Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

তফসিলের সময় ঘোষণা মন্ত্রীর বিধি লঙ্ঘন কি না, দেখবে ইসি

নিজ কার্যালয়ে কবিতা খানম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা দেখা হবে।
গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে নিজ কার্যালয়ে কবিতা খানম এ কথা বলেন। মন্ত্রীর তফসিলের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা আচরণবিধির লঙ্ঘন কি না, জানতে চাইলে কবিতা খানম বলেন, ‹এখনো তফসিল ঘোষণা হয়নি। এখনই আচরণবিধির মধ্যে যেতে পারবে না। তফসিল ঘোষণার পরেই কমিশন আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে কি না সে বিষয়টা দেখবে। তার আগে দেখবে না। তিনি বলেন, ‹তফসিলের তারিখ ঘোষণার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাকে মাথায় রেখেই কিন্তু তফসিলের তারিখ ঘোষণা করবে। এ ধরনের আলোচনা এখনো কমিশনে হয়নি। কমিশন সভায় তারিখ নির্ধারণ করা হবে। সভার পরে ঘোষণা করা হবে। সেটা যেহেতু হয় নাই, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলাপ করে এই কথা বলা হয়েছে বলে আমি মনে করি না।›
রোববার সচিবালয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হতে পারে।এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে তোপের মুখে পড়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নির্বাচন হতে পারে আগামী ২৭ ডিসেম্বর। সেই হিসেবে ২৫ সেপ্টেম্বরের আগে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হতে পারে।
অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেছিলেন, অর্থমন্ত্রী ভুল করেছেন। আমাদের সাথে এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। উনার এ কথা বলা উচিৎ হয়নি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরবিহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এর আগে সিটি নির্বাচনেও প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে আইনি কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। জাতীয় নির্বাচনে কমিশন কতটুকু সক্ষম হবে ব্যবস্থা নিতে? এমন প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, ‹এটা ঠিক না। নোটিশে আসার পর আমরা সেটা তদন্ত করি। তদন্ত করে আমরা যদি সত্যতা খুঁজে পাই, তখন আমরা জরিমানা করি। অনেক জরিমানা করেছি বিভিন্ন জায়গায়। জাতীয় নির্বাচনে কতটুকু আইন প্রয়োগ করতে পারবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‹আইন প্রয়োগ তো অবশ্যই হবে। আইন মানার বাধ্যবাধকতা যেমন আছে, যারা আইন মানার জন্য আছেন। তেমনি কমিশনও চায়, তার আইনটাকে সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করতে।›
রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সব ঠিক থাকলে এই নির্বাচন আপনাদেরকেই করতে হবে। সেক্ষেত্রে বাড়তি কোনো ব্যবস্থার কথা কী কমিশন ভাবছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কমিশনের আলোচনায় বাড়তি ব্যবস্থার কোনো বিষয় আসেনি। আরপিওতে নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহারের বিষয়টি ছিল। এখন তার সঙ্গে বদলির বিষয়টি আমরা প্রস্তাব রেখেছি। আমরা মনে করি, প্রত্যাহারের সঙ্গে বদলির ক্ষমতা থাকলে জবাবদিহিতাটা আরো নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বর্তমান কাঠামোতে কমিশন নিজেকে যথেষ্ট শক্তিশালী মনে করে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে কবিতা খানম বলেন, অবশ্যই। সবগুলো আইনই অত্যন্ত শক্তিশালী। কমিশনও এগুলো শক্তিশালীভাবে প্রয়োগে বিশ্বাসী। অনেক শক্ত শক্ত আইন করছি কিন্তু, সঠিকভাবে প্রয়োগ করছি না, তখন আইন যতই শক্তিশালী হোক কেন, ফল পাওয়া যায় না। বিতর্কের মধ্যেই একসঙ্গে দেড় লাখ ইভিএম কেনার বিষয়ে তিনি বলেন, ইভিএম সব সময় লাগছে। শুধু সংসদ নির্বাচন নয়, সিটি-উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন রয়েছে। প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। আমাদের আস্থার জায়গাটা তৈরি হলে, এটি ব্যবহার করা হবে। ইভিএম মেশিনটা যত ব্যবহার হবে, তত উন্নত হতে থাকবে। দুর্নীতি-জালিয়াতি কমে আসবে। যেসব ত্রুটি আসবে, সেগুলো ঠিক করে আমরা আরো আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হব।
কবিতা খানম জানান, আরপিওতে ১০ থেকে ১২টি সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে। অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার একটা বিষয় আছে। ঋণখেলাপিদের সাত দিন আগে যেটা ছিল, এখন সেটা মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগের দিন পর্যন্ত প্রস্তাব করা হয়েছে। ইভিএম আইনি স্বীকৃতি পেলে ম্যানুয়েলে আইনের অপব্যবহারের ফলে যে শাস্তির বিধান ছিল, ইভিএমের ক্ষেত্রেও তা একই রাখা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ