পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গণমাধ্যমের একাংশ আওয়ামী লীগের প্রতি অবিচার করছে’- গতকাল দেয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আমরা মনে করি- অবিচার করছে না, বরং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর গুন্ডামী ও গোয়েন্দাগিরি সত্বেও গণমাধ্যমের বিরাট অংশ সাহসের সাথে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছে। তবে ক্ষুদ্র একটি অংশ যে পা চাটছে ও সুবিধার ঝোল খাচ্ছে তা জনগণ দেখছে।’
তিনি বলেন, ‘সংবাদ মাধ্যমের গলায় দঁড়ি ঝোলাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে ওবায়দুল কাদেরদের তৃপ্তি মিটছে না, তাই এখন গোটা গণমাধ্যমকেই পকেটে ঢোকানোর চেষ্টায় কিছুটা বেগ পাওয়াতে আফসোস করে নানা কথাবার্তা বলছেন।’
সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সুশাসনের বোধ কখনোই ছিল না। নানা ফন্দিফিকির করে ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাস বিতরণের কেন্দ্রে পরিণত হয়। চাঁদাবাজী, দখল, টেন্ডার সন্ত্রাস, লুটপাট, নির্যাতন-অত্যাচারের কাহিনী প্রতিদিন সংবাদপত্রের পাতায় জায়গা দখল করে থাকে। আওয়ামী রাজনীতি কখনোই দলীয় সংকীর্ণতার বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। সেজন্য আওয়ামী ক্ষমতাসীনরা ব্যাংক-বীমা, শেয়ার বাজার, বিদ্যূৎ, জ্ববালানী, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেক্টর সবই আত্মসাৎ করেছে। এখন বেওয়ারিশ লাশ দাফনের সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম এর উপরেও এদের নেক নজর পড়েছে। যুবলীগের মহানগরীর নেতারা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম এর উপরে চড়াও হয়েছে বিপুল অংকের চাঁদা আদায়ের জন্য। এই ঘটনা জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। আর কিছুদিন পর হয়তো আওয়ামী সন্ত্রাসীরা লাশের কাছ থেকেও চাঁদা চাইবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার প্রতি সরকারের আচরণের ঘটনাগুলো প্রকাশ হওয়ায় দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী বিমূঢ় বিস্ময়ে হতবাক হয়েছে। দেশের প্রধান বিচারপতিকে যেভাবে সরকার প্রধান থেকে শুরু করে অন্যান্য মন্ত্রীরা হুমকি, গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেছেন তাতে আওয়ামী রাজনীতির বিকৃত সংস্কৃতি আবারও জনগণের কাছে সুষ্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।’
তিনি বলেন, ‘কিভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আগ্রাসন চালিয়ে প্রধান বিচারপতিকে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়। মানুষের শেষ আশয়স্থলকেও দখলে নিয়েছেন শেখ হাসিনা বলে জনগণ বিশ্বাস করে। দেশ এখন আওয়ামী কু-রাজনীতির ঘোঁট পাকানো অবস্থার মধ্যে নিপতিত হয়েছে। এখন সরকারের ইচ্ছা অনিচ্ছা অনুযায়ী আইনি প্রক্রিয়া ও বিচারিক কার্যক্রম চলে। ২১ আগস্টের বোমা হামলা মামলা এটির একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।’
রিজভী বলেন, আমরা এ বিষয়ে ইতোপূর্বে বেশ কিছু কথা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করেছি। কাহার আকন্দের দাখিলকৃত চার্জশিটের বর্ণনায় বলা হয়েছে যে, ২০ আগস্ট ২০০৪ হামলাকারী আসামিরা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর বাসা হতে গ্রেনেডগুলো সংগ্রহ করে তা পশ্চিম মেরুল বাড্ডায় মুফতি হান্নানের অফিসে নিয়ে আসে। অতঃপর সেখানে অপারেশনের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে চূড়ান্ত মিটিং করে। পরদিন ২১ আগস্ট ২০০৪ সকালেই তারা অপারেশনস্থলের উদ্দেশে রওয়ানা হয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সভাস্থলে পৌঁছে যায়। দেশী-বিদেশী (এফবিআই) তদন্ত সংস্থা তথা এমন অপরাধ সম্পর্কিত সামরিক বিশেষজ্ঞরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে মন্তব্য করেছিলেন যে, এমন নিখুঁত টাইমিং ও টার্গেট (ট্রাক-মঞ্চ পরিহার করে পরিচালিত) সফল হামলা অবশ্যই এ বিষয়ে প্রফেশনাল লোক তথা যথাযথ পূর্ব রিহার্সেল ছাড়া এককথায় অসম্ভব। সংগত কারণেই যদি বিশেষজ্ঞদের এই মতামত আমলে নেয়া হয় তাহলে বিষয়টা কি দাঁড়ায় ?দাঁড়ায় এটাই যে, সভাস্থলের নিরাপত্তা বিধানকারী পুলিশ না জানলেও পূর্ব রিহার্সেল করার মতো পর্যাপ্ত সময় আগে থেকেই হামলাকারীরা জানতো যে. মিটিংটা মুক্তাঙ্গনে নয়, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পার্টি অফিসের সামনেই হবে। সেইভাবেই তারা নিখুঁত প্রস্তুতি, অতঃপর কার্য সম্পন্ন করে।
রিজভী আরও বলেন, ‘ঘটনা সংঘটনের পর শেখ হাসিনার স্থান ত্যাগ এবং তৎপরবর্তী প্রায় ঘণ্টাকালব্যাপী হতাহতদের উদ্ধারপূর্বক হাসপাতালে প্রেরণ-এসময়কালে একমাত্র গ্রেনেড হামলা ছাড়া কোনো গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে, এমন কিছু সেসময়ের তদন্তে, জরুরি সরকারের আমলে তদন্তে, এমনকি ‘রঙতুলি দিয়ে সাজানো-রাঙানো’ এই কাহারীও তদন্তেও কোন কর্মকর্তা দেখতে পাননি। টিয়ার শেল বা রাবার বুলেটের যে ফায়ার করেছিল তার সবই হয়েছিল হতাহতদের স্থানান্তরের পর যখন উত্তেজিত নেতাকর্মীরা গাড়ি বা বিভিন্ন ভবনসমূহ ভাঙচুর তথা অগ্নিসংযোগ শুরু করেছিল তারপর থেকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- শেখ হাসিনার প্রাক্তন দেহরক্ষী প্রাক্তন সেনা হাবিলদার মাহবুব কার গুলিতে মারা গেলেন? সেটা নিরুপণে এসপি কাহারের কোনো আগ্রহ কিংবা তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়নি কেন?’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, আব্দুল আউয়াল খান, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।