Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কুমিল্লা-৫ আসনে আওয়ামীলীগ বিএনপি ও জাতীয় পার্টির ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা

বুড়িচং (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০১৮, ৪:৪১ পিএম

কুমিল্লা-৫ বুড়িচং-ব্র্হ্মাণপাড়া নির্বাচনী আসনটি দুই উপজেলার ১৭ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত । এর মধ্যে বুড়িচং উপজেলায় নব গঠিত ভারেল্লা (দ:) ইউনিয়ন সহ ৯ টি ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় রয়েছে ৮ টি ইউনিয়ন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ আসনটি বহাল রাখতে কাজ করে গেলেও বসে নেই বিএনপি ও জাতীয় পার্টি। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ( বিএনপি) ও জাতীয় পার্টি মিলে আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসনে ত্রি-মুুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। আওয়ামীলীগের গ্রুপিং থাকলেও চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে দলের বৃহত্তর স্বার্থে শেষ পর্যন্ত ঐক্যমত হওয়া অস্বাভাবিক কোন ফ্যক্টর নয়। আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা প্রকাশ্যে এখন থেকেই বিভিন্ন সভা ও উঠান বৈঠক করে গেলে ও বিএনপি ও আর বসে নেই। গত নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহণ না করে যে খেসারত দিতে হচ্ছে সে কালিমা থেকে মুক্তি পেতে যে কোন ভাবেই হোক এবার নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেই।

আওয়ামীলীগ থেকে আসনটিতে প্রার্থী হওয়ার জন্য বরাবরের মতো সাবেক আইন মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এমপি এলাকায় ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ৯৬ সালে পাস করে দেশের আইন মন্ত্রী হয়ে অবহেলিত বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়ার জনগণের জন্যে সেতু, রাস্তা ঘাট নির্মাণ ও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠাননের এমপিও ভূক্তিসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধন করেছেন এবং বর্তমানে ও তা অব্যাহত আছে ফলে অজঁ পাড়া গায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণে কোটি কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়ে অবকাঠামো নির্মাণে কাজ করে যাচ্ছেন । অধিকন্তু, তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নন বিধায় দলমত নির্বিশেষে আবদুল মতিন খসরুর নির্বাচনে জয় লাভের আলাদা একটি কারিশমা রয়েছে। আওয়ামীলীগ নেতা ব্যারিস্টার সোহরাব খাঁন চৌধুরীর সাথে মতিন খসরু গ্রুপের বৈরীতা থাকলে ও নির্বাচন পর্যন্ত তা নি:শেষ হয়ে যাবে এবং ব্যারিস্টার সোহরাব খাঁন চৌধুরী দলীয় মনোনয়নের আশাবাদী হলেও না পেলে দল যাকে মনোনয়ন দেন তিনি সে পক্ষে কাজ করে যাবেন।
এ আসনে ১৯৭৩ সনে আওয়ামীলীগ, ১৯৯৬ সালে স্বতন্ত্র, ১৯৮৮ সনে জাতীয় পার্টি এবং ২০০১ সনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন অধ্যক্ষ মো. ইউনুছ। ১৯৯৬ সনের ১৫ ফেব্রুয়ারী নির্বাচনে বিএনপি মজিবুর রহমান মজু এমপি হন। এছাড়া, ১৯৯১, ১৯৯৬ সনের ১২ জুনের নির্বাচন, ২০০৮ ও ২০১৪ সনের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী এ্যাড. আবদুল মতিন খসরু এমপি নির্বাচিত হন।
এছাড়া, এ দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন তরুণ উদীয়মান সমাজ সেবক কুমিল্লা (দ:) জেলা আওয়ামীলীগ কার্যকরী কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কুমিল্লা শহর শাখার সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মো. আবদুছ ছালাম বেগ। তিনি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রাপ্তির লক্ষ্যে মাঠে জনসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়া, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল বিধায় সেখানে নেতা-কর্মীদের মাঝে বৈরীভাব থাকতেই পারে। তবে আওয়ামীলীগ নিয়ে আম জনতার মনোভাব আরো আশাবাদী । তারা বলছেন ‘ শেখ হাসিনার দর্শন সব মানুষের উন্নয়ন’ উক্ত বিষয়কে সামনে রেখে একটি বাড়ি একটি খামার, যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বেকার যুবকদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার সুযোগ সহ সকল স্তরের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে সরকার। আবার সার্বজনীন ভাতা প্রদানের বিষয়টি ও এ সরকারের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তে মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মো. ইউনুছ, বিএনপি চেয়ার পার্সনের উপদেষ্টা সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, দলের ক্রান্তিকালে যিনি বৃহত্তর স্বার্থে হাল ধরেছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এএসএম আলাউদ্দীন। সাংবাদিক শওকত মাহমুদের বরাত দিয়ে বুড়িচং উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেন জানান- বিগত ৮ বছর ধরে শতকত মাহমুদ দুই উপজেলার সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন। দুই উপজেলায় বিএনপি সাংগঠকিভাবে বেশ শক্তিশালী হলে ও বর্তমানে দেশে নির্বাচনী পরিবেশ নেই। যদি নির্বাচনী পরিবেশ সুুষ্ঠু হয় তাহলে আমরা অবশ্যই জয়লাভ করবো।
এদিকে, তৃণমূল নেতা কর্মীরা জানান- আওয়ামীলীগ বড় দল তাই নেতা কর্মীদের মাঝে মান অভিমান থাকতেই পারে। এসব নিয়ে দলের মধ্যে কোন কাদা ছোঁড়াছুড়ি নেই। আসন্ন নির্বাচনে দল যাকেই মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীরা নি:স্বার্থভাবে কাজ করে যাবে। এমন নজির এখানকার আওয়ামীলীগ আগে ও দেখিয়েছে আসন্ন নির্বাচনে ও এর ব্যতয় ঘটবে না বলে সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন।
এদিকে এক বিবৃতিতে আবদুছ ছালাম বেগ জানান- তিনি বিগত ১০ বছর ধরে আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরে পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড বিলি করে পুরো নির্বাচনী এলাকার মানুষের ঘরে ঘরে বিলি করছেন।
অধিকন্তু, আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী জাতীয় পার্টির নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. তাজুল ইসলাম ও আর বসে নেই। তিনি বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া জাতীয় পার্টির সমন্বয়কের দায়িত্ব পালনসহ বুড়িচং উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার নেতৃত্বে বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়ার সকল ইউনিয়ন ও কেন্দ্র কমিটি গঠিত হওয়ায় জাতীয় পাটি আগের চেয়ে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে আছে।
সাধারণ ভোটেরা বলাবলি করছে আওয়ামী লীগ বিএনপি সমান সমান লড়াই হবে ফাঁক দিয়ে জাতীয় পার্টি জয়ী হবার সম্ভাবনা বিরাজ করছে। ক্ষমতায় জাতীয় পার্টি না থাকলে ও তৎকালীন সময়ে পল্লী বন্ধু হুসেইন মো. এরশাদের আদর্শের কথা এখনো ভুলতে পারেনি সাধারণ মানুূষ। তাই সাধারণ ভোটারদের সঠিক ভোটাধিকার প্রয়োগে কোন রকম হেরফের না হলে ত্রি-মুখী লড়াইয়ে কে জয়ী হয় তা সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ