বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা : দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া ফেরিঘাটসহ সংলগ্ন চারটি গ্রাম নদীভাঙনের মুখে রয়েছে। ইতোমধ্যে ২নং ঘাটটি ভাঙনের কবলে পড়ে বন্ধ হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ সাময়িক মেরামত করে তা সচল করেছে। এছাড়া ভাঙনের মুখে গত কয়েক দিনে ঘরবাড়ি গুটিয়ে অন্যত্র চলে গেছে অন্তত বিশটি পরিবার।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি শুষ্ক মৌসুমে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় পদ্মা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে ভাঙনের ভয়াবহতা আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে আগামী বর্ষা মৌসুমে এ ঘাট নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। মূলত গত বর্ষা মৌসুম থেকে ভাঙন শুরু হলেও তা রক্ষার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। অথচ এ ঘাট থেকে বিআইডব্লিউটিসি দৈনিক ৮-১০ লাখ টাকা হিসাবে বছরে মোটা অঙ্কের রাজস্ব আয় করে। রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক জিনাত আরা সম্প্রতি ঘাট পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের চ্যানেলের উজানে থাকা চরটি ভেঙে নদীতে বিলীন হওয়ার পথে। চরটি ভেঙে গেলে পদ্মার মূল ¯্রােত সরাসরি আঘাত হানবে ঘাট এলাকায়। ২ নং ঘাট এলাকায় দেখা যায়, নদীর পাড় অন্তত ২৫-৩০ ফুট খাড়া হয়েছে। সামান্য জোয়ারের পানি ও ¯্রােতের ধাক্কায় যেকোনো সময় ওই এলাকাটি বিলীন হয়ে যাবে। ভাঙনে কয়েক দিন আগে ২ নং ঘাটটির অনেকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে বেশ কিছুদিন ঘাটটি বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে দায়সারা গোছের সংস্কার করে ঘাটটি কোনোরকমে চালু রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ওই ঘাটসংলগ্ন বিশটি পরিবার গত কয়েক দিনে তাদের ঘর-বড়ি সরিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকার ছিদ্দিক কাজীরপাড়া, মজিদ শেখেরপাড়া, শহীদ বেপারীরপাড়া, চালাকপাড়া এলাকার অন্তত ৩ শ’ পরিবার ও অর্ধশত দোকান ও ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙনের মুখে রয়েছে।
ছিদ্দিক কাজীরপাড়ার মৃত ইছাক শেখের স্ত্রী সুফিয়া বেগমকে দেখা যায় খোলা ভিটায় শেষবারের মতো রান্নার কাজ করছেন। আলাপকালে তিনি জানান, ‘জান হাতের মুটে নিয়া এমনে গাংয়ের পাড়ে এমনে থাহন যায় না। গাংগে একটু তুফান উটলেই পিলা চুমকাইয়া যায়।’ এ সময় আইনদ্দিন শেখ, মুক্তার শেখ, কদম আলী শেখ, কিয়ামউদ্দিন শেখ, মজিবর শেখসহ আরো অনেকেই জানান, গত কয়েক দিনের মধ্যে তারাসহ এ এলাকার প্রায় বিশটি পরিবার এখান থেকে চলে গেছে। বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া অফিসের ব্যবস্থাপক সফিকুল ইসলাম জানান, গুরুত্বপূর্ণ এ ঘাট নদীভাঙনের মারত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিষয়টি অবগত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর আরিচা অঞ্চলের সহকারী ব্যবস্থাপক খাজা সাদেকুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, এ বছর দৌলতদিয়া ঘাটের ভাঙন পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে ঘাটগুলো অন্যত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হবে। সম্প্রতি ঢাকা থেকে সংস্থার প্রধান প্রকৌশলীসহ উচ্চ পর্যায়ের একটি দল সরেজমিন ঘাট পরিস্থিতি দেখে গেছেন।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ম-ল জানান, ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবাস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তদবির করা হচ্ছে। এছাড়া অন্যত্র চলে যাওয়া পরিবারগুলোকে সাধ্যমতো সহযোগিতা করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।