পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হযরত শাহ মখদুমের পূন্যভূমি ও শিক্ষানগরী রাজশাহীতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিভাগীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে নানামুখী আলোচনা শুরু হয়েছে।
সিলেট ও চট্টগ্রামের সফল জনসভার পর রাজশাহীতেও বিশাল সমাবেশ করার জন্য পরিকল্পনা করছে স্থানীয় বিএনপি। আগামী ৬ নভেম্বর এ সমাবেশ হবার কথা রয়েছে। ক’দিন আগেই ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দানে সমাবেশ করার অনুমতির জন্য সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে গিয়ে আবেদন জানিয়ে এসেছে। এখন অবধি কোন সাড়া মেলেনি পুুলিশের পক্ষ থেকে। তবে আয়োজকরা আশাবাদি শেষ মুহুর্তে হলেও সমাবেশের অনুমতি পাওয়া যাবে। তবে এনিয়ে সংশয় রয়েছে। সিলেট ও চট্টগ্রামে সমাবেশের পর পর্যবেক্ষক মহল বলছেন শেষ মুহুর্তে অনুমতি দিলেও মাদরাসা ময়দানে নয় দলীয় কার্যালয়ের সামনে ভূবনমোহন পার্কে অনুমতি দিতে পারে। তবে বিএনপি নেতাদের প্রত্যাশা নগরবাসীর ভোগান্তি ও বিপুল জনসমাগমের দিক লক্ষ্য রেখে মাদরাসা ময়দানে তাদের সমাবেশের অনুমতি দেয়া প্রয়োজন। এর আগে বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশের জন্য ভূবনমোহনর পার্কে অনুমতি মিলেছিল। এসেছিলেন কেন্দ্রীয় সব নেতা। অনিবার্য কারন বশত: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অংশ নিতে পারেননি।
সেবার ভূবনমোহন পার্ক হয়েছিল মঞ্চ আর আশেপাশের রাস্তা হয়েছে শ্রোতাদের অবস্থান। লোকে লোকারণ্য ছিল সমাবেশ। নগরীর প্রানকেন্দ্র পুরো সাহেব বাজার, গণকপাড়া, মনিচত্ত¡র, মালোপাড়া সব রাস্তায় ছিল অনেক বাধা বিপত্তি আর হামলা মামলার ভয়কে জয় করে সমাবেশে আসা মানুষের ঢল। দীর্ঘদিন পর এক দমবন্ধকর অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে নেতাদের বক্তব্য শোনা আর দেখার জন্য ছুটে এসেছিল তারা।
উত্তরাঞ্চল বিএনপি প্রানপুরুষ রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের টানা সতের বছরের মেয়র ও এমপি বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এবং ঐক্যফ্রন্ট সমাবেশের সমন্বয়ক মিজানুর রহমান মিনু বলেন, বহুকাল ধরেই উত্তরাঞ্চলের মাটি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসীদের ঘাটি। কৃষি প্রধান এ অঞ্চলের মানুষ ধানের শীষ ছাড়া অন্য কিছু বোঝেনা। বাংলার রাখাল রাজা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার গড়া দল বিএনপি তাদের ঠিকানা। আর সে কারনে পরিচিতি বিএনপির দুর্জয় ঘাঁটি হিসাবে। বিশেষ করে বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চল। প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে রাজশাহীর রয়েছে গৌরবময় ভূমিকা। ১৯৫২ ভাষা আন্দোলনে প্রথম শহীদ মিনার হয়েছিল রাজশাহীতে। আয়ুবশাহীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রান দিয়েছেন ড. জোহা। যেখান থেকে স্বাধীনতা আন্দোলন আরো বেগবান হয়। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গুত্ব বরন করেন সে সময়কার ছাত্রদল নেতা রিজভী আহম্মেদ। এমন আরো অনেক উদাহরন রয়েছে। শিক্ষা নগরী রাজশাহী আন্দোলনের সুতিকাগারও বটে। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে অতীতের মত এ অঞ্চলের সবকটি আসনই বিএনপির ঘরে যাবে। মানুষ সে দিনের অপেক্ষায়। বিএনপির জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে অবৈধ হাসিনা সরকার শুরু করেছে জুলুম নির্যাতন। বিএনপির দূর্গকে ধ্বংস করার। কিন্তু শত জুলুম নির্যাতন হামলা মামলা খুন গুম করে নি:শেষ করা যায়নি বিএনপিকে। আওয়ামী দু:শাসন লুটপাটের জবাব দেবার সময় এসেছে। মানুষ তাকিয়ে আছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের দিকে। ড. কামাল হোসেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, আসম রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, ডা: জাফরুল্লাহসহ নেতাদের দিক নির্দেশনার অপেক্ষায়। মিনু আশাবাদ ব্যাক্ত করে বলেন, রাজশাহীর সমাবেশে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীও উপস্থিত থাকবেন। এদিন রাজশাহীতে মানুষের স্রোত নামবে। যদিও পদে পদে বাধার শঙ্কা রয়েছে। সেই শংকাকে জয় করে মানুষ আসবে। আবারো প্রমান করে দেবে রাজশাহী অঞ্চলের মাটি বেগম জিয়ার ঘাঁটি। সমাবেশ সফল করার লক্ষে নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। সব পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ নিয়ে কাজ চলছে। রাজশাহী বিভাগের দশ রাজনৈতিক জেলার তৃনমূল পর্যন্ত যোগাযোগ করা হচ্ছে। বিভিন্ন পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় করা হবে।
সাবেক মেয়র ও বিএনপি মহানগর সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, স্বৈরাচারী অবৈধ ও লুটেরা ভোট চোর সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের মন বিষিয়ে আছে। ক্ষোভ আর ঘৃনায় ফুঁসছে। যে কোন সময় জনবিস্ফোরন ঘটবে। ঐক্য ফ্রন্টের সাত দফা মেনে নেয়া আর বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে জনরোষ থেকে ক্ষমতাসীনদের কেউ রক্ষা পাবেনা। পালাবার পথ খুজে পাবেনা। সময় ফুরিয়ে আসছে। এখনো সোজা পথে আসেন। জনরোষ থেকে বাঁচুন।
জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের মহাসমাবেশ ঘিরে সর্বস্তরের ও পেশার মানুষের মধ্যে আলোচনা চলছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলীদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, এ আন্দোলন ক্ষমত দখলের নয়। এটি দেশ বাঁচানো মানুষ বাঁচানোর আন্দোলন। দেশের প্রায় সব ক্ষেত্রে পচন ধরেছে। দূনীতি অনিয়ম এখন নিয়ম হয়ে গেছে। মানুষ ভাল নেই শান্তিতে নেই। এক দু:সহ দমবন্ধকর অবস্থা। এ থেকে দেশকে জাতীকে রক্ষার জন্য সচেতন দেশপ্রেমিক সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।