রংপুরের পীরগাছায় গত তিন দিন ধরে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি ও হঠাৎ পানি কমে যাওয়ায় তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। তিস্তা নদীর ভাঙনে ৪টি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীনসহ প্রায় পাঁচটি গ্রাম, দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ এবং একটি ক্লিনিক হুমকির মুখে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ওই ভাঙন কবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ফসলী জমিসহ বসতভিটা ভাঙনের কবলে পড়েছে। ফলে বারবার নদী ভাঙনে নি:স্ব পরিবারগুলো এখন আশ্রয় হারিয়ে অন্যের ভিটায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। স্থানীয়ভাবে কাজকর্ম না থাকায় দুই বেলা খাবার জোটাতেও পারছে না তারা। উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর পাড়ে অবস্থিত গাবুড়ার চর, শিবদের চর, কিশামত ছাওলা, চর শিবদেবসহ ৬টি গ্রাম গত দুই দিনে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে।
বাড়িঘর ও ফসলি জমিসহ বসতভিটা হারিয়ে প্রায় দুই হাজার পরিবার এখন নি:স্ব। বর্তমানে নদীগর্ভে বিলীন হওয়া ওইসব পরিবারের লোকজন খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সেই সাথে গ্রামগুলোতে অবস্থিত একটি মাদ্রাসা, একটি ক্লিনিক, তিনটি হাটবাজার ও পাচঁটি মসজিদসহ প্রায় তিন হাজার পরিবারের মাঝে নদী ভাঙনের আশঙ্কায় বিরাজ করছে আতঙ্ক। বর্তমানে নদী পাড়ের লোকজন রাত জেগে সম্পদ রক্ষার শেষ চেষ্টাটুকু চালিয়ে যাচ্ছে। নদী ভাঙনে কয়েক শ’ একর জমিতে লাগানো কলাবাগান বিলীন হয়ে গেছে। ফলে নদী পাড়ের লোকজন এখন চরমভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে।
এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে এ ভাঙনের শিকার হতে হচ্ছে প্রতি বছর নদী পাড়ের লোকজনদের। তারা জানান, ছাওলার ১০নং বোল্ডারের পাড় থেকে আরও ৩ কিলোমিটার বোল্ডার দিয়ে বাধঁ নির্মাণ করে নদী শাসন করলে এ গ্রামগুলো রক্ষা হতো। কর্তৃপক্ষ অপরিকল্পিতভাবে ১নং ও ২নং বেড়ি বাধঁ নির্মাণ করলেও নদী ভাঙনের হাত থেকে গ্রামগুলো রক্ষা পাচ্ছেনা। এলাকাবাসী জরুরি ভিত্তিতে বোল্ডারের মাথা হতে পূর্বশিবদেবচর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকা বোল্ডার ফেলে বাধঁ নির্মাণ করে নদী ভাঙনের হাত থেকে গ্রামগুলি রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানায়।