পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা থেকে গাজীপুর-টাঙ্গাইল হয়ে ৬ লেনের মহাসড়ক যাবে লালমনিরহাটের বুড়িমারী পর্যন্ত। আরেকটি মহাসড়ক যাবে দিনাজপুর হয়ে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত। এই মহাসড়ক ধরেই বাংলাদেশ থেকে ভারত, নেপাল ও ভুটানে যাওয়া যাবে। এজন্য সাউথ এশিয়া সাব রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) এর তিনটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।
ইতোমধ্যে সাসেক প্রকল্প-১ এর আওতায় গাজীপুর থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেন মহাসড়কের কাজের প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের বর্ধিত অংশে আরও দুই লেন যুক্ত করা হয়েছে। আর সাসেক প্রকল্প-২ এর আওতায় টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে সিরাজগঞ্জ-বগুড়া হয়ে রংপুর পর্যন্ত ছয় লেন মহাসড়কের কাজ এ বছরের শেষের দিকে শুরু হবে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা থেকেই গাজীপুর থেকে টাঙ্গাইল চার লেনের মহাসড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাড়তি লেনের জন্য জমি অধিগ্রহণও শুরু হয়েছে। এই ছয় লেনের মধ্যে দুই লেন রাখা হচ্ছে ধীরগতির যানবাহনের জন্য।
সূত্র জানায়, সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্পের অধীনে জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা সড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ সময়মতো হয়নি। ২০১৩ সালের এপ্রিলে অনুমোদন হলেও প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ ২০১৬ সালে শুরু হয়। অথচ প্রকল্পটির বিশেষ সংশোধনী অনুযায়ী চলতি বছরের ৩১ মার্চ মেয়াদ শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে ২য় সংশোধনী অনুমোদন হয়েছে। সময়মতো শেষ না হওয়ার জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজে ধীরগতি আর দুর্বল তদারকিকে দায়ী করেছে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি)।
আইএমইডি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের শুরুতে যথাযথ পরিকল্পনার অভাবই ছিল মূল সমস্যা। প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই বা ফিজিবিলিটি স্টাডির মাধ্যমে প্রকল্প শুরু করা হলেও ফিজিবিলিটি স্টাডিকালীন সময়ে কোনো প্রকার তদারকি করা হয়নি। স্টাডি রিপোর্টটি পর্যালোচনা ছাড়াই গ্রহণ করা হয়েছে। এতে ভুলত্রু টি আছে কিনা তাও দেখা হয়নি। প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডিতে বাঁক সরলীকরণ বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়নি। প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণে অনেক ভুল-ভ্রান্তি রয়েছে। এতে অধিগ্রহণ প্রস্তাব তৈরির সময় অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঠিকাদার সময়মতো ভূমি বুঝে পায়নি। ঐ সকল স্থানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সময়মতো কাজও শুরু করতে পারেনি।
আইএমইডির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ফিজিবিলিটি স্টাডির আলোকে ডিপিপি প্রস্তুত করতে গিয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর প্রকল্পের প্রয়োজনীয় সকল অঙ্গ বিবেচনা না করে প্রকল্প ব্যয় ২৭৮৮ কোটি টাকায় মূল ডিপিপি প্রস্তুত করে। এই প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ওএফআইডি, এডিএফডি এবং বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করছে। বর্তমানে প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে ৫৫৯৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। চলতি বছর মার্চে প্রকল্পটি শেষ করার লক্ষ্য থাকলেও এটি এখন ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। বাস্তবায়নের কাজে ধীরগতি, অতিবৃষ্টি, ঠিকাদারদের অদক্ষতা এবং নিম্নমানের প্রকল্প ব্যবস্থাপনার কারণে এই সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
সূত্র জানায়, মূল প্রকল্পটিতে কোনাবাড়ী ফ্লাইওভার, চন্দ্রা ফ্লাইওভার, লতিফপুর রেলওয়ে ওভারপাস, সোহাগপুর (ধেরুয়া) রেলওয়ে ওভারপাস ও রাবনা ফ্লাইওভার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২য় সংশোধনীতে নাওজোর ফ্লাইওভার, শফিপুর ফ্লাইওভার, চন্দ্রা লুপ, কালিয়াকৈর হাইটেক পার্ক ফ্লাইওভার, লতিফপুর রেলওয়ে ওভারপাস, গোড়াই ফ্লাইওভারসহ মোট ৬টি ফ্লাইওভার এবং ১৩টি আন্ডারপাস এবং ডানপাশের ৫১ কিলোমিটার এসএমভিটি লেন অর্থাৎ ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সওজ কর্মকর্তাদের দাবি চার লেন মহাসড়কের কাজ ইতোমধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ঈদের আগেই প্রধানমন্ত্রী এই মহাসড়কের ২৩টি সেতু একসাথে উদ্বোধন করেছেন।
এদিকে, এদিকে সাসেক প্রকল্প-২ এর উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের মধ্যে যে ব্রিজগুলো পড়েছে এগুলোও ছয় লেনের উপযোগী করে নির্মিত হচ্ছে। ব্রিজগুলো নির্মাণ করছে ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (ডাব্লিউবিবিআইপি)। সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, ঢাকা থেকে রংপুর পর্যন্ত কাজ শেষ হওয়ার পরই রংপুর থেকে বুড়িমারী অথবা বাংলাবান্ধা পর্যন্ত সাসেক-৩ প্রকল্পের ছয় লেনের মহাসড়কের কাজ শুরু হবে।
অন্যদিকে, সাসেক-২ এর আওতায় ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জ-বগুড়া-রংপুর হয়ে ৬ লেনের মহাসড়ক যাবে লালমনিরহাটের বুড়িমারী পর্যন্ত। আরেকটি মহাসড়ক যাবে দিনাজপুরের বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর পর্যন্ত। ইতোমধ্যে বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরে চার দেশের (বাংলাদেশ, ভারত নেপাল, ভুটান) মধ্যে ইমিগ্রেশন বিভাগ চালু হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে সড়কপথেই যাওয়া যাবে উল্লেখিত তিন দেশে।
একজন কর্মকর্তা বলেন, সাসেক প্রকল্পের মহাসড়কের কার্যক্রম বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যেই বাস্তবায়িত হচ্ছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) মাল্টি ট্রান্স ফ্যাসিলিটিজ (এমএফএফ) স্তর ভিত্তিক অর্থায়নে সাসেক উন্নীতকরণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০১৬ সালে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে সাসেক-১, ২ ও ৩ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।
সাসেক প্রকল্পের একজন প্রকৌশলী ইনকিলাবকে বলেন, এই প্রকল্পের মহাসড়ক ৬ লেনের। আগে এটা ৪ লেন হিসাবে শুরু করা হয়েছিল। দ্রুতগতির যানবাহন চলাচলের (ক্যারেজওয়ে) সড়ক চার লেনের। এর সঙ্গে অপেক্ষাকৃত ধীরগতির ছোট যানবাহন চলাচলের জন্য আরও দুই লেন যোগ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সাসেক প্রকল্প-১ এর আওতায় গাজীপুরের ভোগরা বাইপাস থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার ৪ লেন মহাসড়কের প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।