বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঘর নেই, বাড়ী নেই, নেই স্থায়ী ঠিকানা। জন্ম দেশে, তবুও নেই নাগরিকত্ব। ভোটার নয়, জন্ম নিবন্ধন নেই, জাতীয় পরিচয় পত্রের কার্ডও নেই ফলে সরকারের দেয়া সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ঠিকানাহীন ছকিনা বেওয়া (৭৫)। পড়ন্ত বয়সে ভিক্ষা করেই দিন কাটে। আপনজন বলতে কেউ নেই তার। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের পাতিলাপুর গ্রামের ছকিনা বেওয়ার জীবন চলে অন্যের দয়ায়।
জানা গেছে, প্রায় ৪৭ বছর ধরে কাটছে তার নাগরিকত্বহীন জীবন। ফলে তার ভাগ্যে জোটে না সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা। আজন্ম ভিক্ষা করে দেশে থেকেও পরবাসীর মত জীবন কাটে তার। এলাকার মানুষ তাইজলের মা হিসাবে তাকে চেনে। বয়সের ভারে তার চোখের দৃষ্টিও কমে গেছে। কানেও কম শোনেন। তবু পেটের দায়ে অন্যের বাড়ী বাড়ী ঘুরে খাবার যোগাড় করতে হয়।
পাখিরও একটা ঠিকানা থাকে কিন্ত ছকিনার কোন ঠিকানা নাই। তাই যেখানে রাত সেখানেই কাত হয়ে পড়েন। এ ভাবে কাটছে স্বজনহারা ছকিনার জীবন। মৃত্যুর পর কবরের ঠিকানা ও অনিশ্চিত। ছকিনার আক্ষেপ মোর ভোট নেয় না, মোক ইলিপ দেয় না, মোর কি হইবে ?। মুই কতজনক ভিক্ষা দিছোং, এখন মুই ভিক্ষা করং বাহে। মোর দিকি কেউ চোখ তুলি দ্যাখে না বাবা।
বর্তমানে তিনি থেতরাই পাতিলাপুর গ্রামের হত দরিদ্র ছাইফুলের বাড়ীতে কিছুদিন ধরে তার বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি জানান, তার বাবার বাড়ী ছিল গোড়াই পিয়ার গ্রামে। বাবা দুখু মিয়া তার বিয়ে দেন উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের রাজারাম গ্রামের দবির উদ্দিনের সাথে। একটি পাগল পুত্র সন্তান ছিল। কিছু দিন পর তার এক মাত্র পাগল ছেলে তাইজুল ও মারা যায়। সেই থেকে জীবন বাচাঁতে ভিক্ষা পেশায় নামেন, দিনভর ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করে যেখানে রাত হয় সেখানেই রাত্রী যাপন করেন তিনি। বর্তমানে তার শরীর চলে না হাটতে ও পারে না। তবু পেটের তাগিদে ওই গ্রাম ও থেতরাই বাজারে ভিক্ষা করে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে খেয়ে না খেয়ে জীবন কাটে ছকিনার।
তিনি আরও বলেন, চেয়ারম্যান মেম্বারদের হাত পা ধরে ও কোন দিন রিলিফ পাননি। শুধু ভোটার ও নাগরিক নয় বলে। কিন্ত জনপ্রতিনিধিরা ছকিনাকে নাগরিক ও ভোটার করার কোন উদ্দ্যোগ নেয়নি। ফলে নাগরিকত্বহীন ছকিনার জীবন কাটে রাষ্ট্রের সকল সুযোগ সুবিধা ছাড়াই। বর্তমানে ছকিনার আপন জন বলতেই কেউ নেই।
ওই গ্রামের শাহ আলম মাষ্টার (৬৫), নুরুন্নবী বাবু (৫০), জলিল ব্যাপারী (৭০), মুকুল মাষ্টার (৭২) জানান, ছকিনা বেওয়াকে ছোট বেলা থেকে ভিক্ষা করতে এবং এর ওর বাড়ীতে থাকতে দেখেছেন। সে খুব অসহায়। কিন্ত তার নাগরিকত্ব নেই তা তাদের জানা নেই। থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী জানান, ছকিনা বেওয়ার ঘটনাটি শুনেছি। নতুন করে ভোটার তালিকা হলে তার নাম দেয়া হবে। এরপর থেকে সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা আসলে তাকে সহায়তা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি যদি ওই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হন তাহলে তাকে নাগরিকত্ব প্রদান করে সকল প্রকার সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।