Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে আরো চার মামলা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে এবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামশ জগলুল হোসেনের আদালতে মামলাটি করেন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য সুমনা আক্তার লিলি।
অন্যদিকে গতকাল নড়াইল সদর আমলি আদালতে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মানহানি মামলা হয়েছে। নেত্রকোনায়ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজবাড়ীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে মামলাটি দায়ের করেন রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মোছা. সালেহা বেগম।
ট্রাইব্যুনালের পেশকার শামীম হোসেন বলেন, মামলার বাদী আবেদনটি এজহার হিসেবে গণ্য করার জন্য আবেদন করেন। বিচারক বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে গুলশান থানাকে মামলাটি এজহার হিসেবে নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এর আগে মঙ্গলবার রংপুরের একটি মানহানির মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম (এসিএমএম) কায়সারুল ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গত সোমবার রাতে ডিবি গ্রেফতার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করে। সূত্র জানায়, রাজবাড়ীর সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লাবনী আক্তার মামলাটি আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার বাদী সালেহা বেগম বলেন, একাত্তর জার্নাল অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে প্রকাশ্যে চরিত্রহীন বলায় নারী জাতিকে হেয় প্রতিপন্ন ও সমগ্র নারী জাতির মানহানি করা হয়েছে, তাই একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে তার বিরুদ্ধে এক কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করেছি। উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের একটি টক শোতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির এক প্রশ্নে মইনুল হোসেন বলেন, আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই। আমার সঙ্গে জামায়াতের কানেকশনের কোনো প্রশ্নই নেই। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন তা আমার জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর। এ ধরনের বাক্য ব্যবহারে সমালোচনা শুরু হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় মানহানির মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে কয়েকটিতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।
নড়াইল জেলা সংবাদদাতা জানান, নড়াইল সদর আমলি আদালতে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে মামলাটি দায়ের করেন স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিক মিলি খানম। মামলাটি আমলে নিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদুল আজাদ আসামি মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১৬ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টার দিকে একাত্তর টিভির টকশো ‘একাত্তর জার্নাল’ অনুষ্ঠানে দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাসুদা ভাট্টিকে মইনুল হোসেন চরিত্রহীন বলে মন্তব্য করেন। এ ধরণের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় মাসুদা ভাট্টিকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। এমন মন্তব্য করায় মাসুদা ভাট্টির ১০ কোটি টাকার মানসম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় বাদি মর্মাহত হয়ে মামলা করেন। নড়াইল জজকোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট এমদাদুল ইসলাম জানান, মামলাটি দায়েরের পর বিচারক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা জানান, টক শোতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলায় তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নেত্রকোনায়ও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নেত্রকোনা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু’র স্ত্রী জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী কামরুন্নেছা আশরাফ দীনা বাদী হয়ে ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে আসামী করে বুধবার দুপুরে নেত্রকোনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে-১ এই মামলা দায়ের করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মনোয়ার পারভেজ জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ২৯ (১) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। বিজ্ঞ বিচারক শরিফুল হক মামলাটি আমলে নিলেও এখনও পর্যন্ত কোন আদেশ দেননি।

 

সাধারণ বন্দিরের সঙ্গে ফ্লোরে থাকছেন ব্যারিস্টার মইনুল
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের করতোয়া সেলে সাধারণ বন্দিদের সঙ্গে অবস্থান করছেন। তার সঙ্গে আরও ৩০-৩৪ জন বন্দি আছেন। আদালতের নির্দেশে গতকাল কারাগারে যাওয়ার পর তাকে তিনটি কম্বল দেয়া হয়। একটি কম্বল দিয়ে বিছানা তৈরি করেছেন। অন্যটি ব্যবহার করেছেন বালিশ হিসেবে। অপরটি গায়ে দিয়ে তিনি রাত্রী যাপন করছেন। ব্যারিস্টার মইনুলকে যে ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে সেখানে কোনো খাট কিংবা চেয়ারের ব্যবস্থা নেই। কারাগারের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
কারাসূত্র জানায়, ব্যারিস্টার মইনুলকে সাধারণ বন্দিদের কাছে নেয়ার পর তিনি জানতে চান, তাকে কেন ডিভিশন দেয়া হয়নি। তখন সংশ্লিষ্ট কারা কর্মকর্তা তাকে বলেন- আদালত আপনাকে ডিভিশন দেননি। যতক্ষণ পর্যন্ত আদালত আপনাকে ডিভিশন দেয়ার নির্দেশ না দেবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আপনাকে সাধারণ বন্দিদের সঙ্গেই থাকতে হবে। সূত্রটি আরো জানায়, মইনুল হোসেনকে কারাগারের সাধারণ খাবারই খেতে দেয়া হচ্ছে। সকালে তাকে রুটি, গুড় ও ডাল দেয়া হয়। দুপুরে তিনি সবজি, ভাত ও ডাল খেয়েছেন। রাতে ভাত, মাছ ও ডাল দেয়া হয়েছে।



 

Show all comments
  • Kafi Khan ২৫ অক্টোবর, ২০১৮, ৫:৫২ এএম says : 0
    Akhon ai deshe onek kisu e hote pare
    Total Reply(0) Reply
  • monjoor ২৫ অক্টোবর, ২০১৮, ৮:৩৫ এএম says : 0
    Mr. Barrister Now Getting Free Food & Treatment In The Jail.What A Lucky Person He Is.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যারিস্টার মইনুল

৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ