মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইস্তাম্বুলের সউদী কনসুলেটের ভেতর সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে মেরে ফেলার ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করেছেন খাসোগির বাগদত্তা হেতিস চেঙ্গিস। সোমবার লন্ডনের এক অনুষ্ঠানে সত্য উদঘাটনের জন্য বাণিজ্য স্বার্থকে পাশে সরিয়ে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
খাসোগি হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ যারা দিয়েছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে ট্রাম্প যেন রিয়াদের কাছে আরও তথ্য চান সে বিষয়েও এ তুর্কি নারী অনুরোধ জানিয়েছেন বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
চলতি মাসের শুরু থেকেই ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্ট ও সউদী আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সমালোচক হিসেবে পরিচিত খাসোগির হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় চলছে। তুরস্কের সউদী কনসুলেটে সাংবাদিক মেরে ফেলার ঘটনায় সঙ্কটে পড়েছে বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক দেশটি।
খাসোগি হত্যাকাণ্ডে সউদী নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনা করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ ঘটনায় রিয়াদের কাছে শতকোটি ডলারের অস্ত্রবিক্রি আটকাবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
সউদী আরবের কাছে ১১০ কোটি ডলারের অস্ত্রবিক্রি করতে পারলে ৫ লাখ মার্কিনির চাকরি হয় বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। চাকরির এ সংখ্যাকে ট্রাম্প ‘অনেক বাড়িয়ে বলছেন’ বলে ভাষ্য বিশ্লেষকদের। লন্ডন সফরে সোমবার দর্শকশ্রোতাদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় হেতিস বলেন, ট্রাম্পের এ মনোভাব তাকেও হতাশ করেছে।
“বিশ্বের অনেক দেশ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দের কর্মকাণ্ডে আমি হতাশ। সত্য উদঘাটন ও (দায়ীদের) বিচার নিশ্চিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাহায্য করা উচিত। তার উচিত নয় আমার বাগদত্তার হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেওয়ার পথ সুগম করা। অর্থের জন্য বিবেকে দাগ লাগাতে ও মূল্যবোধকে সঙ্কুচিত করার সুযোগ দেওয়া ঠিক হবে না,” বলেন হেতিস।
হত্যাকাণ্ডের জন্য কে দায়ী, এমন প্রশ্নের জবাবে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তুর্কি ভাষায় খাসোগির এ বাগদত্তা বলেন, “ঘটনাটি সউদী দূতাবাস মিশনের ভেতরে হয়েছে, এ পরিস্থিতিতে সউদী আরবের কর্তৃপক্ষই ঘটনার জন্য দায়ী।”
হেতিস বলেছেন, পশ্চিমের দেশগুলোকে সবসময়ই মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের শক্তঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে; যে কারণে দেশগুলোর উচিত তার ‘হতে যাওয়া স্বামীর’ হত্যাকারীদের বিপক্ষে দাঁড়ানো।
৫৯ বছর বয়সী খাসোগি চলতি মাসের প্রথমদিকে বাগদত্তা হেতিসকে বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যোগাড়ে ইস্তাম্বুলের সউদী কনসুলেটে ঢুকেছিলেন। তার পর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি।
কনসুলেট ভবনের ভেতরেই ১৫ সদস্যের সউদী গুপ্তচর দল ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্টকে হত্যা করেছে বলে শুরু থেকেই অভিযোগ করে আঙ্কারা। সউদী আরব প্রথম দিকে উড়িয়ে দিলেও কয়েকসপ্তাহ পর খাসোগি হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে নেয়।
হত্যাকাণ্ডটি ‘পূর্বপরিকল্পিত’ ছিল বলেও জানায় রিয়াদ; দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদও।
এ ঘটনায় ১৮ জনকে আটক ও পাঁচ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে সউদী বার্তা সংস্থা। আটক ও বরখাস্তদের মধ্যে ১৫ সদস্যের ওই গুপ্তচর দলের সদস্যরাও আছেন, যারা খাসোগিকে খুন করার কয়েক ঘণ্টা আগে ইস্তাম্বুলে উড়ে এসেছিলেন, জানিয়েছে তুর্কি নিরাপত্তা সূত্র।
“এই ঘটনা, এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে সউদী কনসুলেটে। সম্ভবত সউদী কর্তৃপক্ষই জানে কিভাবে এ ধরনের খুন হয়। কী হয়েছে, তাদের ব্যাখ্যা করা উচিত,” মলিন মুখে, বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলেন হেতিস।
কখনো সুযোগ হলে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদকে কি বলতে চান, এমন প্রশ্নের জবাবে খাসোগির বাগত্তা বলেন, “আমার মনে হয় না, এ ধরনের ঘটনা কখনোই ঘটবে।”
এ ঘটনায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের অবস্থানের প্রশংসাও শোনা গেছে হেতিসের মুখে। কারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তা জানাতে রিয়াদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। সন্দেহভাজন যে ১৮ জনকে আটক করেছে সউদী আরব, তাদেরকে বহিঃসমর্পনে অনুরোধ জানিয়ে আবেদনও প্রস্তুত করেছেন তুরস্কের সরকারি কৌঁসুলিরা।
“এখন পর্যন্ত সউদী আরব যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তা যথেষ্ট নয়। কারা এর জন্য দায়ী, তা জানতে চাই আমি,” বলেছেন হেতিস।
খাসোগি হত্যাকাণ্ডে ক্রাউন প্রিন্স বা সউদী রাজপরিবারের দায় দেখছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এ তুর্কি নারী বলেন, “আমি ও আমার দেশের সরকার দায়ী সবাইকে, যারা এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে এবং যারা বাস্তবায়ন করেছে প্রত্যেককে বিচারের মুখোমুখি করতে ও আন্তর্জাতিক আইনে শাস্তির আওতায় আনতে চায়।” সূত্র : রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।