Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

তাপপ্রবাহে দক্ষিণাঞ্চলে দুর্বিষহ জনজীবন

প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : বৃষ্টিবিহীন লাগাতার তাপপ্রবাহে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন ইতোমধ্যে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তাপমাত্রার পারদ ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছে পৌঁছার পাশাপাশি গত ২১ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে কোন বৃষ্টি হয়নি। এ অঞ্চলে অনেক শিশু ও বয়স্কর জীবন প্রায় ওষ্ঠাগত। গত মাসে দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৩৬ ভাগ কম থাকলেও আবহাওয়া বিভাগ এপ্রিল মাসের বুলেটিনে স্বাভাবিক ১৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের কথা জানিয়েছিল। কিন্তু ১ ও ২ এপ্রিল মাত্র ৩২ মিলিমিটারের মত বৃষ্টি ঝরার পরে গত ২২ দিনে বৃষ্টির আর কোন দেখা নেই গোটা দক্ষিণাঞ্চলে। ফলে চলতি মাসেও দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে স্বাভাবিকের অর্ধেক বৃষ্টিপাতেরও সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন আবহাওয়া পর্যবেক্ষকগণ।
আন্তর্জাতিক আবহাওয়া প্রতিষ্ঠান ২০১৫ সালকে সাম্প্রতিককালের সর্বাধিক উষ্ণ বছর হিসেবে চিহ্নিত করলেও চলতি বছর উষ্ণতার আরো নতুন রেকর্ড সৃষ্টির আশংকা করছেন আবহাওয়া পর্যবেক্ষকগণ। বৃষ্টির অভাবে দক্ষিণাঞ্চলের মাঠে থাকা বোরো ধানে বাড়তি সেচ যোগাতে হচ্ছে। বোরো ধানের চারা ইতোমধ্যে পরিপক্ব হয়ে তাতে থোঢ় আসতে শুরু করেছে। এসময় সুষ্ঠু সেচ অত্যন্ত জরুরী বিষয় হলেও দক্ষিণাঞ্চলে বেশীরভাগ পানির উৎসগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে বৃষ্টির অভাবে। পানির স্তরও ক্রমশ নিচে নামছে। ফলে বরিশাল ও ফরিদপুর অঞ্চলের ১১টি জেলার মাঠে থাকা প্রায় সাড়ে ৩ লাখ হেক্টর জমির বোরো ধান নিয়ে অনিশ্চয়তাও ক্রমশ বাড়ছে। চলতি মওসুমে দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি জেলায় উৎপাদিত বোরো ধান থেকে ১৪ লক্ষাধিক টন চাল পাবার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। কিন্তু বৃষ্টির অভাব সে লক্ষ্য অর্জনে মারাত্মক ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে ক্রমশ। লাগাতার তাপপ্রবাহ ও বৃষ্টির অভাবে দক্ষিণাঞ্চলের ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে যে ৪০ লাখ টনের মত তরমুজ উৎপাদনের কথা, তার গুণগত মানসহ ফলন বিপর্যয় ঘটছে। হাজার হাজার তরমুজ চাষীর এবার মাথায় হাত। গ্রীষ্মকালীন সবজির আবাদ ও উৎপাদনও মারাত্মক ঝুঁকির মুখে।
আবহাওয়া বিভাগ থেকে এখনো দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের কোন সম্ভাবনার কথা বলা হয়নি। দিন ও রাতের তাপমাত্রা হ্রাসেরও কোন পূর্বাভাস নেই আবহাওয়া বার্তায়। মৃদু থেকে মাঝারী তাপপ্রবাহে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন চরম বিপর্যয়ের কবলে। বরিশালে ইতোমধ্যে তাপমাত্রার পারদ ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের আশেপাশে ঘোরাফেরা করলেও দক্ষিণÑপশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে তা আরো ১-২ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশী। এমন কি আরো একটু পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতায় তাপমাত্রা ইতোমধ্যে ৪০ডিগ্রী সেলসিয়স অতিক্রম করেছে বলে জানা গেছে। আবহাওয়া বিভাগ আগামী ৪৮ ঘন্টায় সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধির দুঃসংবাদের পাশাপাশি রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার খবর দিয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ অবস্থান করছে যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দক্ষিণাঞ্চল বাদে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে। সে সাথে কোথাও কোথাও শিলা বৃষ্টির কথাও বলা হয়েছে। তবে দেশের অন্যত্র আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
দক্ষিণের ফরিদপুর অঞ্চলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমের খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তা থেকে আপাতত রেহাই মেলার কোন পূর্বাভাস নেই আবহাওয়ার বুলেটিনে। এমনকি আজ সকালের পরবর্তী ৪৮ ঘন্টায়ও তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি অব্যাহত থকার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। ফলে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য বর্তমান দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে রেহাই মেলার কোন খবর নেই আপাতত।

তাপপ্রবাহে দক্ষিণাঞ্চলে দুর্বিষহ জনজীবন
নাছিম উল আলম : বৃষ্টিবিহীন লাগাতার তাপপ্রবাহে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন ইতোমধ্যে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তাপমাত্রার পারদ ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছে পৌঁছার পাশাপাশি গত ২১ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে কোন বৃষ্টি হয়নি। এ অঞ্চলে অনেক শিশু ও বয়স্কর জীবন প্রায় ওষ্ঠাগত। গত মাসে দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৩৬ ভাগ কম থাকলেও আবহাওয়া বিভাগ এপ্রিল মাসের বুলেটিনে স্বাভাবিক ১৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের কথা জানিয়েছিল। কিন্তু ১ ও ২ এপ্রিল মাত্র ৩২ মিলিমিটারের মত বৃষ্টি ঝরার পরে গত ২২ দিনে বৃষ্টির আর কোন দেখা নেই গোটা দক্ষিণাঞ্চলে। ফলে চলতি মাসেও দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে স্বাভাবিকের অর্ধেক বৃষ্টিপাতেরও সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন আবহাওয়া পর্যবেক্ষকগণ।
আন্তর্জাতিক আবহাওয়া প্রতিষ্ঠান ২০১৫ সালকে সাম্প্রতিককালের সর্বাধিক উষ্ণ বছর হিসেবে চিহ্নিত করলেও চলতি বছর উষ্ণতার আরো নতুন রেকর্ড সৃষ্টির আশংকা করছেন আবহাওয়া পর্যবেক্ষকগণ। বৃষ্টির অভাবে দক্ষিণাঞ্চলের মাঠে থাকা বোরো ধানে বাড়তি সেচ যোগাতে হচ্ছে। বোরো ধানের চারা ইতোমধ্যে পরিপক্ব হয়ে তাতে থোঢ় আসতে শুরু করেছে। এসময় সুষ্ঠু সেচ অত্যন্ত জরুরী বিষয় হলেও দক্ষিণাঞ্চলে বেশীরভাগ পানির উৎসগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে বৃষ্টির অভাবে। পানির স্তরও ক্রমশ নিচে নামছে। ফলে বরিশাল ও ফরিদপুর অঞ্চলের ১১টি জেলার মাঠে থাকা প্রায় সাড়ে ৩ লাখ হেক্টর জমির বোরো ধান নিয়ে অনিশ্চয়তাও ক্রমশ বাড়ছে। চলতি মওসুমে দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি জেলায় উৎপাদিত বোরো ধান থেকে ১৪ লক্ষাধিক টন চাল পাবার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। কিন্তু বৃষ্টির অভাব সে লক্ষ্য অর্জনে মারাত্মক ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে ক্রমশ। লাগাতার তাপপ্রবাহ ও বৃষ্টির অভাবে দক্ষিণাঞ্চলের ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে যে ৪০ লাখ টনের মত তরমুজ উৎপাদনের কথা, তার গুণগত মানসহ ফলন বিপর্যয় ঘটছে। হাজার হাজার তরমুজ চাষীর এবার মাথায় হাত। গ্রীষ্মকালীন সবজির আবাদ ও উৎপাদনও মারাত্মক ঝুঁকির মুখে।
আবহাওয়া বিভাগ থেকে এখনো দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের কোন সম্ভাবনার কথা বলা হয়নি। দিন ও রাতের তাপমাত্রা হ্রাসেরও কোন পূর্বাভাস নেই আবহাওয়া বার্তায়। মৃদু থেকে মাঝারী তাপপ্রবাহে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন চরম বিপর্যয়ের কবলে। বরিশালে ইতোমধ্যে তাপমাত্রার পারদ ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের আশেপাশে ঘোরাফেরা করলেও দক্ষিণÑপশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে তা আরো ১-২ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশী। এমন কি আরো একটু পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতায় তাপমাত্রা ইতোমধ্যে ৪০ডিগ্রী সেলসিয়স অতিক্রম করেছে বলে জানা গেছে। আবহাওয়া বিভাগ আগামী ৪৮ ঘন্টায় সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধির দুঃসংবাদের পাশাপাশি রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার খবর দিয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ অবস্থান করছে যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দক্ষিণাঞ্চল বাদে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে। সে সাথে কোথাও কোথাও শিলা বৃষ্টির কথাও বলা হয়েছে। তবে দেশের অন্যত্র আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
দক্ষিণের ফরিদপুর অঞ্চলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমের খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তা থেকে আপাতত রেহাই মেলার কোন পূর্বাভাস নেই আবহাওয়ার বুলেটিনে। এমনকি আজ সকালের পরবর্তী ৪৮ ঘন্টায়ও তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি অব্যাহত থকার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। ফলে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য বর্তমান দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে রেহাই মেলার কোন খবর নেই আপাতত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তাপপ্রবাহে দক্ষিণাঞ্চলে দুর্বিষহ জনজীবন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ