Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তৈরি হচ্ছে ‘তিতলি’

বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০১৮, ১:১৩ পিএম | আপডেট : ১:২৯ পিএম, ৯ অক্টোবর, ২০১৮

‘প্রজাপতিটা যখন তখন, উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে রাঙা মেঘের মতন, বসে আমার আকাশ জুড়ে যখন তখন...’। আবিদা সুলতানার সুরেলা কণ্ঠে ভালোলাগা চেনা গানের সেই প্রজাপতিটার কথা বলছি না।
সাগরের বুকে আরেক ‘প্রজাপতি’ দম নিচ্ছে। জোরদার হওয়ার চেষ্টা করছে। তারপর উড়ে আসতে পারে ভারত এবং বাংলাদেশের দিকে। আর এখন শক্তির সেই মহড়াই দিচ্ছে প্রজাপতিটা।
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গতকালের নিম্নচাপটি আজ মঙ্গলবার ভোররাতে আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও জোরদার হতে পারে এবং উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে রয়েছে এর গতিমুখ। পরের ধাপে গভীর নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত ও জোরালো হয়ে যখন সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে তখনই এটি নাম ধারণ করবে ‘তিতলি’। ‘তিতলি’ হলো উর্দু শব্দ। যার অর্থ ‘প্রজাপতি’।
ঘূর্ণিঝড়ের নতুন নতুন একেকটি নাম দেয়া হয়ে থাকে। নামগুলো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার আগেই ঠিকঠাক করা হয়ে যায়। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর উপসাগর তীরের দেশগুলোর প্যানেলে একেকটি সদস্য দেশ একেকটি নাম প্রস্তাব করে। সেই নামগুলো থেকে এবারের সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘তিতলি’। নামটি প্রস্তাব করেছে পাকিস্তান। এ নামের অর্থ ‘প্রজাপতি’।
ইতোপূর্বে বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, ভারত, মিয়ানমারসহ প্যানেলের অন্তর্ভূক্ত বিভিন্ন দেশের প্রস্তাব অনুসারে সিডর, আইলা, নার্গিস, মহাসেন, রোয়ানু, মোরা, দেয়ী ইত্যাদি হরেক নাম রাখা হয়। ঘূর্ণিঝড়ের মতো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগকে চিনে রেখে রেকর্ডভূক্ত রাখতেই নামাকরণ করা হয়। এ মুহূর্তে আরব সাগরে আরও একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। এর নাম ‘লুবান’। ঘূর্ণিঝড়টি ওমানের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে।
আজ দুপুরে সর্বশেষ আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে জানা গেছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিকে আরও অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৯০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৭০ কিমি দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮৫০ কিমি দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। গভীর নি¤œচাপটি আরও উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর এবং ঘনীভূত হতে পারে।
গভীর নি¤œচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিমি, যা দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নি¤œচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর মাঝারী ধরনের উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমূদ্র বন্দরকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে অবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ও ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক আবহাওয়া নেটওয়ার্ক সূত্রগুলো থেকে জানা যায়, গভীর নিম্নচাপটি শিগগিরই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এটি আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে ভারত এবং বাংলাদেশের খুলনা উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে, যদি গতিপথ পরিবর্তন না করে। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রামসহ উপকূলীয় অঞ্চলে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ হচ্ছে। বইছে হিমেল হাওয়া। আগামী ২ থেকে ৩ দিনে সারাদেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা এবং তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবহাওয়া

২৯ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ