পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কোন বাধায় থামাতে পারেনি জন স্রোত। সিলেট নগরীর ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারী মাঠে হাজার ছুঁয়ে লাখো প্রতিবাদী মানুষের ঢল নেমেছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে। মাঠে জনসমুদ্রের এ বিশালতা বিস্মৃত করেছে সচেতন মানুষকে। নতুন আশা জাগানিয়ার সৃষ্টি হয়েছে সরকার বিরোধী দল তথা বিএনপির কর্মী সমর্থককে। নব উদ্যমে দীপ্ত শপথ নিয়েছেন আন্দোলন সংগ্রামে সর্বোচ্চ ত্যাগের। শুরু থেকে সংশয় সন্দেহ ছিল সমাবেশ নিয়ে। অনুমতির ঘেরাটোপে ফেলে বাধার দেওয়াল তোলার আশঙ্কা ছিল। কি হবে, হচ্ছে এ প্রশ্নের শেষ উত্তর ছিল না স্থানীয় শীর্ষ ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের কাছে। আশাবাদি ছিলেন সমাবেশ হবেই। ২৩ অক্টোরব নির্ধারিত সমাবেশ অনুমতি না দেয়ায় করতে পারেনি ঐক্যফ্রন্ট। একদিন পর গতকাল অবশেষে লেজেগোবের মিশিয়ে সমাবেশের অনুমতি দেয় প্রশাসন। একদিনের নোটিশে সমাবেশের প্রস্তুতি মুখের কথা নয়। কিন্তু তাই করে যোগ্যতা ও দক্ষতার ইতিহাস স্থাপন করেছে সিলেট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তথা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। সেই সাথে ত্যাগ তীতিক্ষা তারা দেখিয়েছে সরকারের রক্তচুক্ষুর বিপরীতে। সমাবেশ নিয়ে প্রকাশ্যে প্রস্তুতি সভায় বাধা দিয়েছে প্রশাসন। জেলা বিএনপির সভাপতি ও স্থানীয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মুখপাত্র আবুল কাহের চৌধুরী শামীমের বাসায় মঙ্গলবার রাতে হানা দেয় পুলিশ। র্শীষ নেতাকর্মীদের আটক করে সাধারণ নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়। এদিকে গ্রেফতার আতঙ্ক, অন্যদিকে সমাবেশ। শ্যাম রাখি না কূল রাখি অবস্থা ছিল স্থানীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের। কিন্তু তারা দু’দিকইে বজায় রেখে সফল সার্থক সমাবেশের কৃতিত্ব দেখিয়েছে। গতকাল সমাবেশেকে চ্যালেঞ্জ করে রাজপথে কৌশলী কর্মসূচী দেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ। সরকারের উন্নয়ন ফিরিস্থি তুলে ধরতে লিফলেট হাতে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামে সকালে দলের নেতৃবৃন্দ। এর মধ্যে দিয়ে নগরীর রাজপথে দখল নেয় তারা। সমাবেশের কিছুক্ষণ আগে তারা ঘরে ফিরে। কিন্তু তাদের অবস্থান নানা মাধ্যমে মুর্হূতে ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। সমাবেশে জনতার যে স্রোত দূর দুরাস্ত থেকে সকালে নগরীর অভিমুখে রওয়ানা দেয়ার পথে ভাটা পড়ে। সিলেটের আঞ্চলিক সড়ক গুলোতে সাধারণ যান চলাচল কৌশলে সীমিত করে দেয়া হয়। গাড়ি বহরে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বুদ্ধিবৃত্তিক বাধা আপত্তির পাশাপাশি প্রকাশ্যে রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের ভীতি প্রদর্শন, গ্রেফতার তোয়াক্কা না করেই সমাবেশে শুরু থেকেই জনসমাগম বাড়তে থাকে। সেই সমাগম সমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারী মাঠ। তালতলা থকে সুরমা পয়েন্ট রাস্তার সবদিকে মানুষ আর মানুষ। উচু ভবন, বাসার ছাদ কোথাও বাকী নেই সমাবেশে শরিক হওয়া মানুষের উপস্থিতি। এছাড়া দুরান্তের বিভিন্ন স্থানে মাইকের পাশেও উৎসুক মানুষের জটলা ছিল। মানুষের আচরন ছিল স্বাভাবিক ও মনোযোগী। মানুষের মধ্যে ছিল ব্যাপক কৌতুল তাদের ভাবনায় ছিল দেশের সর্বোচ্চ মুরব্বি তথা রাজনীতিকদের এ চেষ্টায় হয়তো বদলাতে পারে বাংলাদেশ। কারণ সমাবেশে আমন্ত্রীত অতিথিদের দৃড়চেতা বক্তব্য তাদের অন্তর কেড়েছে। উত্তরনের অপেক্ষায় সিলেটবাসী। সব বাধাকে অতিক্রম করে সমাবেশে যোগ দিয়ে তারই প্রমান তারা দেখিয়েছে জাতীয় ফ্রন্ট নেতাদের। নেতাদের সামনে রেখে তারাও পথ চলতে প্রস্তুত সেই প্রত্যয়ে তার করেছে দু’হাত তোলে আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথ কাঁপাতে।
নজর কেড়েছে ফখরুলে মুষ্টিবদ্ধ হাতের দীপ্ত বলিষ্টতা :
সমাবেশ মঞ্চে পৌঁছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুষ্টিবদ্ধ করে তার দৃঢ়চেতা মনোভাবে তেজ দীপ্ত করে তোলেন উপস্থিতি নেতাকর্মীদের। তার এ অদম্য মানসিক ভংগি আবেগ আপ্লুত ও শিহরিত করে তোলে নেতাকর্মীদের। তারা মুর্হুমুহু শ্লোগানে স্বাগত জানায় মির্জা ফখরুলকে। বক্তব্য পর্যায়ে ফখরুল ইসলাম বলেন, সিলেটবাসী অনেক ইতিহাসের জন্ম দিয়েছেন। আজ আরেকটি ইতিহাসের জন্ম দিচ্ছেন। এই ইতিহাস হচ্ছে গণতন্ত্র মুক্তির ইতিহাস। আজ থেকে নতুন লড়াইয়ের শুরু হলো। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে আমাদের অধিকার। গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। সরকারকে পরিস্কার করে বলতে চাই, তফসিল ঘোষণার আগে পদত্যাগ করুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। ইভিএম দেয়া চলবে না। ডিজিটাল চুরি করতে দেয়া হবে না। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
চিকিৎসা ও ঔষধ মূল্য অর্ধেকের প্রতিশ্রতি দিলেন ডা. জাফরুল্লাহ :
সিলেটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে বক্তব্য প্রদানের শুরুতেই মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি সিলেটে কর্ণেল এম এ জি ওসমানীকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসলে চিকিৎসা ও ঔষধের মূল্য অর্ধেক করে দিবো। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে মন্তব্য করে জাফরুল্লাহ বলেন, দেশে আইনের সংস্কার প্রয়োজন।
মান্না বললেন সিলেটে জনসভা সরকারের জন্য সিগন্যাল:
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই আমাদের সাথে কথা বলুন। সিলেটের জনসভা সরকারে জন্য একটি সিগন্যাল। কেউ যদি পারেন (এই সমাবেশের) একটি ভিডিও প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়ে দেবেন। তিনি অবাক হবেন, এতো বাধার পরেও কিভাবে এতো মানুষ হলো সমাবেশে। গত বছর নির্বাচনের সময় ঘরে ছিলেন। এবার কোটি কোটি মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে আসবে। সরকার চোরের মতো, ডাকাতের মতো ভোট ডাকাতি করছে। সিলেটের মানুষ সাহস দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে, মেধা দিয়ে আরিফুল হক চৌধুরীকে বিজয়ী করেছে। আজ আমাদের শপথ নেয়ার সময়, সিদ্ধান্ত নেয়ার সময়। ভোট যদি হয়, আমরা জিততে পারবো?
মান্না আরো বলেন, আমরা বাঁচার অধিকার চাই, সুন্দর দেশের অধিকার চাই। সারাদেশের মানুষ একদিকে, অন্যদিকে শেখ হাসিনার সরকার একা থাকবে। আমরা লড়াই করবো।
খেলাফত আমীর প্রিন্সিপাল হাবিবকে স্মরণ করলেন সুলতান মনসুর:
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সিলেট সমাবেশ সমন্বয়ক ্ও ডাকসু র সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর তার বক্তব্যে সদ্য পরলোকগত বাংলাদশে খেলাফত মজলিসের আমীর, দেশ বরণ্যে ইসলামী চিন্তাবিদ, হাজারো আলেমের উস্তাদ, জাতীয় রাজনীতিক, ঐতিহ্যবাহী কাজীর বাজার মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবিবুর রহমানের নাম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে আরো বক্তব্যে বলেন, ‘সিলেটের মানুষ কোনোদিন মাথা নথ করে হাঁটে না, মাথা উঁচু করে হাঁটে। যতো দিন বাঁচবো, জনগণের দাবিতে থাকবো’ মন্তব্য করে সুলতান মনসুর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে থাকার ঘোষণা দেন।
এক সপ্তাহের মধ্যে টের পাবেন, সরকারকে দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, দ্রুত পদত্যাগ করুন নইলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে টের পাবেন। জনগণের দাবি মেনে না নিলে আপনাদের ছাল-বাকলও থাকবে না। সিলেটের রেজিস্টারি মাঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে শামসুজ্জামান দুদু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের জবাবে এসব কথা বলেন।
ডু অর ডাই আমরা মাঠে থাকবো : এ্যানি
বিএনপির প্রচার বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, ডু অর ডাই আমরা মাঠে থাকবো ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন আর পিছিয়ে যাবার রাস্তা নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।