পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন ভারতের উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ থেকে ঝাড়খণ্ড হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপটি ছত্রিশগড়ের উপর দিয়ে দুর্বল হয়ে সরে গেছে। সমুদ্র বন্দরসমূহকে সতর্ক সঙ্কেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। এ নিয়ে গত দুই সপ্তাহে তিনটি নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে স্থলভাগের দিকে সরে গেছে। পর পর এসব গভীর নিম্নচাপের পিঠে প্রত্যাশিত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও উবে গেছে। আপাতত স্বস্তির বৃষ্টির আভাস নেই। বরং তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার স্থল গভীর নিম্নচাপটি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভ্যাপসা গরমের দাপট আরও বেড়ে গেছে। ভাদ্রের তালপাকা তীব্র গরমে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
আষাঢ়-শ্রাবণ ভরা বর্ষাকালের মতোই এবার ভাদ্র মাসেও খরাদশা। ভাদ্রের প্রথম সপ্তাহ পার হতে চলেছে। অথচ স্বস্তির বৃষ্টির দেখা নেই। সারা দিনে-রাতে মিলিয়ে দুয়েক জায়গায় বিক্ষিপ্ত-বিচ্ছিন্ন ও সাময়িক বর্ষণ হচ্ছে। অস্থায়ী বর্ষণে অল্পক্ষণ স্বস্তি এলেও আবার সেই গরমের দাপট ফিরে আসছে। ভাদ্র মাসে বর্ষার বৃষ্টিপাতের জের থাকে। কিন্তু খরতপ্ত আবহাওয়ায় এখন তাও নেই। শনিবার সিলেটে তাপমাত্রার পারদ উঠে গেছে ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের বেশিরভাগ জেলায় দিন ও রাতের তাপমাত্রা মৌসুমের এ সময়ের স্বাভাবিকের চেয়ে ঊর্ধ্বে অবস্থান করছে।
আষাঢ়-শ্রাবণ পেরিয়ে শরতের ভাদ্র মাসেও মেঘ-বৃষ্টির পরিবর্তে দিনভর কড়া সূর্যের তেজ। সর্বত্রই যেন আগুন ঝলসে পড়ছে। গলছে রাস্তার পিচ। ভ্যাপসা গরমে-ঘামে কাহিল মানুষ। দিনে-রাতে কোথাও স্বস্তি নেই। বাতাস থমকে গেছে। ফ্যানের বাতাসও উত্তপ্ত। আকাশ প্রায় মেঘমুক্ত। সরাসরি সূর্য কিরণ এসে উতপ্ত করছে স্থলভাগ। কড়া সূর্যের দহনে পুড়ছে ফল-ফসল, মাঠ-ঘাট। পানির অভাবে বিশেষ করে রোপা আমন চাষে সঙ্কট বিরাজ করছে। সেচের বাড়তি খরচ মেটাতে গিয়েই দিশেহারা কৃষক।
বাতাসে অত্যধিক পরিমাণে জলীয়বাষ্প থাকার কারণে আর্দ্রতা বেড়ে গিয়ে গরমের সাথে ঝরছে ঘাম। শরীর থেকে মাত্রাতিরিক্ত ঘাম বের হয়ে মানুষ দ্রুত কাহিল ও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। দিন এনে দিন খাওয়া গরীব কর্মজীবী, শ্রমজীবী, কুলি-মজুরদের কষ্ট-দুর্ভোগ অবর্ণনীয়। খরতাপের দহনের সাথে বিদ্যুতের লোডশেডিং ও বিভ্রাট যোগ হয়ে মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়ে গেছে। গরমে সবখানে হাঁসফাঁস অবস্থা।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশের উপর বর্তমানে বৃষ্টির বাহক মৌসুমী বায়ু দুর্বল বা নিষ্ক্রীয়। এর ফলে অনাবৃষ্টি, খরাদশা বিরাজ করছে। জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বৃষ্টিপাত কমে গেছে। অন্যদিকে দিনের তাপমাত্রার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রাতের পারদও। দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান কমে গেছে। এতে করে গরমে দুর্ভোগের মাত্রা বেড়েছে।
দিনে-রাতে অস্বাভাবিক তাপদাহের কারণে জ্বর, সর্দি-কাশি, শ^াসকষ্ট, চর্মরোগ, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধিতে ঘরে ঘরে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। হাসপাতাল-ক্লিনিক, ডাক্তারের চেম্বারে বেড়েছে রোগীর ভিড়। শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের ভোগান্তি বেড়ে গেছে।
এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ সময়ে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫.৮ ডিগ্রি : বাড়বে গরম : গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৫.৮ ডিগ্রি সে.। ঢাকার তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ৩৫.৩ এবং সর্বনিম্ন ২৭.৮ ডিগ্রি সে.। দেশের বেশিরভাগ জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ থেকে ৩৫ ডিগ্রিরও ঊর্ধ্বে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপে বিচ্ছিন্নভাবে ৩২ মিলিমিটার ছাড়া দেশে তেমন উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়নি। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর তেমন সক্রিয় নেই। আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানা গেছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।