পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। সেই সাথে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে বৃষ্টিপাতের আবহ। এদিকে টানা অসহনীয় গরমের দাপট অবশেষে কমতে শুরু করেছে। গতকালও (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে শরতের এই আশ্বিন মাসে চৈত্র-বৈশাখের মতোই সূর্যের তির্যক দহনে ভ্যাপসা গা-জ্বলা প্রচন্ড তাপদাহ চলে দুপুর পর্যন্ত।
বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা অস্বাভাবিক বেশি থাকায় গরমে ঘামে নেয়ে একাকার হতে হয়। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয় শিক্ষার্থী ও নিত্যদিনের কর্মমুখী অগণিত মানুষজনকে। তবে বিকেল থেকে দেশের অনেক স্থানে মেঘের আনাগোনা বৃদ্ধি পায়। কিছুটা শীতল বাতাস পরশ বুলায়। এরফলে তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসে। এখন স্বস্তির বৃষ্টির আশায় মানুষ আকাশপানে তাকিয়ে আছে। গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ দেশের বিভিন্ন স্থানে হিমেল দমকা হাওয়ার সাথে গুঁড়ি গুঁড়ি ও হালকা বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া পূর্বাভাস বলছে, আজ-কালের মধ্যে আবহাওয়ার উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্থানভেদে এক থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চট্টগ্রামে ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় ঢাকার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩৪.৫ এবং ২৭ ডিগ্রি সে.। গত বুধবার দেশে তাপমাপক পারদ ৩৭.৩ ডিগ্রিতে (ভোলা জেলায়) উঠে যায়। ঢাকায় ছিল ৩৬.৫ ডিগ্রির ঊর্ধ্বে।
এদিকে গত বুধবার বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে ওইদিন মধ্যরাতের পর নিম্নচাপে পরিণত হয়। গতকাল আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে জানা গেছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে গতকাল দুপুরের দিকে গভীর নিম্নচাপ আকারে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি দুপুরে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৬৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৩০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২০ কিমি পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৩০ কিমি পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৫০ কিমি যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নি¤œচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল রয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগ আরও জানায়, মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় ও উত্তর বঙ্গোপসাগরের মাঝারি থেকে জোরালো অবস্থায় বিরাজ করছে। আজ-কালের মধ্যে রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, ভোলা ও পটুয়াখালী অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
তবে তা ক্রমেই প্রশমিত হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সে. হ্রাস পেতে পারে।
গভীর নিম্নচাপ ভারতমুখী দেশজুড়ে স্বস্তির বৃষ্টিপাত
গতকাল রাতে সর্বশেষ আবহাওয়া পরিস্থিতিতে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ভারতের উড়িষ্যা এবং অন্ধ্রের মাঝামাঝি উপক‚ল অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছে। এদিকে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে গতকাল তাপদাহ কিছুটা কমে প্রায় দেশজুড়ে কমবেশি স্বস্তির বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় সাতক্ষীরায় ৪১ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকায় ২৩, চট্টগ্রামে ৫, ময়মনসিংহে ৭, রাজশাহী ও রংপুরে ৪, খুলনায় ১১, বরিশালে ১০ মিমি সহ দেশের অনেক জায়গায় হালকা বর্ষণ হয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় ও উত্তর বঙ্গোপসাগরের মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে।
আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পেরে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
এদিকে গতকাল রাতে আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে জানা গেছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৩০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৭৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত ও পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে গতকাল মধ্যরাত নাগাদ ভারতের দক্ষিণ উড়িষ্যা-উত্তর অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করার পথে অগ্রসরমান ছিল।
এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৫০ কিমি, যা দম্কা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল রয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।