Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চ্যালেঞ্জের মুখে ২০৫০ সাল নাগাদ প্রবীণদের সুরক্ষা

প্রবীণ ফাউন্ডেশন বিল পাসের তাগিদ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে প্রবীণদের সংখ্যা ৭ থেকে ৮ শতাংশ। যেভাবে মানুষের আয়ু বাড়ছে, তাতে আগামী ৩২ বছর পর প্রতি পাঁচ জনে প্রবীণের সংখ্যা হবেন একজন। ২০৫০ সালে বাংলাদেশে প্রবীণের সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ২০ লাখে, যা ওই সময়কার মোট জনসংখ্যার ২২ থেকে ২৩ শতাংশ হবে। ফলে এখন থেকে প্রবীণদের অধিকার নিয়ে জোরালোভাবে কাজ করতে হবে। না হলে ৩২ বছর পর প্রবীণদের সুরক্ষা দেওয়া কঠিন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রবীণ অধিকার সুরক্ষায় করণীয় : আন্তঃপ্রজন্ম সমন্বয়’ শীর্ষক সেমিনারে এমন মন্তব্য করেন বিশেষজ্ঞরা।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ড. কাজী খলিকুজ্জমান বলেন, ‘সংবিধানে আছে, কোনও নাগরিকের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও তাই বলে। প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ফলে এখন থেকেই প্রবীণদের অধিকার নিশ্চিত করতে শক্তভাবে দাবি তুলতে হবে। অধিকার নিশ্চিত বাস্তবায়ন করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এ বিষয়ে সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার রয়েছে বলেই এখন প্রবীণরা ভাতা পাচ্ছেন। প্রবীণনীতি প্রণয়ন হয়েছে। তবে এখনও প্রবীণদের অধিকার বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়েছে।’ শতভাগ বাস্তবায়ন না হওয়ায় কারণ হিসেবে তিনি বিচারহীনতাকে দায়ী করেন।
তিনি বলেন, ‘পিতা-মাতা ভরণ-পোষণ আইন ও প্রবীণ নীতি হয়েছে, এখন প্রবীণদের সুরক্ষায় একটি নতুন আইন হওয়া প্রয়োজন। এটির দাবি তুলতে হবে। প্রবীণদের সঙ্গে একজন সঙ্গী থাকতে হবে। কারণ, প্রবীণ হলে সবাই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন। ফলে আন্তঃপ্রজন্ম সেতুবন্ধনের মাধ্যমেই এই নিঃসঙ্গতা দূর করা সম্ভব হবে।’
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘প্রবীণদের জন্য একটি নিশ্চিত জীবনব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবি। তাদের জন্য কী করণীয়— বিশ্ব তার জন্য প্রস্তুতি নিলেও বাংলাদেশে যে ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে, তা পর্যাপ্ত নয়। আগামী ৩২ বছর পর প্রবীণদের সংখ্যা ২ মিলিয়নে (২০ লাখ) গিয়ে দাড়াঁবে, যা মোট জনসংখ্যার ২২ থেকে ২৩ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াবে। ফলে এখন থেকে তাদের নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্যে বিদ্যমান জাতীয় প্রবীণ নীতিমালার আলোকে প্রবীণদের জন্য একটি আইন তৈরি করা প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রবীণ প্রশ্নে মানবাধিকার লঙ্ঘন হলে আইন তৈরি করে তা শৃঙ্খলায় আনাতে হবে।’
হেল্প এজ ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর রাবেয়া সুলতানা বলেন, ‘আমাদের সমাজের ৬০ থেকে ৭০ বছরের প্রবীণদের কর্ম ক্ষমতা থাকলেও তাদের কর্ম অক্ষম মনে করা হয়। এ কারণে তাদেরকে অলস সময় পার করতে হয়। প্রবীণবান্ধব দেশ গড়তে না পারায় তাদের বোঝা মনে করা হয়।’
পরিবারের বৃদ্ধদের আলাদা কক্ষ রাখা, এডুকেশন কারিকুলামে প্রবীণদের অধিকার নিয়ে আলাদাভাবে পার্ট রাখা খুব দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- প্রবীণ ফাউন্ডেশন বিল পাস করা। এই বিলটি যত দ্রুত পাস করা সম্ভব হবে, তত দ্রুত প্রবীণদের অধিকার বাস্তবায়নে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। একই সঙ্গে প্রবীণদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে চিকিৎসাসেবা চালু করার কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- ইউএনএফপিএ কান্ট্রি ডিরেক্টর আসা বিত্তা টরকেলসন, ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জী, মেজর জেনারেল (অব.) জীবন কানাই দাস, প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরা-বিজ্ঞানের মহাসচিব প্রফেসর আতীকুর রহমান প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রবীণ

১ অক্টোবর, ২০২১
১ অক্টোবর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ