Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অপারেটর বদলে খরচ ১৫৮ টাকা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

পরীক্ষামূলকভাবে মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটির (এমএনপি) বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর ফলে মোবাইল ফোন গ্রাহকদের নম্বর অপরিবর্তিত রেখে অপারেটর বদলের সুযোগ তৈরি হলো। এতে গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও টেলিটকের গ্রাহকেরা তাদের আগের নম্বরটি অপরিবর্তিত রেখে পছন্দের অপারেটরে যেতে পারবেন। ওই অপারেটরের নেটওয়ার্কে গিয়ে কলরেট ও ইন্টারনেট প্যাকেজ ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু নম্বর থাকবে আগেরটাই। গতকাল (সোমবার) রাজধানীতে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সেবা শুরুর ঘোষণা দেন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক।
তিনি বলেন, সেবা চালু হয়ে গেছে। গ্রাহকরা এখন কোন অপারেটরের সেবায় সন্তুষ্ট না হলে আগের নম্বরটি ঠিক রেখে পছন্দের অপারেটরে যেতে পারবেন। এ সেবা নিতে গ্রাহককে ৫০ টাকা চার্জের সঙ্গে সিম রিপ্লেসমেন্ট ট্যাক্স এবং ভ্যাটসহ মোট ১৫৮ টাকা খরচ দিতে হচ্ছে। পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক সেবা বলা হলেও আসলে গ্রাহকরা এখন থেকেই পুরোদমে এমএনপি সেবা পাবেন।
বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের ৭২টি দেশে এমএনপি সেবা চালু আছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত ২০১১ সাল থেকে এবং পাকিস্তান ২০০৭ সাল থেকে এমএনপি সেবা দিচ্ছে। বাংলাদেশে এমএনপি সেবার জন্য প্রথমে ৩০ টাকা ফির কথা বলা হলেও পরে তা বাড়িয়ে ৫০ টাকা করা হয়। এর সাথে অন্যান্য খরচ মিলিয়ে যে টাকা দিতে হচ্ছে, তা প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বেশি। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জহুরুল হক বলেন, এ সেবা নিতে গ্রাহককে এখন যে টাকা দিতে হচ্ছে, এমএনপি প্রতিষ্ঠান লাভ বেশি করলে এই টাকার হার ধীরে ধীরে কমিয়ে দেওয়া হবে।
গত নভেম্বরে এমএনপি সেবার লাইসেন্স পায় বাংলাদেশ ও স্লোভেনিয়ার কনসোর্টিয়াম ইনফোজিলিয়ন বিডি-টেলিটেক। অগাস্টে এ সেবা শুরুর কথা থাকলেও নির্দেশনা ও নেটওয়ার্ক জটিলতার কারণে তা দুই মাস পিছিয়ে যায়। ইনফোজিলিয়ন বিডি-টেলিটেক জানিয়েছে, যেহেতু গ্রাহকের অপারেটর বদল হচ্ছে এবং তার তথ্য নতুন একটি অপারেটরে যাচ্ছে, তাই গ্রাহককে এমএনপির জন্য নতুন সিম তুলতে হচ্ছে। গ্রাহক যে অপারেটরে যেতে চান, তাদের গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে গিয়ে ফি দিয়ে সিম তুলতে হবে। সিম পেতে একজন গ্রাহকের সর্বোচ্চ ৫ মিনিট সময় লাগবে এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তা সক্রিয় হবে। এ সেবার নিয়ম অনুযায়ী, পুনরায় অপারেটর পরিবর্তন করতে হলে গ্রাহককে অপেক্ষা করতে হবে ৯০ দিন। এমএনপি চালুর ফলে অপারেটররা তাদের সেবার মান উন্নত করতে আরও বেশি সচেষ্ট হবে এবং বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে বলে সরকার আশা করছে।
এমএনপি সেবার লাইসেন্সধারী কোম্পানি ইনফোজিলিয়ন বিডি-টেলিটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাবরুর হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ১৫ কোটি গ্রাহকের জন্য এ সেবা শুরু করতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। গ্রাহকরা আজ থেকে পোর্ট করতে পারছে।
কোনো গ্রাহক অপারেটর বদলালে তার অব্যবহৃত টকটাইম বা ডেটার কী হবে জানতে চাইলে বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিস বিভাগের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, আগের অপারেটরের অব্যবহৃত ব্যালেন্স নতুন অপারেটরে পাওয়া যাবে না। তবে ওই টাকা দুই বছর পর্যন্ত আগের অপরেটরে জমা রাখার নিয়ম করা হচ্ছে। দুই বছরের মধ্যে যদি কেউ আগের অপারেটরে ফিরে যান, তাহলে তিনি ওই ব্যালেন্স ব্যবহার করতে পারবেন। তা না হলে তা সরকারি কোষাগারে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা হবে। আর অপারেটর বদলালে অব্যবহৃত ডেটা আর ব্যবহারের সুযোগ থাকবে না। সেজন্য ব্যালেন্স শেষ করে তবেই অপারেটর বদল করার জন্য গ্রাহকদের পরামর্শ দেন বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

কোনো গ্রাহকের বিল বকেয়া থাকলে কী হবে জানতে চাইলে ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মোস্তফা কামাল বলেন, অপারেটর পরিবর্তনের সময় গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে সব যাচাই করা হবে, বকেয়া বিল পরিশোধ করেই অন্য অপারেটরে যেতে হবে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিটিআরসি কমিশনার রেজাউল কাদের, কমিশনার আমিনুল হাসান, ইনফোজিলিয়ন বিডি-টেলিটেকের সিইও মোহাম্মদ জুলফিকার প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মোবাইল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ