পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নদ-নদীবহুল দেশের দক্ষিণাঞ্চলে মেঘনা, তেঁতুলিয়া, বলেশ্বর, সুগন্ধা, সন্ধ্যা, বিষখালী ও পায়রাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর ভাঙনে একের পর এক জনপদ ও সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাসমুহ বিলীন হলেও নদী শাসন কার্যক্রম এখনো আশাব্যঞ্জক নয়। ভাঙনরোধ ও নদী শাসন কার্যক্রম বাস্তবায়নে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ৩১টি প্রকল্প মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা কমিশনে পেশ করা হলেও নানা ধরনের আইনী জটিলতায় (লাল ফিতায়) তা আটকে আছে। কিন্তু নদীর প্রবাহ থেমে নেই। হাজার-হাজার কোটি টাকার সম্পদ চলে যাচ্ছে নদী গর্ভে।
অর্থের চেয়েও বিভিন্ন প্রকল্প অনুমোদনে কালক্ষেপন ও বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতায় পরিস্থিতি আরো ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে। সুগন্ধা নদী ভাঙন থেকে বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের দোয়ারিকায় ‘বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু’ ও এর সংযোগ সড়ক রক্ষায় প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদন পায়নি। প্রায় ৮ বছর আগে ১১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন না হওয়ায় এখন ভাঙন রোধে প্রয়োজন হবে প্রায় সোয়া ২শ’ কোটি টাকা। অতি দ্রুত এই কোটি টাকা বরাদ্দ না পেলে ওই সেতুর বরিশাল প্রান্তের সংযোগ সড়ক সুগন্ধার হাত থেকে রক্ষা করাই কঠিন হয়ে যাবে।
এদিকে সংযোগ সড়ক রক্ষায় একটি জরুরি প্রস্তাবনা সড়ক অধিদপ্তরে জমা দেয়া হলেও অর্থের বরাদ্দ মেলেনি এখনো। সেতু সংযোগ সড়ক রক্ষায় দীর্ঘ মেয়াদী প্রকল্প বাস্তবায়নে সোয়া ২শ’ কোটি টাকার ডিপিপি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সেখান থেকে চূড়ান্ত অনুমোদনে তা পরিকল্পনা কমিশন হয়ে একনেকে যাবে। এভাবে অনেক নদ-নদী ভাঙন রোধ প্রকল্প বাস্তবায়নে কালক্ষেপন টাকার অঙ্কও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটাকে সাগরের ঢেউ ও স্রোতের হাত থেকে রক্ষায় একটি প্রকল্প গত প্রায় ৫ বছর ধরে শুধু নানা পর্যায়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। অথচ এ প্রকল্পটির ওপর পুরো পর্যটন কেন্দ্রের ভবিষ্যত নির্ভরশীল। ২২২ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকত রক্ষা ও উন্নয়ন প্রকল্প-প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনের বিবেচনাধীন। খোদ পানি সম্পদ মন্ত্রীও কুয়াকাটা সফর করে ভাঙন রোধে প্রকল্প বাস্তবায়নে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেছিলেন। কিন্তু তার পরও কেটে গেছে আরো দেড় বছর।
বরিশাল ও ভোলা জেলার বিভিন্ন স্থানে ৮টি নদী শাসন প্রকল্প একনেকের অনুমোদন লাভ করায় কয়েকটির কাজ শুরু হয়েছে। আবার কয়েকটি প্রকল্প ‘উন্মুক্ত দরপত্র’র পরিবর্তে ‘সীমিত ক্রয় প্রক্রিয়া’য় সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রায় ২৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা ভাঙন থেকে ভোলা সদরের রাজাপুর ও পূর্ব ইলিশা ইউনিয়ন রক্ষায় একটি প্রকল্পের প্রায় ৬৫ ভাগ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
মেঘনা ভাঙন থেকে দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন উপজেলার প্রায় ৯.৬০ কিলোমিটার নদী তীর প্রতিরক্ষা কাজসহ ৭৮১ মিটার এলাকা ড্রেজিং-এর লক্ষ্যে ৫৫১ কোটি টাকার অপর একটি প্রকল্পের কাজও ২৫ ভাগ শেষ হয়েছে। তজুমদ্দিন উপজেলার সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকায় নদী তীর রক্ষা কাজসহ দেড় কিলোমিটার এলাকায় ড্রেজিং কাজও চলছে ৪৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে। কাজের অগ্রগতি ৩৫ ভাগ।
চরফ্যাশন পৌর শহরকে মেঘনা ভাঙন থেকে রক্ষায় ২১০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প এখন বাস্তবায়নাধীন। প্রকল্পের আওতায় ৩ কিলোমিটার এলাকায় নদী তীর রক্ষা কাজ ছাড়াও এক কিলোমিটার এলাকায় ড্রেজিং করে মেঘনার গতিপথ পরিবর্তন করে ভাঙন এড়ানো সম্ভব হবে।
দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদীর ভাঙন থেকে বিশাল জনপদ ও যোগাযোগ অবকাঠামো এবং সরকারি-বেসরকারি সম্পদ রক্ষায় আরো ৩০টি প্রকল্প-প্রস্তাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা কমিশনে বিবেচনার পর্যায়ে রয়েছে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে বরিশাল জেলার ৮টি স্থানে নদী ভাঙন রোধে ৮৮৭ কোটি টাকা, পটুয়াখালীর আরো ৩টি নদী ভাঙ্গন রোধ প্রকল্পের জন্য ৬শ’ কোটি টাকা, ভোলায় মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীর ভাঙন থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জনপদ রক্ষায় ৮টি প্রকল্পের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকা, ঝালকাঠীর সুগন্ধা ও কালিজিরা নদীর ভাঙন থেকে নৌ বাহিনীর আঞ্চলিক বেজ স্টেশনসহ ১৪টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ২শ’ কোটি টাকা এবং বরগুনার ৩টি প্রকল্প বাস্তায়নে ৪২৭ কোটি টাকার প্রকল্প-প্রস্তাবনা। এছাড়াও পিরোজপুর জেলার দুটি প্রকল্পের জন্যও ৫৪ কোটি টাকা প্রয়াজন।
সীমান্তের উজানের ৫৪টি নদ-নদীসহ সারাদেশের নদীসমূহ এবং উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের বৃষ্টির পানি মেঘনা, তেতুলিয়া, বলেশ্বর, বিষখালী ও পায়রাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বড় বড় নদীগুলোই সাগরে নিয়ে যায়। ফলে এ অঞ্চলের নদ-নদীর ভাটিমুখী স্রোতের সাথে ভাঙনের তীব্রতাও ভয়াবহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।