Inqilab Logo

রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

এবার মরিনহোয় টালমাটাল ইউনাইটেড

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

২০১০ সালে ইন্টার মিলানকে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ উপহার দেয়ার পর রিয়াল মাদ্রিদ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয় হোসে মরিনহোকে। ইন্টারের চুক্তি উপেক্ষা করে তখন পর্তুগিজ কোচ দম্ভভরে বলেছিলেন, ‘যদি রিয়াল মাদ্রিদে কোচিং না করাও তাহলে কোচিং ক্যারিয়ারে একটা ফাঁকা রয়ে যাবে।’ সেই বছরই সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে যোগ দেন স্বঘোষিত ‘স্পেশাল ওয়ান’।

রিয়ালের ওই চেয়ারটা যেন ছিল মোরিনহোর কাছে রোলার কোস্টারে বেল্টবদ্ধ চেয়ারের মত। এর পর ক্লাব বদলেছে কিন্তু রোলার কোস্টারের মত উত্থান-পতন থামেনি। অবশ্য কোচদের জীবনটাই এমন। কিন্তু মরিনহোর ক্ষত্রে ব্যাপারটা যেন আরো সত্যি। রিয়ালে তিন বছরের অভিজ্ঞতা তার মোটেও সুখকর ছিল না। উল্টো তার আচরণে ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে রিয়াল তাকে ছাঁটাই করে। ২০১৩ সালের ঐ বছরই দ্বিতীয় বারের মত আসেন প্রিমিয়ার লিগ দল চেলসির দায়ীত্বে। এসে লিগ শিরোপাও জেতান। কিন্তু পরের মৌসুমে আবারো সেই খেলোয়াড়দের সঙ্গে বনিবনা সমস্যার ফলস্বরুপ মৌসুমের মাঝ সময়ে তাকে পদচ্যূত হতে হয়। এরপর এক বছর ছিলেন বিশ্রামে। ওদিকে প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তখনও অ্যালেক্স ফার্গুসনকে হারানোর ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি। খুঁজছে মনের মত কোচ। ওল্ড ট্রাফোর্ডের দলটি শেষ পর্যন্ত ‘মনের মত’ কোচ পেয়ে যায়। ২০১৬ সালে তিন বছরের চূক্তি করে ফেলে মরিনহোর সঙ্গে। চূক্তির মেয়াদ ২০২০ সাল পর্যন্ত বাড়ানোরও একটা রাস্তা সেখানে রাখা হয়।

এতকিছু বলার কারণ হলো, ওল্ড ট্রাফোর্ডেও কি ভালো আছেন মরিনহো? এখানেও কি চূক্তির মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবেন? অবস্থা দৃষ্টে কিন্তু তা মনে হয় না। গত মৌসুম থেকেই শিষ্যদের সঙ্গে তার বনিবনার বিষয়টি বার বার খবরের শিরোনাম হয়েছে। বিশেষ করে দলের প্রধান দুই তারকা রোমেলু লুকাকু ও পল পগবার সঙ্গে। যদিও মরিনহো বার বার বলছেন, তাদের সঙ্গে ‘কোন সমস্যা নেই’।

প্রিমিয়ার লিগে দল ভালো অবস্থানে নেই। ৬ ম্যাচে জয় মাত্র তিনটি, রেড ডেভিল খ্যাত দলটির অবস্থান পয়েন্ট তালিকার সাতে। এরই মাঝে পরশু দ্বিতীয় সারির দল ডার্বি কাউন্টির কাছে হেরে লিগ কাপ থেকে বিদায় নেয়ার পর আবারো প্রকাশ্যে এসেছে পগবা-মরিনহো বিষয়টি। যেখানে এবারো মরিনহো দাবি করেছেন পগবার সঙ্গে তার কোন ‘ঝামেলা নেই’। ৫৫ বছর বয়সী এও বলেছেন, ‘পগবা আর দ্বিতীয় পছন্দের অধিনায়ক থাকছে না’। এ ব্যাপারে তার যুক্তি, ‘একমাত্র সত্যিটা হলো যে আমি তার ব্যাপারে দ্বিতীয় অধিনায়ক না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখানে কোন বিতর্ক নেই, কোন সমস্যাও নেই। আমি দলের ম্যানেজার এবং আমি এই সিদ্ধান্ত নিতে পারি।’ উল্লেখ্য, দলটির নিয়মিত অধিনায়ক ইকুয়েডর ডিফেন্ডার অ্যান্তোনিও ভ্যালেন্সিয়া। স্কাই স্পোর্টসকে তিনি আরো বলেন, ‘কোন বিতর্ক নেই, আদৌ কোন সমস্যা নেই, এটা কেবল একটা সিদ্ধান্ত যা আমি ব্যাখ্যা করতে পারব না।’ অবশ্য মরিনহো ব্যাখ্যা করতে না পারলেও ব্যাপারটা মুটামুটি সবার জানা। পগবা নাকি তিন-তিনবার মরিনহোকে বলেছেন তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ত্যাগ করে বার্সেলোনায় যোগ দিতে চান।

পগবাকে অবশ্য পরশু খেলানো হয়নি। দর্শক সারিতে বসেই নির্ধারিত সময়ে ২-২ ড্র করার পর টাইব্রেকারে ডার্বির কাছে দলের ৮-৭ গোলের রোমাঞ্চকর হার দেখেন ফরাসি মিডফিল্ডার। সেটাও ঘরের মাঠে বসে। ম্যাচ শেষে মরিনহো এদিনও শিষ্যদের উপর পরাজয়ের দায় চাপিয়েছেন।

সব মিলিয়ে মরিনহোর উপর ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে পড়েছে ইউনাইটেড ভক্তরা। মাঠে তার নামে দুয়ো দিতেও শোনা যাচ্ছে। গনমাধ্যমেও তাকে নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। তবে এতকিছুর পরও যে তাকে ছাঁটাই করা হবে না সেটা ভালোভাবেই জানেন মরিনহো। কারণ? তার কথাতেই শুনুন-‘আপনাদের কোন ধারণা আছে আমাকে ছাঁটাই করতে হলে কি পরিমান অর্থদন্ডি দিতে হবে ক্লাবকে?’!



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউনাইটেড

৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ