পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেবর-ভাবির দীর্ঘ দিনের পরকীয়া বাস্তবে রূপ দিতেই পরিকল্পিতভাবে ভাড়াটে খুনীদের দিয়ে হত্যা করা হয় মনিরুজ্জামান মনিরকে। মনির হত্যার পরিকল্পনা করে তার স্ত্রী কাজল রেখা। আর সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে তার দেবর (নিহতের ভাই) আজমল হক মিন্টু। এজন্য এক লাখ টাকায় তিন ভাড়াটে খুনির মাধ্যমে মনিরকে হত্যা করায় মিন্টু। মনিরকে হত্যার রহস্য উদঘাটনের পর গতকাল শনিবার রাজধানীর গুলশানের উপ-পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গুলশান বিভাগের ডিসি মোস্তাক আহমেদ। স্বামী হত্যার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করে গত শুক্রবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছে কাজল। এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ৮ সেপ্টেম্বর বাড্ডা থানাধীন সাঁতারকুলের মেরুল হিন্দু পাড়ার রাম মঙ্গলের বাড়ির পাশে খোলা মাঠ থেকে মনিরুজ্জামান মনিরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার গলা ও পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল। অজ্ঞাত অবস্থায় পড়ে থাকা লাশ হাসপাতাল মর্গে শনাক্ত করে ভাই আজমল হক মিন্টু। এরপর বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা করে মিন্টু। তবে পুলিশের দৃষ্টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঘুরিয়ে দিতে মামলায় হত্যাকান্ডকে ছিনতাইকারীদের কাজ বলে ধারণার কথা উল্লেখ করে সে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ হত্যা মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ নিহত মনিরের স্ত্রী কাজলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা এবং নিজে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে কাজল। দীর্ঘ ৮ বছরের অনৈতিক সম্পর্কের এক পর্যায়ে মিন্টু বিয়ের প্রস্তাব দেয় কাজলকে। কিন্তু দুই সন্তানের জননী কাজলের জন্য বাধা ছিল তার স্বামী মনির। এ কারণে মনিরকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করে সে। আর সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে মিন্টু। ভাবির কথা শুনেই বড় ভাই মনিরকে হত্যা করতে তিন ভাড়াটে খুনির সঙ্গে ১ লাখ টাকার চুক্তি করে ছোট ভাই মিন্টু। নিহত মনিরের গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, এরপর তার দেয়া তথ্য এবং জবানবন্দির ভিত্তিতে শুক্রবার রাতেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছোট ভাই আজমল হক মিন্টুসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে বাড্ডা থানা পুলিশ। গ্রেফতার অন্যরা হলো - আব্দুল মান্নান, সোহাগ ওরফে শাওন ও ফাহিম। সংবাদ সম্মেলনে গুলশানের ডিসি মোস্তাক বলেন, মনির ফেনীতে কাজ করতেন। তার পরিবার থাকতো গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরে। স¤প্রতি তিনি বাড়ি যান। তখনই হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘাতক মিন্টু তার বড় ভাই মনির কে ফোন দিয়ে জানায়, আমি বিয়ে করবো, তাই ঢাকায় মেয়ে দেখেছি, তুমি এসে দেখে যাও। এতে মনির রাজি না হওয়াতে বারবার অনুরোধ করতে থাকে মিন্টু। তার স্ত্রী কাজলও ঢাকা যাওয়ার জন্য তাকে বলে। মনির দিনাজপুর থেকে ঢাকার গাবতলী আসেন। ঢাকা শহর ভালোমতো না চেনায় ছোটভাইকে ফোন দিলে মিন্টু মান্নানের ফোন নম্বর দেয় এবং মান্নান তাকে নিয়ে আসবে বলে জানায়।
তিনি আরো বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী মান্নান বাড্ডা সাঁতারকুলের নির্জন ওই স্থানে মনিরকে নিয়ে যায়। এ সময় ভাড়াটে খুনি শাওন ও ফাহিম সেখানে উপস্থিত হয়। তাদের হাতে ছুরি ছিল। এই ছুরি দিয়ে মনিরের গলায় প্রথমে ফাহিম এর পরপরই মান্নান আবারও আঘাত করে। মনির মাটিতে পড়ে যায়। এরপর তাদের নির্দেশ মতো শাওন ছুরি দিয়ে মনিরের পেটে উপর্যুপরি আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর হত্যাকান্ডের বিষয়টি মিন্টুকে জানায় মান্নান। এরপর মিন্টু বিষয়টি তার ভাবি কাজল রেখাকে জানায়।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিসি মোস্তাক আহমেদ জানান, কিলিং মিশনশেষে চুক্তির অগ্রিম পাওয়া ৩০ হাজার টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয় খুনিরা। এ টাকার মধ্য থেকে মান্নান নেয় ১০ হাজার, ফাহিমকে দেয়া হয় ৫ হাজার এবং বাকি ১৫ হাজার টাকা নেয় শাওন। তিন ভাড়াটে খুনি থাকতো কড়াইল বস্তিতে। তাদের ৩০ হাজার টাকা দেয়া হয়। বাকি ৭০ হাজার টাকা পরে দেবে বলে জানিয়েছিল আসামি মিন্টু। মিন্টু ঢাকার একটি সিকিউরিটি কোম্পানিতে কাজ করতো। মাঝে একবার অসুস্থ হয়ে গ্রামের বাড়িতে গেলে ভাবির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে যায় সে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।