Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দোলনার দোলা

অসংখ্য গর্ত, দিনে চলে ২৫ হাজার যানবাহন

চান্দিনা (কুমিল্লা) থেকে মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল : | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৬ এএম | আপডেট : ২:৫৮ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শুধুই দুর্ভোগ। বাসে ঘুমিয়ে থাকা যাত্রী হঠাৎ জেগে মনে করতে পারেন যেন দোলনায় রয়েছেন। সড়কের সঙ্গে মালবাহী বাহনের অসামঞ্জস্য, অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল ছাড়াও দুর্ভোগের পেছনে অন্যতম কারণ ত্রুটিপূর্ণ মেরামত। মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় বর্তমানে উঁচু নিচু হত্তয়ায় যানবাহন চলছে খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় হেলেদুলে মন্থরগতিতে।
স্টার লাইন পরিবহনের যাত্রী ইমরান হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি সেতু থেকে নামার পথে এবং টোল প্লাজা অতিক্রম করার সময় উঁচু আর নিচুতে হেলেদুলে গাড়ি চলার কারণে মনে হয় এই মুহুর্তে যেন গাড়িটি কাঁত হয়ে উল্টিয়ে যাবে। এশিয়া লাইন গাড়ির চালক রমজান আলী বলেন, চার লাইনের কাজ শেষ হত্তয়ায় ভেবেছিলাম আরোও কয়েক বছরেও মহাসড়কে ভাঙন ধরবে না। অথচ দুই বছর যেতে না যেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে চার লেন এ মহাসড়ক। অথচ নির্মাতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই সড়কের ভারবাহী ক্ষমতার কোনো ক্ষতি হবে না, কোনো সংস্কারও করতে হবে না।
মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় খানা খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায়ই খানাখন্দ ভরাটে কাজ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। এছাড়া কুমিল্লা অংশের পদুয়ারবাজার, বেলতলী, ঝাগুড়ঝুলি, দুর্গাপুর, আলেখারচর, আমতলী, নিশ্চিন্তপুর, কালাকচুয়া, নিমসার, কোরপাই, চান্দিনা, মাধাইয়া, ইলিয়টগঞ্জ এলাকায় প্রতিনিয়ত মহাসড়কের উপরের অংশের পাথর তুলে পুনরায় বিটুমিনের প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেগুলোও দীর্ঘস্থায়ী না হওয়ায় খানা-খন্দক সৃষ্টি হচ্ছে নিয়মিত। বিশেষত মহাসড়কের কুমিল্লা থেকে ফেনী পর্যন্ত এমন বেহাল দশা। মহাসড়কের ৯৯ কি‡লামিটার দূর‡ত্বর এলাকাটি‡ত প্রতি বর্ষায় শুরু হয় †ভাগাšিÍ। বা‡ড় দুর্ঘটনা আর আতঙ্ক। গত বছর মহাসড়‡কর এসব ¯’া‡ন অতিরিক্ত খানাখ›দ স„ষ্টি হ‡ল সড়ক ও জনপথ বিভা‡গর সং¯‹ার ক‡রন। কিš‘ বছর না †পরু‡তই †দখা †দয় †সই দ„শ্যপট। সং¯‹ারক…ত এ সড়কটি †বশিদিন না †টকায় স‡›দহ করা হ‡”ছ কা‡জর মান নি‡য়।
সূত্র জানায়, বর্তমান সম‡য় †দ‡শর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত এ মহাসড়কটি দি‡য় প্রতিদিন গ‡ড় প্রায় ২৫ হাজার যানবাহন চলাচল কর‡ছ। †মাট যানবাহ‡নর প্রায় ৪০ ভাগ হ‡”ছ ট্টাক ও লরি। চলমান যানবাহনগু‡লার †পছ‡নর দুই চাকার স‡র্বা”চ ২০ টন ওজন পরিবহ‡নর ধারণ ক্ষমতা হি‡স‡ব ডিজাইন করা হ‡য়ছিল। অথচ সি‡ঙ্গল এ‡ক্স‡লর ট্টাক অথবা লরি পণ্য বহন কর‡ছ প্রায় ৩৫ টন। ত‡ব চালকদর অভি‡যাগ, ২০১৬ সা‡ল নির্মিত দুই লেনের চে‡য় ১৯৯৪ সা‡ল নির্মিত অপর দুই লেন এখনো অনেক মজবুত রয়েছে। মহাসড়কে চলাচলরত হানিফ পরিবহনের চালক সেলিম মিয়া জানান, আমি আজ ২০ বছর যাবৎ এই রো‡ড গাড়ি চালাই। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চলাচলরত যানবাহন অতিরিক্ত ব…দ্ধি, দুর্ঘটনা রোধ ও পরিবহ‡নর ব্যবর গতি ফিরি‡য় আন‡ত সরকার মহাসড়ক‡ক ফোর লে‡ন রƒপাšÍর কর‡লও আমা‡দর ভা‡গ্যর পরিবর্তন ঘ‡টনি। প্রতিটি মহাসড়ক যখন দুই লেনে ছিল, তখনও এতো আতংক নিয়ে গাড়ি চালাইনি। এখন গাড়ি টানতেও রীতিমত আতংকে থাকি। গতকাল যেখানে গর্ত ছিল না আজ দেখি সেখা‡ন গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। পরের দিন দেখি ওই গর্ত অনেক বড় হয়ে গেছে। আর ওইসব গর্তগুলোতে চাকা পড়লে যাত্রীরা যেমন আমাদের গালাগাল করে অপর দিকে গাড়ির নিয়ণ্ত্রণ রাখতেও আমাদের যথেষ্ট কষ্ট হয়। অথচ চার লেন সড়কটির নকশা করার সময় সম্মিলিত আদর্শ স্কেল বা ভারবহন ক্ষমতা ধরা হয় সাড়ে নয় কোটি, যা ২০২৩ সালে অতিক্রম করার কথা। কিন্তু দেখা গেছে, ২০১৭ সালেই আদর্শ স্কেলের এর ভারবহন ক্ষমতা অতিক্রম করেছে সড়কটি। ২০১৭ সালে চার লেনে ট্টাফিক ও এক্সেল লোড সমীক্ষা থেকে এ তথ্য বেরিয়ে আসে। এতে দৈনিক প্রায় ২৫ হাজার যান (যেগুলোর মধ্যে ১০-১২ হাজার ওভারলোডেড ট্টাক-কার্ভাডভ্যানও রয়েছে) চলাচল করায় মহাসড়কটিতে মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। সওজের গাইডলাইন অনুসরণ না করায় মহাসড়কটির আয়ুস্কালও দ্রুত কমে আসছে। এতে আগামী বছরগুলোতে সড়কটির উপরিভাগ স্বাভাবিক রাখা দুস্কর হয়ে উঠবে।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, মহাসড়ক সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু মেরামতের স্বল্পসময়ের ব্যবধানে ব্যয়বহুল সড়কটির বারবার সংস্কারের বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। তবে কুমিল্লা সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হায়দার জানান, মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ঠিকাদাররা প্রতিদিনই সংস্কার কাজ করছেন।



 

Show all comments
  • Nasir Tushar ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১১:৩৩ এএম says : 0
    উন্নয়নের মহাসড়ক বলে কথা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সড়ক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ