রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মোস্তফা শফিকুল ইসলাম, কয়রা (খুলনা) থেকে
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন খুলনার কয়রা উপজেলার ২টি পোল্ডারে অর্ধশতাধীক স্থানে ভেড়িবাঁধে ভাঙন ধরেছে। সেকশন অদক্ষ কর্মকর্তার কারণে কয়রার দুটি পোল্ডার হুমকির মুখে। সরোজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কয়রা উপজেলার ১৪/১ এবং ১৩-১৪/২ এ দুটি পোল্ডারে পাউবোর ভেড়িবাঁধ দেখভাল করার মতো দক্ষ কর্মকর্তা না থাকায় সমগ্র কয়রাবাসী আজ হুমকির মুখে। ফলে একের পর এক ভেড়িবাঁধ ভেঙে নোনা পানি ঢুকে মৎস্য ঘেরসহ শত শত বসতবাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশীর আংটিহারা, খাশিটানা, মাটিয়া ভাঙা, চরামুখা, মেদেরচর, জোড়শিং এবং বীণাপানিসহ উত্তর বেদকাশীর গাতীরঘেরী, হরিহরপুর, পদ্মপুকুর, কাটকাটা, শাকবাড়িয়া, এবং কয়রা সদর ইউনিয়নের ২নং কয়রা খালের গোড়া, হরিণখোলা, ঘাটাখালী, মদিনাবাদ, ৪নং কয়রা ও ৫নং কয়রার ভেড়িবাঁধে ভাঙন সৃষ্টির ফলে যখন তখন নোনা পানি ঢুকে লোকালয়ের বসতবাড়িসহ কোটি কোটি টাকার মৎস্য ঘের ভেসে যাচ্ছে। ওদিকে মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া, পাবনা, গোবিন্দপুর এবং মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের তেতুলতলার চর সরদার ঘাট, শেখের কোনা, নয়আনী কাছারীবাড়িসহ শিকারীবাড়ি এলাকার ও পাউবোর ভেড়িবাঁধে ফাটল ধরেছে। এসব এলাকা দেখভাল করার জন্য পাউবোর দক্ষ প্রকৌশলীর প্রয়োজন। ইতিপূর্বে এ দুটি পোল্ডার দেখভাল করার দায়িত্বে ছিলেন উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আলীউজ্জামান এবং আব্দুল মতিন। হঠাৎ করে তাদের বদলি হওয়ায় কয়রার এ দুটি পোল্ডারের মুখ থুবড়ে পড়েছে। ইদানিং একজন সেকশন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে এ দুটি পোল্ডারের দায়িত্বে নিয়োগ দেয়ায় এবং অদক্ষ ব্যক্তির কারণে গত ৮ এপ্রিল হরিহরপুর ভেড়িবাঁধ ভেঙে নোনা পানি ঢুকে অর্ধশত ঘরবাড়িসহ মৎস্য ঘের ডুবে যায়। তবে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বে নিয়োজিত সেকশন কর্মকর্তা খয়রুল আলমকে দীর্ঘ ২ মাসে দেখা যাইনি। অথচ স্থানীয়রা সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যখনই যোগাযোগ করেন তখনই সেখান থেকে জানান, কয়রাতে সেকশন কর্মকর্তা রয়েছেন। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, নতুন চাকরি ও অদক্ষ ব্যক্তি এই সেকশন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালনের নামে নিজ কর্মস্থলে না এসে নিজ বাসায় সময় কাটান। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় সাতক্ষীরা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী-২ অপূর্ব কুমার ভৌমিকের সাথে, তিনি বলেন, সরকারের বরাদ্দ না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় স্থানীয়ভাবে সংস্কারের জন্য স্থানীয় সংসদসহ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহোদয়ের কাছে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বরাদ্দ পেলেই আমরা ভাঙন কবলিত এলাকাগুলি দ্রুত সংস্কার করবো। ওদিকে কয়রা উপজেলা সচেতন জনগণ এ সংবাদদাতাকে বলেন, ইতিপূর্বে সেকশন কর্মকর্তারা নিজ উদ্যোগে ভাঙন কবলিত এলাকাগুলি স্থানীয়দের নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বাঁধ রক্ষা করতেন। আর এখন পাউবোর কোন কর্মকর্তা তো দূরের কথা বরাদ্দ না থাকায় কোন সেকশন কর্মকর্তাকে দেখা যায় না এ দুটি পোল্ডারে। এই তো গত দুটি হলো ১৪/১ পোল্ডারের হরিহরপুর এলাকার ভেড়িবাঁধ ধসে নোনা পানি ঢুকে পড়ায় পাউবোর তেমন কোন মাথাব্যাথা নেই। তবে টেন্ডার হলেই পাউবোর কর্তারা নিজেরাই ঠিকাদার সেজে ১০ লক্ষ টাকার কাজ ৫ লক্ষ টাকায় দায়সারা মাটির কাজ করে পকেট ভারী করতে দেখা যায়। গত মাসে পাউবোর এই সেকশন কর্মকর্তা খয়রুল আলম চরামুখা নামক ভেড়িবাঁধ সংস্কারের নামে শুভংকরের ফাঁকি দিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন। প্রকৃত ঠিকাদার কে লেবাররা কোন দিন চোখে দেখেনি বলে মন্তব্য করেন মাটিকাটা লেবার ও শ্রমিকরা। তবে সচেতন মহলের ধারণা এ দুটি পোল্ডারে সংস্কার কাজের বরাদ্দ অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় করা হলে ভাঙন কবলিত এলাকা নিরাপদ থাকবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বৃদ্ধ বলেন- বর্ষা মৌসুমের আগেই যদি ভাঙন কবলিত এলাকাগুলিতে মাটির কাজ না করানো হয় তাহলে আবারও নোনা পানিতে ডুবে মরতে হবে। তিনি বলেন, মতিন সাহেব ছিলেন, তাকে প্রায় সময় দেখতাম। শুনেছি মতিন সাহেবের পরিবর্তে একজন এসছেন আজ দু মাসে তো কোন এসওকে দেখলাম না। ওদিকে দক্ষিণ বেদকাশীর নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আ’লীগের সভাপতি কবি শামছুর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নের চারপার্শ্বে বড় বড় নদী। আমরা একটি দ্বীপে বসবাস করছি। তিনি বলেন, ইতিপূর্বে আমার এলাকার ২/৩শ’ পরিবার আইলা ও সিডরে গৃহহীন হয়ে অন্যত্রে চলে গেছে। তারপরও আমরা নিরাপদ নই। কবি শামছুর আরও বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকায় যাতে বরাদ্দের তিন ভাগের ২ ভাগ টাকার কাজ হয় সে ব্যাপারে লক্ষ রাখবো। তিনি অতি দ্রুত দক্ষিণ বেদকাশীর মারাত্মক ভাঙনগুলি পরিদর্শন পূর্বক সংস্কারের জন্য স্থানীয় সংসদসহ নির্বাহী প্রকৌশলী টু এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সাথে সাথে কয়রা ও মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ঐ একই দাবি করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।