Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চালু হয়নি রানীশংকৈল-হরিপুরের ফায়ার সার্ভিস স্টেশন

নির্মাণের ২ বছর পরও

ঠাকুরগাঁও জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার দুই বছর পেরিয়ে গেলেও সরকারি দুই অফিসের ‘উদাসীনতায়’ এখনো চালু হচ্ছে না ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলার ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিস। ফলে দুটি উপজেলার বসতবাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকান্ড ঘটলে পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে যাচ্ছে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের বাহিনী। আর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত বিভাগ কর্তৃপক্ষ বলছেন, কাজ শেষ করার পর দফায়-দফায় ঠাকুরগাঁও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিলেও ভবন দুটি বুঝে নিচ্ছেন না। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বলছেন মানসম্মত অবকাঠামো ও নিম্নমানের কাজ হওয়ায় এ অবস্থায় পড়ে আছে।

জেলা প্রশাসক অফিস সূত্রে জানা যায়, দেশের গুরুত্বপূর্ণ ১৫৬টি উপজেলা সদরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন প্রকল্পের আওতায় হরিপুর ও রানীশংকৈল উপজেলায় অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালে। এর ব্যয় ধরা হয় চার কোটি ৮০ লাখ টাকা। ২০১৬ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হয়। তবে ভবন দুটি নির্মিত হওয়ার পরও কেন কর্তৃপক্ষ বুঝে নিচ্ছেন না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রানীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলার বাসিন্দা কবিরুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ, স্বপনকুমারসহ অনেকে জানান, দীর্ঘ দিনের দাবির প্রেক্ষিতে এই দুই উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন দুটি নির্মিত হয়েছে। কিন্তু অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। আমাদের দুটি উপজেলাতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূর থেকে অর্থাৎ পীরগঞ্জ ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য আসে। আর তারা আসতে আসতে সবকিছু পুরে ছাই হয়ে যায়। সরকারের এত টাকা দিয়ে তা হলে ফায়ার স্টেশন করে লাভ কি। আমরা চাই প্রশাসন এ বিষয়ে দ্রুত প্রদক্ষেপ নেবেন।

গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আল মামুন হক জানান, শুধু ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে চালু হচ্ছে না এ স্টেশন দুটি। প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবন দু’টি দীর্ঘ দিন পড়ে থাকায় নষ্ট হচ্ছে। দু’বছর আগেই ভবন দুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু তা বুঝে নিচ্ছে না দমকল বাহিনী কর্তৃপক্ষ। আমাদের দায়িত্ব ছিল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভবন নির্মাণ করে তাদের বুঝে দেয়া। আমরা সেটাই করেছি। কিন্তু তারা বুঝে না নিয়ে আমাদের করার কিছু নেই।

আর ঠাকুরগাঁও জেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান জানান, ভবনটি নির্মাণ হওয়ার পর গণপূর্ত বিভাগ আমাদের দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য চিঠি দিয়েছে এটা সত্য। চিঠি দেয়ার পর আমরা ভবন বুঝে নিতে গিয়ে দেখি মানসম্মত কাজ হয়নি। ছাদ থেকে সিমেন্ট খসে পড়ছে। ছাদে বৃষ্টির পানি লেগে থাকায় ছাদ স্যাঁতস্যাঁতে হচ্ছে। পানির লাইনগুলো করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। পরে আমরা বিষয়টি গণপূর্ত বিভাগকে অবগত করি। এরপরও গণপূর্ত বিভাগের পক্ষ থেকে ওভাবেই ভবন বুঝে নিতে বলে। এ বিষয়টি জেলার আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়েও উপস্থাপন করা হয়েছে। আমাদের আমরা মনে করি, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও গণপূর্ত বিভাগ দায়িত্বহীনতার কাজ করেছে। আমরা সার্বিক বিষয় পর্যালচনা করে আমাদের দপ্তরে চিঠি দিয়েছি। আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি।

ঠাকুরগাঁও ডিসি ড. কে এম কামরুজ্জামান জানান, আমি এ জেলায় নতুন তবে আমি জানতে পেরেছি গণপূর্ত বিভাগ ও দমকল বাহিনী কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। তাই ফায়ার সার্ভিস স্টেশন দুটি চালু হচ্ছে না। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বছর ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠাকুরগাঁও সফরে এসে রানীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলার ফায়ার সার্ভিস স্টেশন দুটি উদ্বোধন করেন। কিন্তু ছয় মাস গত হলেও এখনো তা চালু হয়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ