Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডিআইজি মিজানকে দুদকে হাজির হতে হচ্ছে কাল

অবৈধ সম্পদের তদন্তে:

মালেক মল্লিক: | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্মার কোটি টাকার বেশি অবৈধ সম্পদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হাজির হতে হচ্ছে কাল (রোববার)। এবারই প্রথমবারের মতো তার স্ত্রীকেও দুদকে তলবে হাজির হতে হচ্ছে। তাদের দুজনের আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ কোটি টাকারও বেশি সম্পদের খোঁজ পায় দুদক। সংস্থার প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। এরপর তাদের সম্পদের তদন্তে নামে রাষ্ট্রের দুর্নীতিবিরোধী একমাত্র সংস্থা দুদক। প্রথমে একবার মিজানকে তলব করে দুদক। সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো নোটিশে তাদেরকে এই দিন হাজির থাকতে বলা হয়েছে। দুদকের উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীর সই করা নোটিশ তাদের বাসার ঠিকানায় পাঠানো হয় বলে দুদকের সূত্র জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য ইনকিলাবকে বলেন, (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে আগেও একবার তলব করা হয়েছিল। ফের চিঠি পাঠানো হলে নির্ধারিত দিনে অবশ্যই উনাকে হাজির থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন, দুদক এখন অনুসন্ধানের প্রয়োজনে অনেকেই তলব করছেন। এর আগের চলতি বছরের ৩ মে অবৈধ সম্পদসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে প্রথম দফায় প্রায় ৭ ঘণ্টা ডিআইজি মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ডিআইজি মিজান বলেন, আমার যে সম্পদ আছে, এ বিষয়ে দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছেন। ট্যাক্স ফাইলের বাইরে আমার কোনো সম্পদ নেই। বাকিটুকু তদন্ত কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আত্মীয়-স্বজনদের নামে সম্পদ আছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আবারও বলি, যে যে জায়গায় সম্পদ আছে বা আমার আত্মীয়-স্বজনের নামে যে সম্পদ আছে তা আমার ট্যাক্স ফাইলে আছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, মিজানুর রহমান আয়কর নথিতে তার নামে স্থাবর ও অস্থাবর মোট ১ কোটি ৫৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৬৩ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন। তবে দুদকের অনুসন্ধানে আয়কর নথির বাইরে ৪৬ লাখ ৩২ হাজার ১৯১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের খোঁজ মিলেছে। অন্যদিকে, সোহেলিয়া আনার রত্মা আয়কর নথিতে স্থাবর ও অস্থাবর মোট ৮৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯৩৫ টাকার সম্পদের তথ্য দিয়েছেন। অথচ আয়ের উৎস পাওয়া যায় মাত্র ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৮৩ টাকা। অর্থাৎ দুদকের অনুসন্ধানে আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৭২ লাখ ৯০ হাজার ৯৫২ টাকার সম্পদ রয়েছে বলে দুদক মনে করে। এছাড়াও মিজানুর রহমানের ছোট ভাইয়ের নামে বেইলি রোডে বেইলি রোজ নামের ২ হাজার ৪০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ও ভাগনে মাহামুদুল হাসানের নামে চাকরিতে প্রবেশের আগেই ঢাকার পাইওনিয়ার রোডে ১ হাজার ৯১৯ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, ডিআইজি মিজান তাদের নামে এসব সম্পদ করেছেন।
এছাড়াও দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে ডিআইজি মিজানের নামে ৪৬ লাখ ৩২ হাজার ১৯১ টাকার এবং তার স্ত্রীর নামে ৭২ লাখ ৯০ হাজার ৯৫২ টাকার অসঙ্গতিপূর্ণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। আর মিজানুর রহমানের ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান স্বপন ও ভাগনে পুলিশের এসআই মাহামুদুল হাসানের নামেও স্থাবর ও অস্থাবর ব্যাপক সম্পদের খোঁজ পাওয়া যায়। দুদকের ধারণা, এসব সম্পদের প্রকৃত মালিক হচ্ছেন ডিআইজি মিজান। এ কারণেই ইতোমধ্যে দুদক আইনের ২৬(১) ধারায় মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রীর নামে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করে সংস্থাটি।
দুদক জানায়, পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে মিজানুর রহমান তদবির, নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। চাকরিজীবনে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নানা উপায়ে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার নামে-বেনামে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি রয়েছে। একাধিক ব্যাংক হিসাবে রয়েছে বিপুল অর্থ ও ফিক্সড ডিপোজিট। এমনকি দেশের বাইরে অর্থ পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
নামে-বেনামে ডিআইজি মিজানুর রহমানের শত কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে, এ অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীকে ১০ ফেব্রুয়ারি অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগদেয়া হয়। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুদক

২৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৪ জানুয়ারি, ২০২৩
২৮ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ