পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সোয়া কোটি টাকার জনবল কাঠামোর বাস্তবায়ন নেই
তিন ধরনের কর্মীর কাজ একই বেতন-ভাতা ভিন্ন
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পিছু ছাড়ছে না অব্যবস্থাপনা। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালনার জন্য প্রায় এক যুগ আগে কোম্পানি করা হয়েছে। আজও প্রতিষ্ঠানটির কোনো কার্যকর জনবলকাঠামো তৈরী করা যায়নি। নেই কোন অনুমোদিত কার্যবিধিও। এতে করে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। বিমানের লাভ কারো চোখে পড়ছে না। উল্টো ক্ষতির দৃশ্যই দেখছে সবাই।
সূত্র জানায়, অধিক লাভের আশায় সরকার বিমানকে ১১ বছর আগে কোম্পানি করেছে। এরপর ১ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয় করে একটি বিদেশী প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে জনবলকাঠামো তৈরী করা হয়েছিল। তা আজও কার্যকর করা হয়নি। বর্তমানে তিন ধরনের কর্মী তিন রকম বেতন ভাতায় একই কাজ করছেন। এর মধ্যে অনেকে স্থায়ী কর্মী, পেনশনপ্রাপ্য পি-নম্বরধারী। অনেকে আছেন জি-নম্বরধারী। এরা আবার পেনশন নয়, গ্র্যাচুইটি পাবেন। চুক্তিভিত্তিক মজুরি হিসেবে সি-নম্বরধারী রয়েছেন। আরেকটি শ্রেণি ক্যাজুয়াল কর্মী হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে মোট জনবলের অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ২ হাজার ৪০০ জন ক্যাজুয়াল রয়েছে।
আবার অনেক স্থায়ী কর্মীদের ওপর চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের জেষ্ঠতা দেয়ার নজির রয়েছে। এতে করে কর্মীদের মাঝে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে বিমানের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ এনামুল বারী ইনকিলাবকে জানান, চলতি বছরের জুন মাসে চাকরিবিধি এবং জনবলকাঠামো কার্যকর করার চেষ্টা করা হয়েছিল। বেশ কিছু কারণে তা সম্ভব হয়নি। আরও সময় লাগবে। আর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
ফ্লাইট পরিচালনা করছে না এমন দেশেও বিমানের অফিস রয়েছে। আছেন কান্ট্রি ম্যানেজার। রয়েছে জেনারেল সেলস এজেন্ট। হংকংয়ে অফিস এখনো চলছে। একইভাবে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে অফিস ও জনবল ছিল বছরের পর বছর। পরে তা বন্ধ করা হয়েছে। ব্যবসায় ভাল করা এবং যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য হলিডে উইংস খুলেছে বিমান। এ জন্য বলাকা ভবনে ভিন্ন অফিস ও জনবল রয়েছে। আবার হলিডে উইংস চালানোর জন্য বেসরকারি একটি ভ্রমণ কোম্পানিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এটি বিমানের বিপণন ও বিক্রয় শাখার নিয়ন্ত্রণে।
দেশ-বিদেশে বিমানের অসংখ্য ট্রাভেল এজেন্সি রয়েছে। তারা টিকেট বিক্রি করছে। বিমানের নিজস্ব বিক্রয় কেন্দ্র ও জনবল রয়েছে। এরপরও বেশি কমিশনে পুরো ব্যবসাটি বাইরের একটি প্রতিষ্ঠানকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিমানের বিপণন ও বিক্রয় শাখার সাবেক পরিচালক (সদ্য বদলি হওয়া) মোহাম্মদ আলী আহসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ইনকিলাবকে জানান, বেশি কমিশন দেয়ার সুযোগ নেই। এটি ভিন্ন একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হয়েছে। বেসরকারি ভ্রমণ কোম্পানিকে টিকিটের কমিশন কত দেয়া হয়েছে তা মনে নেই।
শুধু হলিডে উইংস নয়, একই প্রক্রিয়ায় একই ভ্রমণ কোম্পানির সহযোগী আরেক প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে বিমানের ইন্টারনেট বুকিং ইঞ্জিন এবং বিমানের লয়ালিটি ক্লাবের সদস্য, যাত্রীদের টিকিট বুকিংসহ বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব। গত ১ জুলাই থেকে নতুন প্রতিষ্ঠান তার সফটওয়্যার সংযোগ দিয়ে পুরনো সংযোগের প্রতিস্থাপন করার কথা। কিন্তু একমাস পরও সেটি চালু হয়নি। আবার আগের প্রতিষ্ঠানকে ফিরিয়ে আনা হয়। এর আগে নতুন প্রতিষ্ঠান সফটওয়্যার, প্রতিস্থাপন এবং পরীক্ষামূলক চালু করতে গিয়ে অসংখ্য হিট পড়েছে জিডিএস কোম্পানি সিটার সাইডে (যা থেকে টিকিট বুকিং বা বিক্রির খুদে বার্তা পাঠানো হয়)।
বিমানের লন্ডন শাখার ব্যবস্থাপক মো. আতিকুর রহমান চিশতি-এর চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরে না আসায় চাকরি হারিয়েছেন তিনি। এ ব্যবস্থাপককে আবার সিনিয়রিটিসহ বিপণন শাখার মহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) পদে পুনঃনিয়োগ দেয়া হয়েছে।
কার্গো শাখায় ৫৫টি স্থায়ী পদ শূন্য ছিল। এসব শূন্য পদের স্থলে ১০০ জনকে চুক্তিভিত্তিক কমার্শিয়াল এ্যাসিসটেন্ট পদে নিয়োগ করা হয়। পরবর্তীতে আবারও স্থায়ী পদে ৫০ জনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। এ নিয়োগ প্রক্রিয়াটি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। পূর্বের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তদের দাবি ছিল স্থায়ী পদে তাদের অগ্রাধিকার পাওয়া। তাদের নিয়োগ না দিয়ে নতুন লোক নিয়োগ করা হয়েছে। অভিযোগ ওঠেছে চুক্তিভিত্তিক ও স্থায়ী নিয়োগেই ব্যাপকহারে বাণিজ্য করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিপণন ও বিক্রয় শাখার সাবেক পরিচালক মো. আলী আহসান সাংবাদিকদের জানান, ৫৫ জন স্থায়ী পদ ও ১০০ জন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ আলাদাভাবে চাওয়া হয়েছিল। এখন অস্থায়ী কর্মীরা তাদের স্থায়ী করার দাবি জানাচ্ছেন। বিমানের জনবলকাঠামো তৈরী হয়ে গেলে এসব সমস্যা থাকবে না।
ফ্লাইট সার্ভিস শাখায় নিয়োগ পদোন্নতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। স্থায়ী কর্মীদের মধ্যে পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে অস্থায়ী বা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তদের। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত দু’জন জুনিয়র পার্সারকে সম্প্রতি নতুন চুক্তি করে অন্যসব জুনিয়র পার্সারের (স্থায়ী কর্মীসহ) ওপর নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ২২০ জন পার্সারের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসন শাখার সূত্র জানায়, দৈনিক মঞ্জুরিভিত্তিক বা ক্যাজুয়াল হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে ৮৯ দিন পর তাদের অন্তত: একদিন কর্মবিরতি দেয়ার নিয়ম। কিন্তু তাদের বাদ দিয়ে অন্যদের ক্ষেত্রে এ নিয়ম অনুসরণ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে লন্ডনে একজন নারী সহকর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পদোন্নতি দিয়ে উপ-মহাব্যবস্থাপক করা হয়েছে। অন্যদিকে হয়রানির শিকার নারী কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। এ বিষয়ে বিমান কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চাইলে কেউই কথা বলতে রাজি হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।