বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যেই জিএসপি ইস্যুই ছিল বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা কাঠামোর (টিকফা) প্রথম তিনটি বৈঠকের প্রধান এজেন্ডা। এখন সেটিই হারিয়ে গেছে। দু’বছর আগেও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বিভিন্ন সময় বলতেন, ‘জিএসপি না পেলে টিকফা অর্থহীন’।
সেই টিকফার চতুর্থ বৈঠক ১৩-১৪ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে শুরু হয়েছে। কিন্ত সেখানে জিএসপি নিয়ে কোনো আলোচনা হবে না বলে জানা গেছে। মূলত টিকফার তৃতীয় বৈঠক থেকেই বিতাড়িত হয়েছে এই ইস্যুটি। গতবছর ১৭ মে ঢাকায় ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের আগ পর্যন্ত বলা হচ্ছিলো, জিএসপিই প্রধান ইস্যু। কিন্তু বৈঠক শেষে বাণিজ্য সচিব সুবাশীষ বসু জানালেন, জিএসপি নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনাই হয়নি। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে বাজার সুবিধাই বাংলাদেশের অন্যতম স্বার্থ বলে এখনও মনে করেন ব্যবসায়ী সমাজ।
২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ ৯৭ শতাংশ পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রফতানিতে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) পেয়ে এসেছে। তবে এরমধ্যে পোশাক ছিলো না। এজন্য জিএসপি সুবিধা নিয়ে রফতানির পরিমাণ সামান্যই ছিলো। কিন্ত ২০১৩ সালের এপ্রিলে রানা প্লাজা ধসের দুই মাসের মাথায় ২৮ জুন জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর বাংলাদেশের কর্মপরিবেশ উন্নত করতে ধরিয়ে দেওয়া হয় ১৬টি শর্ত।
এর এক বছর পরে ২০১৪ সালে টিকফার প্রথম বৈঠকে জিএসপিই ছিলো আলোচনার প্রথম বিষয়। এরপর ২০১৫ সালের দ্বিতীয় বৈঠকেও প্রাধান্য পায় জিএসপি। এ দু’টি বৈঠকেই বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৫ সালেই জিএসপি অ্যাকশন প্ল্যানের সব শর্ত পূরণ করে বাংলাদেশ। ওই বছরই বাণিজ্যমন্ত্রী একাধিক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, জিএসপি না পেলে টিকফা অর্থহীন হয়ে যাবে।
এরপর গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সময় বাণিজ্যমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তখন বলেছিলেন, কেয়ামত পর্যন্ত কাজ করলেও যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত শেষ হবে না। তারা একের পর এক শর্ত দিয়েই যাবে। পরে অবশ্য তিনি বলেছিলেন, আমরা আর জিএসপি চাইবো না।
গত ফেব্রুয়ারিতেও সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে জিএসপি সুবিধা পাওয়ার আশা করে না বাংলাদেশ। কারণ বাংলাদেশ যতো শর্ত পূরণ করুক তারা দেবে না। তাদের জিএসপি আমাদের প্রয়োজন নেই। সারা পৃথিবীতে ৩৫ বিলিয়ন ডলার রফতানি করে বাংলাদেশ।
জানা গেছে, বাংলাদেশ এখন বাজার সুবিধা চাওয়ার পরিবর্তে নিজেদের অর্থনীতিকে সুসংহত করতে বড় বিনিয়োগ চায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। এছাড়া পোশাকের দাম বাড়ানোর জন্য চাপ দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া শর্তের অনেক বেশি পূরণ করেছি। বাংলাদেশে ৭২টি গ্রিন কারখানা আছে। এর অর্ধেক আছে এমন দেশ বিশ্বে আর একটি নেই। এই অবস্থায় জিএসপি আর চাইতে হবে কেন? যুক্তরাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব জিএসপিসহ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেওয়া। বাজার সুবিধা না পেলেও প্রতিযোগিতা করে বাজার দখলে রাখার সক্ষমতা বাংলাদেশের হয়েছে বলেও তিনি মনে করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।