বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
অল্প পুঁজিতে অধিক লাভবান হওয়ায় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় খাঁচায় মাছ চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেকার যুবক সহ ব্যক্তি পর্যায়ে চাষাবাদ করে ইতিমধ্যে এ উপজেলার মৎস্যচাষীরা লাভের মুখ দেখছে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা পেলে নদ-নদী ও মুক্তজলাশয়ে খাঁচায় মাছ চাষাবাদের মাধ্যমে বেকার যুবক-যুবতী সহ সাধারণ মানুষের ভাগ্য বদলের অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
ঝুঁকিবিহীন অল্প পুঁজিতে অধিক লাভ হওয়ায় এ উপজেলায় খাঁচায় মাছ চাষ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দিন দিন এ উপজেলায় বৃদ্ধি পাচ্ছে এ পদ্ধিতে মাছের চাষাবাদ। অল্প দিনে এ চাষাবাদ করে উল্লাপাড়ার কয়েকজন মৎস্যচাষী ইতিমধ্যে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। তাদের দেখা দেখি অন্যরাও এ পদ্ধতিতে মাছ চাষের ঝুঁকে পড়েছে। এ উপজেলায় খাঁচায় মাছ চাষ করে সাফলতা অর্জনকারীদের মধ্যে অন্যতম উল্লাপাড়া উপজেলার চরঘাটিনা গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন সরকারের ছেলে ফজলুল হক। কিছুদিন আগেও সামান্য ব্যবসা করে তার সংসার চলছিল না। পরিচিত একজনের উৎসাহে সে পৌর শহরের চলমান করতোয়া নদীর ঘাটিনায় খাঁচায় মাছ চাষ শুরু করে ২০১৫ সালে। প্রথমে ২০টি খাঁচায় পরীক্ষামূলক মাছচাষ শুরু করে ফজলুল। সাফলতা পেয়ে সে খামার বর্ধিত করে এখন ৪০টি খাঁচায় মনোসেক্স তেলাপিয়া মাছের চাষাবাদ করছে। তার খামারে দু’জন কর্মচারীসহ সব খরচ বাদে তার খামার থেকে এখন বছরে প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকা আয় করছে সে। ফজলুল হক জানান, তার খাঁচায় চাষকৃত মাছ গুলো ওজনে প্রায় ১ কেজি। এ গুলো সে স্থানীয় আড়তে ১শ’ ৪৫ থেকে ১শ’ ৫০ টাকায় বিক্রি করছে। দাম ভাল থাকায় তিনি এ বছরও উচ্চ লাভের আশা করছেন। তিনি আরো বলেন, আমার মত এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে দেশের বেকার যুবক-যুবতী সহ সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব। ফজলুলের সফলতার পর তার হাত ধরেই এ পদ্ধতিতে মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে এ উপজেলার মৎস্যচাষীরা। এ উপজেলায় এখন ফজলুলের মত প্রায় ৩০ জন মৎস্যচাষী খাঁচায় মাছ চাষ করছে।
গতকাল শনিবার সরেজমিন উপজেলার চরসাতবাড়িয়া গ্রামের মৎস্যচাষী শফিউল মোমেন ও জাহাঙ্গীর আলমের খাঁচায় মাছচাষ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, তারা চলমান করতোয়া নদীতে প্রায় ৩২টি খাঁচায় মনোসেক্স তেলাপিয়া মাছের চাষাবাদ করছে। প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৭ সালে তারা এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করে। মাছের দাম কম থাকায় তারা প্রথমে লাভের মুখ না দেখলেও এখন লাভবান হচ্ছে। এ খামারের মালিক জাহাঙ্গীর আলম জানালেন, উল্লাপাড়ায় মাছের উদ্ধুত্ত্ চাষাবাদ, রপ্তানি না হওয়া ও খামার থেকে সরাসরি মাছ কেনার কোন ক্রেতা না থাকায় বাধ্য হয়ে স্থানীয় আড়তে কম দামে মাছ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। এতে তারা মাছ বিক্রি করে তেমন লাভবান হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, বিদেশে মাছ রপ্তানি ও খাঁচায় মাছচাষীদের সরকারী পর্যায়ে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হলে এ চাষাবাদের মাধ্যমে বিপুল পরিমান মানুষের ভাগ্য বদল সম্ভব।
উল্লাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. বায়েজিদ আলম জানান, উল্লাপাড়ায় এখন প্রায় ৩০ জন মৎস্যচাষী ২শ’ খাঁচায় এ পদ্ধতিতে মাছ চাষাবাদ করছে। এখানকার চাষীদের এক একটি খাঁচায় ৮শ’ থেকে ১ হাজার কেজি মাছ উৎপাদন হচ্ছে। চলমান নদী ও জলাশয়ে কোন টাকা ছাড়াই, অল্প পুঁজিতে মাছ চাষীরা ভাল লাভবান হচ্ছেন। ইতিমধ্যে আমরা প্রায় ৩৮ জন খাঁচায় মাছচাষীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। একজন চাষীকে ১০টি খাঁচা স্থাপন করে দেয়া হয়েছে। আমার দপ্তর থেকে খাঁচায় মাছ চাষীদের সার্বিক সহায়তা ও দিকনির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। খাঁচায় মাছ চাষীরা এখন উল্লাপাড়ার মাছ উৎপাদনে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।