২০ দিন ধরে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ রুটের ফেরী কলমিলতা বন্ধ। ইঞ্জিন বিকল হয়ে ঘাটে পড়ে আছে ফেরীটি। এতে ওই রুটে ফেরী সংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিদিন ঘাটে আটকা পড়ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার বাস-ট্রাকসহ শত-শত যানবাহন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন বাস যাত্রীরা, নষ্ট হয় পন্যবাহী ট্রাকের কাঁচামাল। এমন দুর্ভোগের চিত্র লক্ষ্মীপুর মজুচৌরীরহাট ফেরীঘাটে দেখা গেলেও কর্তৃপক্ষ বিকল ফেরীটি মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ রোবার এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফেরীটি চালু হয়নি।
লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ রুটে নির্ধারিত তিনটি ফেরী কৃষাণী, কনকচাঁপা ও কলমিলতা। এরমধ্যে গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে কলমিলতা ফেরীটি বিকল হয়ে আছে। গত ২০দিন থেকে ওই রুটে চলাচল করছে দু’টি ফেরী। ফেরী সংকটের কারণে যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারছে না যানবাহন। এতেই ভোগান্তি স্বীকার হচ্ছে সাধারন মানুষ।
সরজমিনে লক্ষ্মীপুর-মজুচৌধুরীর হাট ফেরী ঘাটে গিয়ে দেখা যায়। ফেরী কৃষাণী ৪টি ট্রাক, একটি লাশবাহী গাড়ি ও পিকআপ-মাইক্রোবাসসহ ৩৪টি যানবাহন নিয়ে ভোলা উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে। তখনো ঘাটে ১২০টি যানবাহন যাওয়ার অপেক্ষায় লাইনে রয়েছে। বিকেল ৪ টায় ভোলা থেকে ফেরী কনকচাঁপা ফিরলে লক্ষ্মীপুরের ঘাটে লাইনে থাকা ট্রাক উঠবে ওই ফেরীতে। ততক্ষণে যানবাহনের লাইন আরও দীর্ঘ হবে। এতে বাড়তে আরও ভোগান্তি।
জানা গেছে, মুমুর্ষ রোগী ও লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স লক্ষ্মীপুরের ঘাটে এসে পৌঁছায়। ফেরীর অপেক্ষা করতে করতে ১/২দিন লেগে যায়। ততক্ষণে মুমুর্ষ রোগী মারা যায় আর মরদেহ পঁচে র্দুগন্ধ শুরু হয়।
ফেরীতে উঠার অপেক্ষায় থাকা ট্রাক চালক মাইন উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম থেকে এসে দুইদিন ধরে ভোলা যেতে অপেক্ষা করছি। কিন্তু ফেরী সংকটের কারণে গন্তব্যে যেতে পারছিনা। এতে করে ট্রাকে থাকা কাঁচামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফেরী কলমিলতা সচল থাকলে এমন দুর্ভোগে পড়তে হতো না। কিন্তু বিকল হয়ে পড়ে থাকা ফেরী মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তারা।
বাসের যাত্রীরা বলেন, নদীর দুই পাড়ে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষায় থেকে ফেরী সংকটের কারণে ভোগান্তিতে পড়ে থাকতে হয়। দ্রুত বিকল ফেরীটি মেরামত করলে কিছুটা হলেও কষ্ট লাগব হবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীর হাট ফেরীঘাটের প্রান্তিক সহাকরী রেজাউল করিম রাজু বলেন, লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ রুটে তিনটি ফেরী দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হতো। সম্প্রতি যান্ত্রিক ত্রুটিতে ফেরী কলমিলতা চলা বন্ধ রয়েছে। যে কারণে যথাসময়ে যানবাহন পরাপার সম্ভব হচ্ছে না। এতে ঘাটে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়েছে। বিষয়টি কৃর্তপক্ষকে জানানো হয়েছে।