পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নদী থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলনে বিপন্ন হতে চলছে সিলেটের প্রধান নদী সুরমা-কুশিয়ারাসহ শাখা নদ-নদীগুলো। প্রতিবাদ-প্রতিরোধে থামাতে পারছে না বালুখেকো সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই বালু লুট উৎসবে বালুখেকো সিন্ডিকেট বেপরোয়া। নগদ অর্থের লোভে, বৃহত্তর স্বার্থ উপেক্ষিত হয়ে চরম হুমকির মুখে নদী-তীরবর্তী জনপদ।
একই সাথে জীবন-জীবিকা, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও প্রাণ-প্রকৃতি এখন অস্তিত্ব সংকটে। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনে সিলেট বিভাগের সুরমা-কুশিয়ারা বিধৌত শত নদ-নদীর ধ্বংস অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে চলছে। বালি ও পাথর উত্তোলনের পাশাপাশি সম্প্রতি সিলেট বিভাগের নদ নদীর উপর শিল্পদূষণ অত্যাচার যুক্ত হয়েছে। এসব বিনাশী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে গতকাল (শনিবার) সিলেটে নদীমাতৃক মানুষের প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। ‘নদী থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলন বন্ধ করো’ প্রতিপাদ্যে বিশ্ব নদী দিবস ২০১৮ কে সামনে রেখে মুলত এ মানববন্ধন। স্বতর্স্ফূত এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয় সিলেটের হাওর-নদীর মিলনরেখায় অবস্থিত চেঙ্গেরখাল নদীর বাদাঘাট ব্রিজ এলাকায়। গতকাল সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার যৌথ উদ্যোগে ঘন্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে মতে, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০-এর ধারা ৫ এ বলা আছে (১) পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোন মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। (২) নদীর তলদেশ হইতে বালু বা মাটি উত্তোলনের ক্ষেত্রে যথাযথ ঢাল সংরক্ষণ সাপেক্ষে, সুইং করিয়া নদীর তলদেশ সুষম স্তরে খনন করা যায় এইরূপ ড্রেজার ব্যবহার করতঃ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। (৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন ড্রেজিং কার্যক্রমে বাল্কহেড বা প্রচলিত বলগেট ড্রেজার ব্যবহার করা যাবে না।
কিন্তু দেশের বিধিবদ্ধ আইনকে অবজ্ঞা করে, প্রচলিত ড্রেজিং মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালি উত্তোলন করায় নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নদী ও পানি বিশেষজ্ঞদের মতামত ছাড়া বালু উত্তোলন সম্পূণ-রূপে বন্ধ করা না হলে অকল্পনীয় ক্ষতির মুৃেখ পড়বে নদী ও নদী তীরবর্তী পরিবেশ-প্রতিবেশ।
এদিকে, চেঙ্গেরখাল নদীর স্বচ্ছ পানিপ্রবাহকে কাজে লাগিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৫০ বছরের টার্গেটে ৭শ ২৫ কোটি টাকার ওয়াটার প্লান্ট নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে। এ অবস্থায় এই নদীর পানি প্রবাহকে হুমকিতে ফেলে যেভাবে বালু উত্তোলন চলছে তা অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার। তাই চেঙ্গেরখাল নদীসহ সিলেটের অধিকাংশ নদী থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলন অবিলম্বে বন্ধ না চরম মূল্য দিতে হবে সকলকে এমন আশংকা ব্যক্ত করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কৃষিবিদ মোজাদ্দেদ আহমেদ বলেন, ইচ্ছেখুশি বালি উত্তোলনের কারণে সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর তীরের কৃষি জমি বিলীন হওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে ।
সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, নদীর বালু কেন্দ্রিক লুটেরা সিন্ডিকেট এখন সক্রিয়, তারা নগদ অর্থ লোভে নির্বিচারে বালু উত্তেলনে মেতে উঠেছে, নেপথ্যে রয়েছে বাগবাটোয়ারা নির্ভর স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি সহ প্রভাবশালী মহলের একটি দূর্নীতিগ্রস্থ অংশ। তারা পকেটে টাকা নিচ্ছে, অপরদিকে নদ-নদী ভাংগনে বিরাট অংকের টাকা বরাদ্দ করছে সরকার।
এ ব্যাপারে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জিয়া আহমেদ বলেন, চেঙ্গেরখাল নদীতে অপরিকল্পিত ও অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বালু উত্তোলনে দেশের অন্যতম মিঠাপানির জলারবন রাতারগুল হুমকির মুখে পড়বে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।