Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সজীব ওয়াজেদ জয় ও ইমরান এইচ সরকারের মধ্যে বাগযুদ্ধ

প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

॥ মোবায়েদুর রহমান ॥

ক্ষণজন্মা মার্কিন লেখক মার্ক টোয়াইন তার একটি লেখায় বলেছেন, Truth is stranger than fiction. এই উক্তিটি আবার কালজয়ী ইংরেজ কবি লর্ড বায়রন তার বিখ্যাত একটি এপিক কবিতা Don Juan এ ব্যবহার করেছেন। কালক্রমে এই উক্তিটি ইংরেজি ভাষায় Phrase হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। এর অর্থ হলো, ‘সত্য নাকি কল্প কাহিনীকেও হার মানায়’। আমাদের রাজনীতির দৃশ্যপটে অবিশ^াস্য দ্রুততার সাথে যেসব নাটকীয় ঘটনা ঘটছে সেসব দেখে অমর মার্কিন লেখকের ওই কালজয়ী উক্তিটি মনে পড়ে গেল।
আপনাদের সবারই ইমরান সরকারের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে। জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদ-ের রায় নিয়ে এই ইমরান সরকাররা কত কিছুই না করলেন। যাবজ্জীবন কারাদ- মৃত্যুদ-ে রূপান্তরিত হলো এবং সেই মৃত্যুদ- কার্যকরও হলো। এগুলো করতে গিয়ে শাহবাগের মোড়ে প্রকাশ্যে কত কিছু ঘটল আর নেপথ্যে কত কিছু ঘটল। এগুলো এতই সাম্প্রতিক ঘটনা যে, আজ আর সেগুলোর পুনরাবৃত্তি করার প্রয়োজন হয় না। তার পরের ঘটনাবলী সবাই জানেন। ইমরান সরকারকে কেউ চিনত না। তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। সেখানে তিনি নাকি ছাত্রলীগ করতেন। হঠাৎ করে শাহবাগ মঞ্চ বানিয়ে কয়েক দিনের জন্য সেই মানুষকে মহানেতা বানানো হয়। যিনি সব সময় ছিলেন একজন সাধারণ মানুষ তাকে যদি হঠাৎ করে শূন্যে তুলতে হয় তাহলে কীভাবে সেটা সম্ভব? সম্ভব একটি মাত্র পথে। আর সেটি হলো, বাঁশ দিয়ে তাকে শূন্যে তুলে ধরা। আর যারা বাঁশ দিয়ে ঠেলে উপরে তোলে তারা নিশ্চয়ই খুব ক্ষমতাধর হয়। ইমরান সরকারের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। যে বাঁশ দিয়ে তাকে ঠেলে উপরে তোলা হয়েছিল সেই বাঁশ যেমন ছিল শক্ত পোক্ত তেমনি যারা তাকে ঠেলে উপরে তুলেছিলেন তারাও ছিলেন মহাশক্তিধর।
নিজের যোগ্যতায় উপরে না উঠে যারা বংশদ-ের সাহায্যে ঊর্ধ্বে উন্থীত হয় তাদের উঠতেও যেমন সময় লাগে না তেমনি নামতেও সময় লাগে না। গাছের আগায় তুলে দিয়ে মই টানলে যেমন আপনি মগ ডালে বসে চিল্লাপাল্লা করেন আর নামতে গেলে ধপাস করে পড়ে হাড্ডিগুড্ডি ভেঙে ফেলেন তেমনি বংশদ-ের সাহায্যে যার উত্থান ঘটে তার পশ্চাৎ দেশ থেকে বংশদ- খুলে নিলে তার কি অবস্থা হয়? একেবারে পপাত ধরনী তল। ইমরান সরকারের অবস্থাও হয়েছে তাই। যারা গড়তে পারে তারা ভাঙতেও পারে। যারা তাকে গড়েছিল তারাই এখন তাকে ভাঙছে। তাই তো এখন ইমরান উল্টো সুরে গান গাইছেন। গত রবিবার পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, বিচার চেয়েও তো এ দেশে কোনো লাভ নেই। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কি তাহলে বিচার চেয়ে সরকারকে বিব্রত করা বন্ধ করে দেব? নাকি সবাই মিলে সরকারের দিকে আঙ্গুল তুলে বলব, আপনারাই রেজাউল করিম সিদ্দিকীর খুনি।’
গত শনিবার নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ কথা লেখেন ইমরান। একের পর এক বিভিন্ন পেশার মানুষের খুন হওয়া এবং সর্বশেষ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করিমের খুনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি পোস্টে এ কথা লেখেন। তিনি বলেন, ‘খুন-ধর্ষণ-লুটপাটের বিচার চাইলে পুরস্কার হিসেবে পাই “আনফ্রেন্ড” আর “প্রকাশ্যে হত্যার” হুমকি।’
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুকে এক পোস্টে ইমরানকে আনফ্রেন্ড করার অনুরোধ জানান। ইমরান তার পোস্টে লেখেন, ‘আবারও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক খুন! কে হচ্ছে না খুন? বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, স্কুলছাত্র, কলেজছাত্র, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, গৃহকর্মী, লেখক, প্রকাশক, মুয়াজ্জিন, পুরোহিত? কে বাদ আছে? যখন সকলেই অনিরাপদ, তখন রেজাউল করিম সিদ্দিকী ধর্ম প্রচারক ছিলেন নাকি উদার মানসিকতার ছিলেন, এটা ফালতু আলোচনা। এটা শুধুমাত্র সরকারেরই প্রয়োজন হতে পারে আমাদের মতো বোকা নাগরিকদের বিভক্ত করার কাজে। ধর্ম প্রচারক হলে স্ক্রিপ্টে লেখা হবে জঙ্গি আর উদার হলে নাস্তিক, দায়দায়িত্ব শেষ!’
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, ‘একটু ভেবে দেখলাম, এ দেশে শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বাদে (কর্মীরাও খুন হচ্ছে) সবাই খুন হচ্ছে। এমনকি ক্ষমতাসীন নেতা-নেত্রী ও তাদের পরিবার, আত্মীয়স্বজনদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বাইরে অন্য কোনো ঘটনার বিচারও হচ্ছে না। বলা চলে, অন্য কোনো ঘটনার দায়দায়িত্বও সরকার নিচ্ছে না! বরং এসব ঘটনায় বিচার প্রার্থীদের গুম, খুন করা থেকে শুরু করে হেন কোনো অপপ্রচার নেই, যা তাদের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে না।’
॥দুই॥
কবে থেকে ইমরান সরকারবিরোধী এবং বিপ্লবী বনে গেছেন সেটি আমাদের জানা নেই। কারণ এত দিন ধরে দেখেছি তার কাজ তো সেই ফাঁসির রায় দেওয়ার আগের দিন থেকে শুরু হয়। ফাঁসির রায় ঘোষিত হওয়ার পর তার কাজ শেষ। তবে সম্প্রতি তিনি আলোচনায় এসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে। গত ১৭ এপ্রিল মি. জয় তার ফেসবুক পেজে প্রদত্ত এক স্ট্যাটাসে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস আমাকে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রে শফিক রেহমানের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা উদ্ঘাটন করেছে। তারা এ বিষয়ে প্রমাণাদি আমাদের সরকারের কাছে দিয়েছে। তাকে এই প্রমাণের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি এরচেয়ে বেশি কিছু প্রকাশ করতে পারছি না, কিন্তু এই প্রমাণ দ্ব্যর্থহীন এবং অখ-নীয়।
আমি আশাই করেছিলাম বিএনপি এটা নিয়ে মিথ্যা বলার চেষ্টা করবে। যদিও, আমি আশ্চর্য হয়েছি ইমরান সরকারের বিষয়ে। সম্ভবত শেষ পর্যন্ত তার আসল চেহারাটা উন্মোচিত হলো। এটা দেখে মনে হচ্ছে সে আমাদের বেশির ভাগ সুশীলের মতোই, আরেকটা সুবিধাবাদী এবং মিথ্যাবাদী। হয়তো বিএনপি তাকে পয়সা দিয়েছে। কে জানে। যেভাবেই হোক, আমি তার প্রতি সব শ্রদ্ধা হারিয়েছি। তাকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে আমাদের সরকারের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
আমি আমার সব বন্ধু এবং ভক্তদের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, যারা তাকে অনুসরণ করেন তারা তাকে ফেসবুক থেকে আনফলো/আনফ্রেন্ড করুন। সে একজন অপরাধীর হয়ে কথা বলছে যে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল।
সজীব জয়ের এই স্ট্যাটাসের প্রতিবাদে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ইমরান সরকার। সজীব ওয়াজেদ জয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাসের জবাবে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার জানিয়েছেন, ‘সব রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেই অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত থাকবে।’ তিনি বলেছেন, ‘এ বছরের প্রথম তিন মাসেই দেশে প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি মানুষ খুন হয়েছে। কেউ কি বলতে পারবেন যে এর একটি ঘটনারও বিচার হয়েছে? কেন, এ দেশে প্রধানমন্ত্রীর সন্তান না হলে কি কেউ বিচার পাবে না? তনুর বাবা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী বলে কি তার বিচার পাওয়ার অধিকার নেই?’
সোমবার বেলা ২টার দিকে ইমরান তার ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এসব কথা বলেন।
জয়ের ওই স্ট্যাটাসের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ১৮ এপ্রিল এই স্ট্যাটাস দেন ইমরান। ওই স্ট্যাটাসে দেশে চলমান খুন-ধর্ষণের বিচারের কথা উল্লেখ করে ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা আর ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধার কথা বলতে গিয়ে সম্ভবত আমার নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতাই আজ হুমকির মুখে। কী ভয়াবহ ব্যাপার! আমি আমার স্ট্যাটাসে পরিষ্কার লিখেছি, আমি শফিক রেহমানের রাজনৈতিক আদর্শের সঙ্গে একমত নই। এমনকি আমি স্ট্যাটাসের কোথাও তার মুক্তির কথাও বলিনি। তাতেই যেভাবে আক্রমণ হচ্ছে, খুব সহজেই অনুমান করা যায়, ভিন্নমতের প্রতি সমাজে কতটুকু শ্রদ্ধা বিদ্যমান। এ দেশে খুব গৎবাঁধা কিছু কথা বলা হয়। একটা খুনের বিচার চাইতে গেলেই কেউ কেউ বলে “অমুক এটা করত”। আপনি খুনের বিচার চেয়ে তার সেই কাজকে সমর্থন করলেন! কারও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বললেও একই প্রশ্ন। কারও সঙ্গে সম্পূর্ণ ভিন্নমত পোষণ করেও যে তার অধিকারের জন্য লড়াই করা যায়, সরল এই বিষয়টি সমাজ থেকে একদম হারিয়ে যাচ্ছে। কোনো খুনের বিরুদ্ধে কিংবা কারও মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়ানো মানে যে তার বক্তব্যের সঙ্গে একমত হওয়া নয়, এই বোধটুকুও আমরা হারিয়ে ফেলছি।’
ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘তাই আমরা যা করেছি ঠিক করেছি। যখন দেখতে পাচ্ছি, নানাভাবে একের পর এক মানুষের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে এবং সেগুলো বিভিন্ন উপায়ে জাস্টিফাই করা হচ্ছে, তখন জেনে গেছি এই দানব আসলে আমার দিকেই আসছে; আমাদের সবার দিকেই আসছে! তাই আমরা যদি পক্ষ-বিপক্ষ ভুলে এই দানবীয় শক্তির বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়াই, আমাদের বাকরুদ্ধ রেখে রিজার্ভ লুটের মতো সবকিছু লুট হতে থাকবে, আমাদের কিছুই করার থাকবে না।’ ইতোমধ্যে সজীব ওয়াজেদ জয় ১৭ এপ্রিল ছাড়াও গত ২০ এপ্রিল বুধবার এবং ২২ এপ্রিল শুক্রবার আরও দুটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এসব স্ট্যাটাসে ইমরান সরকার সম্পর্কে নতুন করে আর কিছু বলা হয়নি। যাই হোক, ইমরান সরকার ২২ এপ্রিল আরেকটি পোস্ট দিয়েছেন। এই পোস্টে তিনি যা লিখেছেন সেটি কিছুক্ষণ আগে আমি উল্লেখ করেছি।
॥তিন॥
ইমরান সরকারের এই ফেসবুক পোস্টের পর গত ২২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ফেসবুকে দ্বিতীয় স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসে তিনি তাকে হত্যা ও অপহরণ প্রচেষ্টায় শফিক রেহমানের জড়িত থাকার অভিযোগ পুনরায় উত্থাপন করেন। তার এই দিনের স্ট্যাটাসে ইমরান সরকারের কোনো নাম ছিল না। ওইদিকে ১৭ এপ্রিল ইমরানের বিরুদ্ধে মি. জয়ের ফেসবুক পোস্টের পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইমরানের বিরুদ্ধে একের পর এক বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে।
গত ২০ এপ্রিল বুধবার আওয়ামী লীগের সভাপতি ম-লীর সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘শফিক রেহমানের গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়ে ইমরান এইচ সরকারের ফেসবুক স্ট্যাটাসের প্রেক্ষিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয় যে বক্তব্য দিয়েছেন তাকে আমি সম্পূর্ণ যৌক্তিক এবং গ্রহণযোগ্য বলে মনে করি।’ সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘অপহরণের বায়বীয় অভিযোগে’ শফিক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ইমরান যে মন্তব্য করেছেন, তা কেবল একজন অপরাধীর পক্ষে সাফাই গাওয়াই নয়, চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণও বটে। ইমরান কী করে জানলেন, শফিক রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগটি ‘বায়বীয়’? জামায়াত, সাকা ও খালেদা জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে ‘ভিন্নমত দমনের’ অভিযোগ বহুবার উচ্চারণ করেছে। ইমরান এখন যুদ্ধাপরাধী ও খালেদা জিয়ার ভাষায় বর্তমান সরকারকে আক্রমণ করে কেবল নিজের স্বরূপ উন্মোচন করেননি, কার সুতার টানে পুতুল নাচ হচ্ছে, তাও কিন্তু চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। রাজনৈতিক শিক্ষা ও অভিজ্ঞতায় অপরিপক্ক তরুণ ইমরান, ইতিহাসের একটি বিশেষ মুহূর্তে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করে দেশব্যাপী পরিচিতি অর্জন করেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যে অভূতপূর্ব গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল তা কোনো ব্যক্তিবিশেষের একক কৃতিত্ব ছিল না। ওই সময়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, ১৪ দলীয় জোট, সংস্কৃতি সেবী, পেশাজীবী, কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক ও নারী সমাজসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তি একাট্টা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বলেই বাংলাদেশে এক অভিনব শান্তিপূর্ণ ‘গণউত্থান’ সৃষ্টি হয়েছিল। এই বিপুল গণজাগরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে আমরা চেষ্টা করেছিলাম, আন্দোলনটি যাতে কারও ভুল বা হঠকারিতার জন্য বিপথগামী না হয়। আমরা ভরসা করেছিলাম, এককালের ছাত্রলীগ কর্মী ডা. ইমরানের ওপর।
শফিক রেহমানের গ্রেফতার উপলক্ষে গণজাগরণ মঞ্চের ইমরান গ্রুপ বনাম আওয়ামী লীগের এই বাকযুদ্ধের আসল উৎপত্তি স্থল কোথায় সেটি আমরা জানি না। অনেকে বলেন, ইমরান আওয়ামী লীগের কাঁধে এখন একটি ভারী বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এই বোঝা ফেলে দিয়ে তারা ভারমুক্ত হতে চায়। ইমরান তার ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখে সময় থাকতেই সরকারবিরোধী ভূমিকা নিয়েছেন এবং জয়ের বিবৃতির পরপরই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রিএম্পটিভ স্ট্রাইক করেছেন। তিনি এদেশের রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্য সরকারবিরোধী ভূমিকা গ্রহণ করেছেন। অন্যরা বলেন, পুরোটাই একটি সাজানো নাটক। দেশে আন্দোলন না থাকলেও রাজকোষ চুরি থেকে শুরু করে বিভিন্ন পয়েন্টে সরকার নাজুক অবস্থায় আছে। এ অবস্থা থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্যই এই নাটকের অবতারণা। কোনটি সত্য, সেটি বলবে আগামী দিন।
[email protected]

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

Show all comments
  • রাজিব ২৬ এপ্রিল, ২০১৬, ১:০৬ পিএম says : 0
    ইমরান এইচ সরকারকে এখনও আমি বিশ্বাস করি না। তবে তার সাম্প্রতি দেয়া বক্তব্যগুলো সঠিক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সজীব ওয়াজেদ জয় ও ইমরান এইচ সরকারের মধ্যে বাগযুদ্ধ
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ