Inqilab Logo

সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

হজরত খালেদ ইবনে সেনান (আ:) ছিলেন ‘ফাতরাত’ যুগের নবী

খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

হজরত ঈসা (আ:) ও হজরত মোহাম্মদ (সা:)-এর মধ্যবর্তী যুগকে ‘ফাতরাত’-এর যুগ বলা হয়। সাধারণত বলা হয়ে থাকে, এ সময়কালের মধ্যে কোনো নবী-রাসূলের আগমন ঘটেনি। আবার রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর শানে বলা হয়, কোনো কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে তাঁর প্রতি ‘অহি’ আসা সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। অথচ তিনি আশা করেছিলেন, অহি আসার পর তিনি কোনো প্রশ্নের জবাব দেবেন। কিন্তু অহি তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী আসেনি। এ বিরতির সময়কেও ‘ফাতরাত’ বলা হয়।
হজরত ঈসা (আ:) ও রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে কোনো নবীর আবির্ভাব ঘটেনি। এটি অনেকের মত হলেও বিখ্যাত তফসির ‘কাশশাফ’-এর লেখক জারুল্লাহ জমকশরীসহ একদল আলেম বলেন, হজরত ঈসা (আ:) ও রসূলুল্লাহ (সা:)-এর মধ্যবর্তী সময় কালের মধ্যে চারজন নবীর আগমন ঘটে এবং তাদের মধ্যে তিনজন ছিলেন ইসরাইলি এবং একজন আরবি, যার নাম হজরত খালেদ ইবনে সেনান আল ঈসী (আ:)। কোনো কোনো গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, হজরত খালেদ ইবনে সেনান আল ঈসী (আ:) একজন প্রেরিত নবী ছিলেন এবং ‘নার’ বা আগুনের অধিকারী ফেরেশতা তার পাহারাদার ছিলেন। তার নবুওয়াতের নিদর্শন ছিল এক প্রকারের অগ্নি, যাকে বলা হতো ‘নারুল হাদছান’। এ আগুন একটি ময়দান থেকে নির্গত হতো এবং মানুষ ও গবাদি পশুকুলকে জ্বালিয়ে দিতো। কেউ এ আগুন রোধ করতে পারত না। হজরত খালেদ ইবনে সেনান আল ঈসী (আ:) এ আগুন নির্বাপিত করেন। এরপর থেকে তা আর কখনো নির্গত হয়নি।
হজরত খালেদ ইবনে সেনান আল ঈসী (আ:) নবী ছিলেন, কিন্তু তার জাতি তাকে হারিয়ে ফেলে বলে রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন। যেমন- ‘দারকুতনি’-এর বর্ণনা থেকে জানা যায়: একটি দুর্লভ ও পাহাড়ি (পশু) পাখির নাম ‘আনকা’। বলা হয়ে থাকে, দুনিয়াতে এ পাখির অস্তিত্ব নেই, অথবা বিরল। এ সম্পর্কে ‘হায়াতুল হায়ওয়ান’ গ্রন্থে বিভিন্ন ঘটনা রয়েছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে- হজরত মূসা (আ:)-এর সময়ে ‘আনকা’ পাখির উৎপাত। তার ওফাতের পর এ পাখি নাজদ ও হেজাজ এলাকায় চলে যায় এবং সেখানে জঙ্গলি পশু-পাখি ও মানুষ খেতে আরম্ভ করে। তখন লোকেরা হজরত খালেদ ইবনে সেনান আল ঈসী (আ:)-এর নিকট ‘আনকা’-এর উৎপাতের কথা জানায়। তিনি বদদোয়া করলে আনকার বংশ বন্ধ হয়ে যায় এবং তার অস্তিত্বও অবশিষ্ট থাকেনি।
বর্ণিত আছে, হজরত খালেদ ইবনে সেনান আল ঈসী (আ:)-এর ওফাতের সময় নিকটবর্তী হলে, তিনি তার জাতির উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যখন তোমরা আমার দাফন সম্পন্ন করবে, তখন দেখবে জঙ্গলি গাধার একটি দল আমার কবরে আসবে। দলটির অগ্রভাগে একটি পুরুষ গাধা থাকবে। তোমরা যখন এ ঘটনা দেখবে তখন আমার কবর খুলে দেবে। আমি পূর্ববর্তীদের এবং পরবর্তীদের জ্ঞানের সন্ধান বলে দেবো।’ যখন তার ওফাত ও কাফন-দাফন হয়ে যায়, তখন গর্দভকুলের এ ঘটনা ঘটে। তার জাতি তার উপদেশ অনুযায়ী তার কবর খুলে দিতে চাইলে তার পুত্র প্রতিবন্ধক হন। তিনি পিতার কবর খোলা ভালো মনে করলেন না। এ কথা বলে নিষেধ করলেন যে, লোকেরা আমাদের তিরস্কার ও নিন্দা করবে এবং বলবে, এ সব লোক পিতার কবর খুলেছিল। বর্ণনাকারী বলেন, যদি তারা কবর খুলে দিত, তা হলে হজরত খালেদ ইবনে সেনান আল ঈসী (আ:) কবর হতে বের হয়ে জরুরি খবর জানিয়ে দিতেন। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার তা মনজুর ছিল না।
অনেক আলেমের মতে, হজরত খালেদ ইবনে সেনান আল ঈসী (আ:)-এর কন্যা একবার রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর খেদমতে উপস্থিত হন। রাসূলুল্লাহ (সা:) তার জন্য স্বীয় চাদর মোবারক বিছিয়ে দেন এবং বলেন, ‘আহলান বি বিনতে নরীয়্যীন’ অর্থাৎ স্বাগতম হে নবী কন্যা। তার সম্পর্কে আরো বর্ণিত আছে, যখন এ নবী দুলালী রাসূলুল্লাহ (সা:) কে ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ পড়তে দেখলেন, তখন তিনি বললেন, ‘আমার পিতাও এটি পাঠ করতেন’।



 

Show all comments
  • কামাল ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৪:৫৫ এএম says : 0
    এই ধরনের নিউজ পড়ার জন্য ইনকিলাব নিয়মিত পড়ি
    Total Reply(0) Reply
  • বিপ্লব ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৪:৫৫ এএম says : 0
    আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম জাযাহ দান করুক
    Total Reply(0) Reply
  • সাইফ ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৯:৪১ এএম says : 0
    আল্লাহুআকবার, আল্লাহুআকবার, আল্লাহুআকবার, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আসলেই আমরা বর্তমান সময়ের সাধারন মুসলমানযে কতটা মুর্খতা নিয়ে নিজেদেরকে মুসলমান আথবা মোমিন ভাবতে শুরু করি তা ইসালামের জ্ঞ্যানের সমুদ্রকে যারা অন্তত দেখার ছেষ্টা করেছেন এবং আল্লাহর রহমত তাদের সাথে ছিলো, তারাই জানেন এবং বোঝেন আমরা আসলেই কি বা কতটুকু জানি। মুসলমান যদি মোমিন হতে হয় সবার আগে নিজেকে সর্ব প্রথম নিজেকে দ্বীনি ইলম দ্বারা শিক্ষিত করা ছাড়া কোন উপায় নেই। আল্লাহ তায়ালা লেখক সাহেবকে ও ইনকিলাব সংশ্লিষ্ট সিকলকে এর উত্তম প্রতিধান প্রধান করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • md ismail ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১১:২১ এএম says : 0
    হজরত খালেদ ইবনে সেনান (আ:) যে ফাতরাত যুগের নবী ছিলেন এর তথ্য সূত্র জানানোর অবকাশ ছিল।
    Total Reply(0) Reply
  • Khorshed ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৯:০৯ এএম says : 0
    Actually it's very important but sources are not as authentic as it should be.Without strong support this type of information publishing is risky.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন