পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামী আরবী সনের প্রথম মাস মহররম এই মাসের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। এই মাসের দশ তারিখে সংঘটিত হয়েছে কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা। যে ঘটনা অত্যন্ত নিষ্ঠুরও হৃদয়বিদারক। হযরত ইমাম হোসাইন (রা:) কারবালা প্রান্তরে আশুরার দিন শহীদ হয়েছিলেন বলেই যে আশুরার মর্যাদা ইসলামী শরীয়তে সমধিক তা’নয়। বরং আশুরার দিনের মর্যাদার আরও কারণ আছে। ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিখিত এমন অনেক মর্যাদাপূর্ণ ঘটনা রয়েছে যেগুলোর সাথে আশুরার দিবসটি ওতপ্রোতভাবে বিজড়িত। নিম্নে আমরা সেগুলোর পরিচয় তুলে ধরতে প্রয়াস পাব। ইনশা আল্লাহ! (১) রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর কলিজার টুকরা, জান্নাতী যুবকদের সর্দার সাইয়্যেদেনা ইমাম হুসাইন (রা:) ৬১ হিজরীর ১০ মহররম শুক্রবার আশুরার দিনে কারবালা প্রান্তরে শাহাদাত বরণ করেন। ইমাম হুসাইন (রা:)-এর সঙ্গীদের মধ্যে ঐদিন ৭২ জন সত্যের নির্ভীক সৈনিকও শাহাদাত বরণ করেন। তখন ইমাম হুসাইন (রা:)-এর বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর ৬ মাস ১৫ দিন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া : ১/১৩২ পৃ:) (২) মহররম মাসের ১০ তারিখে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত হযরত আদম (আ:) ও বিবি হাওয়া (আ:)-এর তাওবাহ কবুল করেছিলেন। এই দম্পতি যুগল আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের নিকট বিনীতভাবে আরজ করেছিলেন, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা নিজেদের উপর অন্যায়, অত্যাচার করেছি। আপনি যদি ক্ষমা না করেন ও দয়া না করেন, তাহলে আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব। (সূরা আ’রাফ : ক্রমিক নং ৭, আয়াত ২৩, পারা ৮, রুকু-২)
(৩) আশুরার দিবসে হযরত নূহ (আ:)-এর নৌকা জুদী পাহাড়ে অবস্থান করেছিল এবং তাঁর সাথীগণ জমীনে অবতরণ করেছিলেন এবং অবিশ্বাসী কাফেররা চিরতরে ধ্বংস হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে হযরত কাতাদাহ (রা:) হতে বর্ণিত আছে: রজব মাসের ১০ তারিখে হযরত নূহ (আ:) নৌকায় আরোহন করেছিলেন এবং ১৫০ দিন ভ্রমণ করার পর নৌকাটি জুদী পর্বতের ওপর স্থিতি লাভ করে। সেখানে নৌকাটি এক মাস অবস্থান করে। আশুরার দিবসে হযরত নূহ (আ:) দলবলসহ নৌকা থেকে জমীনে অবতরণ করেছিলেন। (সূরা হুদ : ক্রমিক নং ১১, আয়াত ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, পারা-১২, রুকু-৪) এবং সূরা মুমিনুল : ক্রমিক নং ২৩, আয়াত ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, পারা ১২, রুকু-২)
(৪) হযরত ইব্রাহীম (আ:) নমরুদের অগ্নিকুন্ড হতে আশুরার দিবসেই মুক্তি লাভ করেছিলেন। জ্বলন্ত আগুন ফুল বাগানে পরিণত হয়েছিল। মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেছেন : আমি হুকুম করলাম, হে আগুন! তুমি ইব্রাহীমের উপর শীতল ও শান্তি দায়ক হয়ে যাও। সঙ্গে সঙ্গে এই অনলকুন্ডটি হযরত ইব্রাহীম (আ:)-এর জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জান্নাতে পরিণত হয়ে গেল। (সূরা আম্বিয়া : ক্রমিক নং ২১, আয়াত ৬৮, ৬৯, ৭০, পারা ১৭, রুকু-৫)
(৫) হযরত মূসা (আ:) আশুরার দিন সদল বলে নীল নদ অতিক্রম করেছিলেন এবং আল্লাহ দ্রোহী ফেরাউন ও তার সেনাবাহিনী নীলনদে নিমজ্জিত হয়ে ভবলীলা সঙ্গে করেছিল। আর হযরত মূসা সর্ব প্রথম যেদিন আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের সাথে কথা বলেছিলেন, সে দিনটি ছিল আশুরার দিন। (সূরা ত্বাহা : ক্রমিক নং ২০, আয়াত ৭৭, ৭৮, পারা ১৬, রুকু-৪ এবং সূরা যুখরুফ : ক্রমিক নং ৪৩, আয়াত ৫৫, ৫৬, পারা-২৫, রুকু-৫)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।