পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঔষধের মান নিয়ন্ত্রণ এবং ভেজাল ঔষধের মজুত, উৎপাদন, বিক্রি ও আমদানি ও রপ্তানীতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নতুন করে ঔষধ আইন করতে যাচ্ছে সরকার। নতুন আইনে লাইসেন্স ছাড়া কোন ব্যক্তি ঔষধ উৎপাদন, আমদানি, বিতরণ, মজুতকরণ, প্রর্দশন ও বিক্রয় করতে পারবে না। পাশাপাশি অনিবন্ধিত ঔষধের ব্যবস্থাপত্র নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া বিধান লঙ্ঘনে ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড অথবা ১০ লাখ টাকার অর্থদন্ড অন্যথায় উভয় দন্ডের বিধান রেখে ঔষধ আইন-২০১৮-এর খসড়া চুড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আগামী সোমবার মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া ড্রাগ অ্যাক্ট-১৯৪০ সালের ধারা-১ ও ড্রাগ কন্ট্রোল অর্ডিন্যান্স-১৮৮২এর ধারা-১ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো ঔষধ আইন-২০১৮ কার্যপত্র সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে জাতীয় ঔষধ নীতি, ২০১৬-এর খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয় সরকার। এর দুই বছর পরে ঔষধ আইন ২০১৮-এর খসড়া চুড়ান্ত অনুমোদন হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি সরকারে আমলে ২০০৫ সালে দেশে প্রথম ঔষধ নীতিমালা করা হয়। গত ১১ বছরে তার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এ নীতিমালা আপডেট করার জন্য এ নতুন আইন করা হচ্ছে। কারণ এরই মধ্যে ঔষধ শিল্পে অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশ অনেক দেশের স্বীকৃতি সনদ পেয়েছে। বর্তমানে ১২২টি দেশে ঔষধ রফতানি করা হয়। বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে ঔষধের মান নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। ঔষধের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি নতুন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে। যার নাম হবে ন্যাশনাল রেগুলেটরি অথরিটি (এনআরএ)। এ কর্তৃপক্ষ ঔষধ নিবন্ধন ও কাঁচামাল নিশ্চিতকরণের কাজ করবে।
আগের ঔষধ নীতিতে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে ঔষধ বিক্রি করা হলে শাস্তি বিধানের বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা ছিল না। নতুন ঔষধ নীতিতে বলা আছে- নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে ঔষধ বিক্রি করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ঔষধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকার প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি বছর অন্তত একবার ঔষধের মূল্য হালনাগাদ করা যাবে। জনগণের অবগতির জন্য সব ওষুধের খুচরা মূল্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
নতুন নীতিমালার আওতায় এখন দেশে অত্যাবশ্যকীয় অ্যালোপ্যাথিক ঔষধের তালিকা বেড়ে ২৮৫টি হয়েছে, যা আগে ছিল ৭০টি। একইভাবে ইউনানির অত্যাবশ্যকীয় ঔষধ ২২৩ ও আয়ুর্বেদিকের ৩৭০টি ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া ওভার দ্য কাউন্টার বা প্রেসক্রিপশন ছাড়া কেনার উপযোগী ঔষধ থাকছে ৩৯টি। এ ছাড়া প্রথম অ্যালোপ্যাথিকের বাইরে আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথিক, ইউনানির মতো ঔষধকেও আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং মহাপরিচালক : ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে একজন মহাপরিচালক থাকবেন। তিনি সরকার থেকে নিয়োগ ক্ষমতা প্রাপ্ত অথবা লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
ঔষুধ নিয়ন্ত্রণ কমিটি : সরকার, একজন চেয়ারম্যান এবং সময়ে সময়ে যা উপযুক্ত মনে করবে সে সংখ্যক সদস্যের সমন্বয়ে একটি ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটি গঠন করবে।
জাতীয় নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার : ঔষধ সস্পর্কিত পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ মুল্যায়ণ, গবেষণার প্রত্যেকটির শীর্ষপদে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন একজন উপযুক্ত কর্মকর্তা থাকবেন, তিনি এই আইনের অধিনে কার্যাবলি সম্পাদন করবেন।
আর্দশ মান : অফিসশিয়াল কমপেনডিয়ায় কোনো ঔষধের সুনিদিষ্ট মনোগ্রাফ পাওয়া না গেলে মান স্থিরীকরণে অফিশিয়াল কমপেনডিয়ায় উল্লেখিত সাধারণ নির্দেশিকা অথবা উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠান থেকে নির্ধারিত স্পেসিফিকেশন অনুসরণ করতে হবে। লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ যে কোনো ঔষধের জন্য যে বিষয় উপযুক্ত মনে করবে সেভাবেই মানদন্ড নির্ধারণ করতে পারবে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসরণ: মাদকদ্রব্য জাতীয় কোনো ঔষধ অথবা ঔষধের কাঁচামাল আমদানি-রপ্তানি, উৎপাদন , মজুদ ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে মাদকদ্রব্য আইনের সংশ্লিষ্ট ধরারাগুলো প্রযোজ্য হবে। কোনো ঔষধ অথবা ভ্যাকসিনের নিবন্ধন বিলম্ব ফি গ্রহণপূর্বক দুই মেয়াদ পর্যন্ত নবায়ন করা যাবে এবং দুই মেয়াদ অতিক্রম হবার পূর্বে নবায়নের আবেদন না করলে উক্ত পদে নিবন্ধন বাতিল হবে। একই সঙ্গে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ মানবহির্ভূত অথবা নিবন্ধন বাতিলকৃত অথবা নিবন্ধন সাময়িক বাতিলকৃত অথবা উৎপাদন স্থগিতর্কৃত ঔষধ অথবা কোনো মানুষ অথবা কোনো প্রাণিদেহের জন্য ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে ওই ঔষধ বাজার থেকে প্রত্যাহার করে ধবংস করতে পারবে। এছাড়া কোনো ঔষধ উৎপাদনকারী অথবা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান উপধারা (১) এর অধীন গাইডলাইন অনুসরণ না করলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ বিক্রয়, উৎপাদন এবং লাইসেন্স সাময়িকভাবে বাতিল করতে পারবে।
ঔষধ বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা এবং দন্ড : কোনো ব্যক্তি সর্বসাধানের চলাচলের পথে মহাসড়ক, ফুটপাত অথবা পার্ক অথবা কোনো গণপরিবহনে অথবা গাড়িতে কোনো প্রকার ফেরি করে ঔষধ বিক্রয় করতে পারবে না। একই সঙ্গে কোনো ব্যক্তি জ্ঞাতসারে বা ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো ঔষধ ভেজাল করতে পারবে না। এছাড়া কোনো ব্যক্তি যদি বিধান লঙ্ঘন করে এক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদন্ড অথবা অনুর্ধ্ব ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং ২০ লাখ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত হবে বলে ঔষধ আইন-২০১৮-এর খসড়া চুড়ান্ত করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।