটিও উঠে আসে এবং প্রধানমন্ত্রী বলেন, যথাসময়েই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে এবং সকল প্রশাসন ও আইন-শৃংখলা বাহিনী ইসি’র নিয়ন্ত্রণে থাকবে। শেখ হাসিনা বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন অর্জনের কথাও উল্লেখ করেন এবং বলেন, সামরিক শাসন, তথাকথিত সামরিক আইন ও অগণতান্ত্রিক শাসনের কারণে বাংলাদেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্থ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতকালে বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন, তার সরকার রোহিঙ্গা সংকটের ওপর বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছে এবং এ সমস্যার একটি টেকসই সমাধানে পৌঁছতে যুক্তরাষ্ট্র আরো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। বার্নিকাট আশা প্রকাশ করেন যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া যত শিগগির সম্ভব শুরু করতে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াবে।
বার্নিকাট আশ্বাস দেন যে, মার্কিন সরকার অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় তার সহায়তা অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে অধিকতর বিনিয়োগের কথা বিবেচনা করছে এবং কিছু বড় বড় মার্কিন কোম্পানি এখানকার বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করছে।
এছাড়া মার্কিন রাষ্ট্রদূত জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গেও কার্যালয়ে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেছেন। বৈঠকে সংসদীয় কার্যক্রম, নির্বাচন প্রক্রিয়া, বাংলাদেশের উন্নয়ন, নারী ক্ষমতায়ন, পর্যটন শিল্পসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ