Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অস্থিতিশীল হয়ে ওঠছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো

সতর্ক প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

বিশেষ সংবাদদাতা, কক্সবাজার থেকে | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর অবস্থা। ওখানে দিন দিন বাড়ছে নানা অপরাধ। এগুলো ঠেকাতে প্রশাসনের নানা ধরনের ব্যবস্থা থাকলেও থেমে নেই রোহিঙ্গাদের অপরাধ ও মাদক ব্যবসা। তাদের অপরাধ এখন ঠেকানো না গেলে আরো বেপরোয়া হতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইন-শৃংখলা ঠিক রাখতে এবং অস্থিতিশীলতা ঠেকাতে অতিরিক্ত আরো দশ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চাওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাওয়া হয়েছে দশ প্লাটুন বিজিবি। বিশেষ করে আগামী নির্বাচনকালীন সময়ের চার-পাঁচ মাস নির্দিষ্ট করে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ, বিজিবি, আনসার নিয়মিত ক্যাম্পগুলোতে বিশেষ নজরদারী ও পাহারার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ লক্ষ্যে সরকারের সকল আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী সংস্থার সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও সক্রিয় রয়েছে, আইন-শৃংখলা নিয়ন্ত্রণে।
এদিকে নোয়াখালীর ভাসানচরে প্রাথমিকভাবে এক লাখ রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নেয়ার প্রস্তুতির মাঝে এই অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে বলে আঁচ করছেন সচেতন মহল। সূত্র জানায়, নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য পরিকল্পিত শরণার্থী ক্যাম্প নির্মার্ণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। শুরুতে এক লাখ রোহিঙ্গাকে সেখানে সরিয়ে নেয়া হবে। তবে পর্যায়ক্রমে ৫’লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসাচরে নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, বেশি লোক থাকলে স্বাভাবিকভাবে একটু ঝামেলা তো হবেই। তারপরও অপরাধ ঠেকাতে ক্যাম্পগুলোতে বিভিন্ন স্তরের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও। তবে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তিনি সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই বলে জানান। এমনকি কবে নাগাদ প্রত্যাবাসন হতে পারে এমন কোন তথ্যও তার কাছে নেই।
রোহিঙ্গারা অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠার কারণ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহল মনে করেন ক্রমেই ওরা আত্মবিশ্বাস ফিরে পাচ্ছে। এক বছর সময়ের মধ্যে তারা অনেকটা মানসিকভাবে নতুন জায়গায় নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে। এছাড়াও রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ মিয়ানমারে তাদের এলাকায় হয়ত মাদক এবং অন্যান্য অপরাধে জড়িত ছিলো। অনেকের হয়তো অভ্যন্তরীণ পারিবারিক দ্ব›দ্ব ছিলো। হয়তো এখানেও তাদের সেই বিরোধগুলো এখনো থেকে গেছে।
জানা গেছে, রাতের বেলায় কালো কাপড় পরে কিছু রহস্যময় লোকজন রোহিঙ্গা শিবিরে ঘুরাফেরা করে থাকে। তবে এবিষয়ে কারো কাছে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য আছে বলে জানা যায়নি। এসব বিষয় সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইন-শৃংখলা নিয়ে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের বরাতে জানা গেছে, গত এক বছরে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ২০টি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া ধর্ষণ,সংঘর্ষ এবং ইয়াবা পাচারের মত অপরাধ সংঘটিত হয়েছে শত শত।
জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, এ ব্যাপারে জেলা আইন-শৃংখলা কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। সেখানে কিছু পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এখন প্রতিদিন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ ও আনসার টহল দিচ্ছে ক্যাম্পগুলোতে। রাতের বেলায় পুলিশ টহল এখন বাড়ানো হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইন-শৃংখলা ঠিক রাখতে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে আরো দশ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চাওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সরকারের সকল আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী সংস্থার সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও সক্রিয় রয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি সভা হয়েছে বলেও জানান কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো:কামাল হোসেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ