রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
উপজেলার সবজী গ্রাম হিসেবে পরিচিত এলাকাগুলোতে এবার শশার বাম্পার ফলন হয়েছে। উপযুক্ত দাম পেয়ে কৃষক ও বেজায় খুশি। মানিককুড়া, ভারুয়া, হলদিগ্রাম, গারোকুনা, সন্ধাকুড়া, প্রতাবনগর, সারিকালিনগর,দড়িকালিনগর,বালুরচর,লঙ্কেশ্বর ইত্যাদি গ্রামসমূহে শত শত একর জমিতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শশা,চিচিঙ্গা এবং কুমড়ার চাষ করেছেন ৫ শতাধিক কৃষক।
তারা সবাই প্রান্তিক চাষী। চাষিদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, এবার শশার আবাদে তারা ভাল লাভবান হ্েচ্ছন। এদিকে শশার ভাল দাম পেলেও কৃষি ডপকরনের দাম অনেক চড়া। জানালেন ক,জন শশা চাষি। বাজারে প্রতি কেজি শশা বিক্রি হচ্ছে ৪০/৫০ টাকা কেজিতে। এতে তাদের উৎপাদন খরচ উঠছে বলে দাবি করে জানান, অনেকেই চড়া সূদে ঋণ নিয়ে আবাদ করেছেন। এখন তারা ঋণের টাকা পরিশোধ করবেন তার পর লাভের আলাপ। প্রতাবনগরের চাষী আবু সায়েম প্রতিবারের মতো এবারও প্রায় ৩ একর জমিতে শশা,চিচিঙ্গা এবং কুমড়ার আবাদ করেছেন। তিনি জানান, আবহাওয়ার এমন পরিবর্তন, পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে সবজী ক্ষেত আক্রান্ত হচ্ছে, নতুন নতুন রোগ-বালাইয়ে। তাই অন্যান্য বারের চেয়ে খরচ এবার বেশী।
সারি কালিনগরের কৃষক জিয়াউল,সিদ্দিক,দরিকালিনগরের মিস্টার,আইয়ুব আলী, ছানা মিয়া,ইব্রাহিম আমেজ উদ্দিন তারা সবাই প্রান্তিক চাষী।
মাত্র ১০ থেকে ৪০ শতক জমিতে শশা এবং চিচিঙ্গার চাষ করেছেন। জমি তৈরী,মাদা তৈরী, বীজবপন, মাচা বা জাংলা তৈরী, নিড়ানী,সেচ,রাসায়নিক সার প্রয়োগ, কীটনাশক-এবং ছত্রাক নাশক কেনার পর এখন বলতে গেলে তারা নিঃস হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন এনজিও হতে অতিরিক্ত সূদে ঋণ নিয়েও খরচ চলাতে না পেরে বাধ্য হয়ে অত্যন্ত চড়া সূদে আবারো ঋণ নিতে দ্বারস্থ হচ্ছেন গ্রাম্য সুদখোর মহাজনদের নিকট থেকে। তাই লাভের ধান টিয়ায় খাইছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক।
প্রসঙ্গত. এ সব এলাকার জমি নীচু হওয়ায় বছরের ৬ মাস পানি জমে থাকায় আমন ফসল মোটেও হয়না। তাই ইরি-বোরোর, অর্থাৎ এক ফসলী জমি এ গুলো। পাশাপাশি ডঁচু জমিতে তরিতরকারীর আবাদ ছাড়া কোন আবাদ ও হয়না। এ জন্য এই দুই ধরনের জমিতে তরিতরকারীর আবাদ করেন তারা। গত ক’বছর ধানের দাম না পাওয়ায় ইরি-বোরো আবাদে আগ্রহ কমে গেছে কৃষকের। ফলে অনেকেই সামান্য জমিতে ধান আবাদ করে, বাদ-বাকী জমিতে বারোমাসী সবজী চাষ করেছেন বলে জানান কৃষকরা।
গত ক’ বছরে সবজী চাষে অনুকুল আবহাওয়ার জন্য অনেকেই লাভের মুখ ও দেখেছেন। আর সে আশায়ই এবারও হাত দিয়েছেন, শশা,চিচিঙ্গা ও কুমড়া চাষে।
বৈরি আবহাওয়ায় এবার দেখা দিয়েছে নতুন নতুন যতো রোগ বালাই আর নানাবিধ সমস্যা। কৃষকরা অভিযোগ করে জানান, সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কোন লোক জনকে আসেন ঠিকই তবে তেলামাথায় তেল দেন। আমাদের মত দরিদ্র কৃষকদের তারা চেনেন কি না সন্দেহ। তারা কালে ভদ্রে তাদের দেখা পান। শুধু যে তাই, তা নয়, তারা অনেকেই আবার কৃষি অফিস পর্যন্তও চেনেন না।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (বিএস) এলাকায় আসেন কিনা তা জানতে চাইলে কৃষক জিয়াউল,সিদ্দিক,ওসমান,মিস্টার,আইয়ুব আলী জানান, তারা ওই সব কৃষি বিভাগের লোক জন এলাকায় আসেন কিন্তুু গরিবের দিকে নজরটা একটু কমই বুঝলেন না। তাই ওই সব বেশীরভাগ কৃষক, সমস্যা হলে তাদের ক্ষেতের ডাক্তার- কীটনাশক ব্যবসায়ীদেরই পরামর্শ নিয়ে থাকেন এবং বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের পরামর্শের ওপরই নির্ভরশীল এখানকার কৃষকসমাজ, এমন দাবী করেছেন কেউ কেউ।
ঘটনার সত্যতা জানতে কৃষি অফিসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন অভিযোগগুলো সঠিক নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।