Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ঢিলেঢালা বাজার মনিটরিং

যথাযথ প্রয়োগ সিন্ডিকেট বেপরোয়া আছে আইন, নেই

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম


আইন আছে, বাস্তবে প্রয়োগ নেই। আইনটি হচ্ছে বাজার নিয়ন্ত্রণ আইন। ওই আইন প্রয়োগ ও বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য জেলায় জেলায় মনিটরিং ব্যবস্থা চালু থাকার কথা। বাস্তবে নেই বললেই চলে। এতে ভোক্তা সাধারণ নানাভাবে ঠকছেন প্রতিনিয়ত। কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনকারীরাও একইভাবে ঠকছেন। বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে আইনটির প্রয়োগ কাগজ কলমেই কার্যতঃ সীমাবদ্ধ। দেশের অধিকাংশ জেলায় বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রায়ই মিটিং হয় নামমাত্র।
বাজারে পর্যবেক্ষণ করে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নেওয়া হয় না বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, অধিকাংশ জেলার বাজার কর্মকর্তারা শুধু কোন জিনিসের কি মূল্য তার তালিকা করে সংশিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানোর রুটিন ওয়ার্ক করে থাকেন। এর বাইরে কোন দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় না। কিভাবে এবং কেন মূল্য বৃদ্ধি হলো, তার কারণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন না।
সূত্র জানায়, বাজার কর্মকর্তারা বেশীরভাগক্ষেত্রে জেলা ও উপজেলার বাজারে গিয়ে মূল্য তালিকা ঝুলানো হয়েছে কিনা, ক্রয় বিক্রয় রশিদ ব্যবহার হচ্ছে কিনা, কোন পণ্যের কত মূল্য-সাধারণত এটি দেখে থাকেন। মাঠপর্যায়ের একজন বাজার কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে এর বাইরে সাধারণ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের সুযোগ বাজার কর্মকর্তাদের নেই। নাম প্রকাশ করতে নিষেধ করে একজন জেলা বাজার কর্মকর্তা বলেন, জোরদার মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় মুনাফালোভীরা কোন নিয়ম নীতি মানে না। তারা যেটি মূল্য নির্ধারণ করবে সেটিই যেন আইন।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ১৯৬৪ সালের এগ্রিকালচারাল প্রডিউস মার্কেটস রেগুলেশন এ্যাক্ট ও ১৯৮৫ সালের সংশোধিত বাজার নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৬(১) ও ১৬(২) ধারামতে কৃষিজাত ও ভোগ্যপণ্যের ক্রয়মূল্য, বিক্রয়মূল্য ও মজুদ পরিস্থিতির তদারকির ক্ষমতা রয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজার কর্মকর্তাদের। কিন্তু বাস্তবে কোথাও আইনটির প্রয়োগ হতে দেখা যায় না। তাছাড়া ১৯৫৩ সালের মজুদবিরোধী আইন ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইনেরও প্রয়োগ নেই। মুক্ত বাজার অর্থনীতির কোপানলে ওইসব আইন কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। সেজন্য ক্রমাগতভাবে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে বাজার।
সূত্র জানায়, বলে অভিযোগ। উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়, যশোরে সবজি উৎপাদনের রেকর্ড রয়েছে। এখানে মাঠে এক মূল্য আর বাজারে ২/৩ গুণ বেশী মূল্য গুণতে হচ্ছে ভোক্তাদের। জেলার শহর আশোশের ৮/১০ কিলোমিটারের মধ্যে সব সবজির মাঠ এবং পাইকারী হাট। কেউ কখনো গিয়ে তদারকি করার প্রয়োজনবোধ করেন না। খাদ্য অধিদপ্তর, বাজার কর্মকর্তা ও মনিটরিং সেল সূত্র জানায়, দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। মাঝেমধ্যেই জেলা বাজার কমিটির বৈঠক হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে মাঠেও নামছেন কর্মকর্তারা। কিন্তু বাস্তবে মাঠপর্যায়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে ঢিলেঢালা অবস্থা দেখে কোনভাবেই আশ্বস্ত হতে পারছেন না ভোক্তসাাধারণ। একেক বাজারে একেক মূল্য হাকছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। মূল্যবৃদ্ধির জন্য তারা দোষারোপ করছেন পাইকারী ও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের। যশোর, খুলনা ও কুষ্টিয়াসহ কয়েকেটি জেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা মনিটরিং কমিটি নিয়ন্ত্রণ করার যতটুকু চেষ্টা করছে তা মূলত শহরকেন্দ্রিক। গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারে দ্রব্যমূল্যের ব্যাপারে খোঁজ নেয়ারও কেউ নেই। শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজার ও মুদি দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য আরো বেশী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিন্ডিকেট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ