Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা সিলেট থেকে ঢেউ তুলবে সারা দেশে

প্রস্তুত ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠ

ফয়সাল আমীন | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

কোন বাধাই টেকেনি। সব বাধার প্রাচীর খান খান হয়ে গেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ কেন্দ্রিক অনড় অবস্থানে। অবশেষে সমাবেশ হচ্ছে সিলেটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের। অতিথিরাও এসে পৌঁছেছেন সিলেটের মাটিতে। এখন অপেক্ষা কোটি মানুষের।
সেই সমাবেশের আওয়াজ শুনতে মুখিয়ে আছেন সিলেটের আমজনতা। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ এখন তাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। সর্বত্র একই আলোচনা। কে আসছেন, কী বলবেন, কী হবে এ নিয়েই কৌতূহল। স্বভাবত, ভাবনা ঘিরে ধরেছিল সমাবেশ করতে দিবে না প্রশাসন, কিন্তু সেই ভাবনা গত হয়েছে সমাবেশের অনুমতি প্রাপ্তির মধ্যে দিয়ে। দেরিতে হলেও অনুমতি প্রাপ্তিকে সরকারের পিছু হটা মনে করছেন সচেতন মানুষ। তাই তারা মনে করছেন, এ সমাবেশের মধ্যে দিয়ে নতুন কিছুরও সম্ভাবনা ঘটতে পারে। সচেতন সাধারণ মানুষের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ ও কর্মী সমর্থকও তাই ভাবছেন। বুকে আশা জেগেছে হয়তো রাজনীতি পরিবর্তন হতে যাচ্ছে দেশে। তাই সর্বশক্তির জানান দিতে চায় সমাবেশে। বিশেষতঃ বিএনপির কর্মী সমর্থকদের মধ্যে অশেষ আগ্রহ সমাবেশ ঘিরে। পাড়ামহল্লা তথা তৃণমূলে সমাবেশে উপস্থিতির প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। এই সমাবেশের ৭ দফার ঘোষণায় তেজদীপ্ত হতে চান তারা। শুধু জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের শরীক দল নয়, সরকার দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে সমাবেশ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুর রাকিবও সমাবেশ সফলের জন্য আহবান জানিয়েছেন। পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বাইরে, কিন্তু সরকার বিরোধী ইসলামী ও সাধারণ রাজনীতিক দল ও শক্তি ঐক্যফ্রন্টের প্রথম সমাবেশ নিয়ে ব্যাপক কৌতূহলী। তারা সমাবেশে উপস্থিত হবেন এমন আভাসও পাওয়া গেছে।
এদিকে সমাবেশ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে জেলা বিএনপির সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্ট মুখপাত্র আবুল কাহের শামীম বলেছেন, ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠের জনসমাবেশ ঘিরে কোনো সহিংস ঘটনা ঘটানোর দুরভিসন্ধিমূলক আগাম ইঙ্গিত পাচ্ছেন তারা। সরকারের পক্ষ থেকে গত কয়েক দিন ধরে অনেক কথা বলা হচ্ছে। তারা বলেছেন, রাজপথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে মোকাবিলা করা হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সমাবেশে সহিংসতা করবে। এই যে আগাম কথা বলা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে, এখানেই আমাদের সংশয়। নানা শঙ্কার মধ্যেও সমাবেশ সফল করার জন্য জোর প্রস্ততি সম্পন্ন করেছেন স্থানীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ। ১৮ ফুট দৈর্ঘ ৪০ ফুট প্রস্থ হচ্ছে জনসভার মঞ্চ। টেবিল ও সামিয়ানা আনা হয়েছে। মঞ্চে সিনিয়র নেতাদের বসার জন্য রাখা হবে চেয়ার। পর্যাপ্ত মাইকের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্থানীয় নেতৃবৃন্দ জানান, সিলেটের এই মঞ্চের আওয়াজ ঢেউ তুলবে সারা দেশে। সে কারণে দেশের রাজনীতির ইতিহাসে নতুন মাইলফলক হবে এই সমাবেশ। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অধ্যায় হবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই সমাবেশ। সরকারের বিরামহীন চাপ অপেক্ষা করে লোকে লোকরণ্য হয়ে উঠবে জনসভাস্থলসহ গোটা এলাকা। প্রথমে পুলিশ অনুমতি দেয়নি। ফলে ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুব্রত চৌধুরী স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি ও সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আইনি নোটিশ পাঠান। রোববার বিএনপি নেতা আলী আহমদ হাইকোর্টে রিট করেন। তবে আইনি সুরাহা হওয়ার আগেই, ঐক্যফ্রন্টকে সমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ।
জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, সরকার যখন সমাবেশের অনুমতি আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে, তাহলে আমাদের আর ভয় নেই। আমাদের হাতেই আগামীর বাংলাদেশ। সিলেটের সমাবেশের মধ্যে দিয়ে সরকারকে আমরা দেখিয়ে দিব সবকিছুর যে শেষ আছে।
এদিকে, সিলেটের সমাবেশ থেকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সাত দফা মেনে নেয়ার জন্য সরকারকে আল্টিমেটাম দেবে নতুন এ জোট। দাবি না মানলে অসহযোগের মতো কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। পাশাপাশি দাবির পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে জনগণের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলারও আহ্বান জানাবেন নেতারা।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা আজ (বুধবার) সকালে প্রথমে হজরত শাহজালাল (রহ.), হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজার এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর কবর জিয়ারত করবেন। তারপর বেলা ২টায় রেজিস্ট্রারি মাঠে উপস্থিত হবেন। সমাবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আলাদা চিঠিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছেও সহায়তা চেয়েছেন। সব ধরনের সংঘাত-সহিংসতা এড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ জানান, সমাবেশ সফল করার প্রস্তুতি চূড়ান্ত। সমাবেশ নিয়ে সরকারের কোন টালবাহানা টিকেনি। বরং মানুষ সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপে নাখোশ হয়েছে। সেকারণে বিভাগের জেলা-উপজেলা থেকেও বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী শুধু নয় মুক্তিকামী সচেতন মানুষের প্রতিবাদী উপস্থিতি ঘটবে সমাবেশে। এদিকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র আবদুল ওয়াহাব জানান, শর্ত সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতির প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে সংশ্লিষ্টদের।



 

Show all comments
  • সুলতান ২৪ অক্টোবর, ২০১৮, ৫:৪১ এএম says : 0
    অবস্থা দেখে তো সেটাই মনে হচ্ছে
    Total Reply(0) Reply
  • কাসেম ২৪ অক্টোবর, ২০১৮, ৫:৪২ এএম says : 0
    শুভ কামনা রইলো
    Total Reply(0) Reply
  • Nejam Anowar ২৪ অক্টোবর, ২০১৮, ১:০০ পিএম says : 0
    সফলতা কামনা করি
    Total Reply(0) Reply
  • HM Faisal Mahmud ২৪ অক্টোবর, ২০১৮, ১:০০ পিএম says : 0
    কি যে হবে বলা যায় না,,
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ