বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঝিনাইগাতীতে জলবায়ু, কৃষি ও পরিবেবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বিদেশী ইউক্যালিপ্টাস-আকাশমণিসহ বিভিন্ন বৃক্ষ রোপনের হিড়িক পড়ে গেছে। জানা যায়, এসব গাছ যে শুধু ব্যক্তিগত উদ্বোগেই রোপণ করা হচ্ছে তা নয়। রীতিমত সরকারীভাবেও রোপণ করা হচ্ছে এ সব ক্ষতিকর বৃক্ষ।
জানা যায়, এসব ক্ষতিকর বৃক্ষ সর্ব প্রথম সরকারীভাবে বন বিভাগের মাধ্যমে ঝিনাইগাতী গারো পাহাড়ে জনসাধারণের অংশিদারিত্বের ভিত্তিতে ব্যাপকভাবে রোপণ করে বনায়ন করা হয় এবং বন বিভাগই সর্ব প্রথম নার্সারীর মাধ্যমে এসব ক্ষতিকর চারা উৎপাদন করে। অল্প সময়ে বেড়ে উঠা এসব গাছ পরবর্তীতে ব্যাপক লাভজনক মনে করে দ্রুত ব্যক্তিগত উদ্বোগে গড়ে উঠতে থাকে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে।
জনসাধারণের ধারণা সরকারের বন বিভাগ যেহেতু বৃক্ষগুলো রোপণ করছে সেহেতু তা যে ক্ষতিকর বৃক্ষ তা কল্পনাতো করেইনি সাধারণ মানুষ, বরং গ্রহণযোগ্যতা আরো বেড়ে যায় বহুলাংশেই। এ ভাবেই প্রতেকটি বাড়ী, ফাঁকা রাস্তাঘাট, পতিত জমি, ক্ষেতের আইল এমনকি এক চিলতে জমিও ফাঁকা রাখছেনা সাধারণ মানুষ। সর্বত্রই এখন এসব বিদেশী বৃক্ষের ছড়াছড়ি।
বর্তমানে এসব ক্ষতিকর গাছে গারো পাহাড়েতো বটেই প্রত্যেকটি বাড়ী- প্রধান প্রধান সড়ক এমনকি গ্রামীণ রাস্তাসহ গোটা উপজেলাজুড়েই ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। জানা যায়, বিভিন্ন এনজিও’র মাধ্যমেও এসব চারা রোপণ করা হয়েছে। গারো পাহাড়ের কৃষকরা না জেনেই ইউক্যালিপ্টাস-আকাশমণি (একাশিয়া) গাছ বাড়ীর আঙিনা, রাস্তার পাশে, কৃষি জমির পাশে এমন কি পতিত জমিতে ব্যাপকভাবে রোপন করেছেন। দ্রুতবর্ধনশীল এসব গাছ রোপনে বলতে গেলে হিড়িক পড়ে গেছে। উদ্ভিদবিজ্ঞানিদের মতে ইউক্যালিপ্টাস গাছ আশপাশের প্রায় ১০ ফুট এলাকার পানি শোষণ করে এবং অকাশে উঠিয়ে দেয়। এই গাছ সব সময়ই এক কথায় রাত-দিন পানি শোষণ করে বাতাসে ছেড়ে দেয়। আর এ জন্যই এই গাছ লাগানো ক্ষতিকর। তাছাড়া এই বিদেশী গাছের আশপাশে অন্যকোন গাছও জন্মাতে পারে না। এই গাছে আশপাশ এলাকার পর্যন্ত মাটি শুকিয়ে ফেলে এবং জমির উর্বরা শক্তি কমে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বন কর্মকর্তা জানান, এটি বিদেশী প্রজাতির অত্যন্ত দ্রুতবর্ধনশীল গাছ এবং তা মাটির ৫০/৬০ ফুট নিচের পানি পর্যন্ত শোষণ করে বাতাসে ছেড়ে দেয়। ফলে পানিশূণ্যতা দেখা দেয় মাটিতে। তাছাড়া এসব বিদেশী প্রজাতির গাছের শিকড়ও ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। এতে এসব গাছের আশপাশে ধান গাছসহ অন্য যে কোন গাছ টিকতেই পারে না। এই বিদেশী গাছ প্রচুর কার্বন ডাই অক্সাইড নির্ঘমন করে। তাই কৃষি জমিতো বটেই বাড়ীর আঙিনায় পর্যন্ত এসব গাছ রোপন করা উচিত না।
এজন্য বাড়ীর আঙিনায়তো বটেই বনায়নের জন্যও দেশীয় ফলদ বৃক্ষ রোপন করা উচিত। তাতে করে একদিকে যেমন পর্যাপ্ত ফল পাওয়া যাবে পক্ষান্তরে পাওয়া যাবে মূল্যবান কাঠ। জানা যায়, এই সব বিদেশী প্রজাতির গাছ ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও অস্বাভাবিকভাবে নিচে নামিয়ে দেয়, এমনকি পানির উৎসকেও শেষ করে ফেলে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ডাক্তার জানান, এই গাছের ফুলের রেণু নি:শ্বাসের সাথে মানুষের দেহে প্রবেশ করার ফলে অ্যাজমা রোগ হয়। অথচ সরকারিভাবে এসব বৃক্ষ রোপনে বাধাতো দেয়াই হচ্ছে না বরং সরকারের বন বিভাগ বনায়নের নামে এসব গাছ রোপন করায় জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এসব বিদেশি গাছের চারা। এক শ্রেনীর নার্সারি মালিকরা অবাধে এসব চারা উৎপাদন ও বাজারজাত করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।