রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মোহাম্মদ আলী, দাউদকান্দি (কুমিল্লা) থেকে
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার অংশে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসাসেবা সুবিধার কথা বিবেচনা করে ৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে দাউদকান্দির শহীদনগরে নির্মাণ করা হয় ট্রমা সেন্টার। বর্তমানে এ ট্রমা সেন্টারটি এখন নিত্যদিনের হাটবাজারে পরিণত হয়েছে। ২০ শয্যা বিশিষ্ট ট্রমা সেন্টারটি প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। ২০০৬ সালের ৬ অক্টোবর এ ট্রমা সেন্টারটি উদ্বোধন করেন ৪ দলীয় জোট সরকারের সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। উদ্বোধনের কিছুদিন পর ট্রমা সেন্টারের প্রধান ফটকে দরজায় তালা ঝুলতে দেখা গেছে। দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত এভাবে পড়ে থাকার পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে নানান রঙে সাজিয়ে নতুন করে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হককে দিয়ে ট্রমা সেন্টারটি পুনরায় ২০১০ সালের ৩০ এপ্রিল উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন কালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ১ মাসের মধ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি ট্রমা সেন্টার করে প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতি এবং জনবল দেয়া হবে। কিন্তু ২০১০ সালের ৩০ এপ্রিল উদ্বোধনের পর আজও এর কার্যক্রম চালু হয়নি। গত বছরের ১৫ মে দাউদকান্দি মালীগাঁওয়ে সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়ার ৫০ শয্যা হাসপাতাল উদ্বোধন কালে বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম সাহেবের নিকট কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-মেঘনা) আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অবঃ) সুবিদ আলী ভূঁইয়া শহীদনগর ট্রমা সেন্টারটি পুনরায় জনবল দিয়ে চালু করার জন্য বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম সাহেবের নিকট অনুরোধ জানান। ট্রমা সেন্টারে ৬ জন ডাক্তার, ৩ জন নার্স, ২ জন ওয়ার্ড বয়, ১ জন ক্লিনিয়ার ও ১ জন কুকার নিয়োগ দেয়া এবং ২৪ ঘণ্টা ট্রমা সেন্টার খোলা থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে নামে মাত্র ৩ জন ডাক্তার ১ জন ওয়ার্ড বয় ও ১ জন নার্স খাতা-কলমে দেয়া আছে। তাও গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি জনবল ও বেতন না থাকার কারণে তারা হাসপাতালে আসেন না। মহাসড়কসহ দাউদকান্দির গৌরীপুর-হোমনা-বাঞ্ছারামপুর, গৌরীপুর-সাচার-কচুয়া, গৌরীপুর-মতলব-চাঁদপুর, ইলিয়টগঞ্জ-মুরাদনগর সড়কে প্রায় প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কোনো রোগী চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না। তিন মন্ত্রীর উদ্বোধনের পর আজও চালু হয়নি কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ ট্রমা সেন্টারটি। ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতি। মহাজোট সরকারের পুনরায় উদ্বোধনের পর ট্রমা সেন্টারের বিদ্যুৎ ট্রান্সফরমারসহ চুরি হয়ে যায় কয়েক লাখ টাকার মালামাল। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ ভবনটি আর কোনো কাজে আসেনি এখনও। তাছাড়া অযতেœ-অবহেলায় ট্রমা সেন্টার ভবনটি নষ্ট হয়ে পড়ছে। দেখার কোনো লোক না থাকায় দিনে-রাতে ট্রমা সেন্টারের ছাদে, বারান্দায়, কোয়াটারে, হাসপাতালের আশপাশে ও মাঠে বসে মদ, ফেনসিডিল ও জুয়ার আসরসহ একটি মহল প্রভাব খাটিয়ে নিত্যদিন হাটবাজার বসিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যদিও কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন ট্রমা সেন্টারে বর্তমানে ৩ জন ডাক্তার নিয়োজিত আছে। এ ব্যাপারে কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জেন্ট মজিবুর রহমান মোবাইল ফোনে জনান, ট্রমা সেন্টারের সামনে হাটবাজারের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছি। প্রশাসন ১৫ দিনের মধ্য অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সিভিল সার্জন্ট মজিবুর রহমান আরো বলেন, ট্রমা সেন্টারে কোনো বরাদ্দ নেই গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি না থাকার কারণে ডাক্তার এসে এখানে থাকে না। বর্তমানে হাটবাজারের ইজারাগণ ট্রমা সেন্টারের সামনের অংশে বাজারের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত টিএইচ ডাঃ মো. শাহীনুর আলম (সুমন) জানান, শহীদনগর ট্রমা সেন্টারটি আউটডোর চালু রাখার চেষ্টা করেছি কিন্তু জনবল না থাকার কারণে পূর্ণাঙ্গ করতে পারিনি। অর্থের অভাবে ট্রমা সেন্টারটির বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস লাইন বিছিন্ন রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।