পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিজস্ব ভবন পেয়ে আবেগাপ্লুত নির্বাচন কমিশন (ইসি) সংশ্লিষ্টদের মুখ ভার হয়ে উঠেছে বছর না ঘুরতেই। অত্যাধুনিক ও মনকাড়া ডিজাইনে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে গড়ে ওঠা নির্বাচন ভবন ও নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবন (ইটিআই) এখন যেন ভূতের বাড়িতে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই ভবন দু’টিতে ঘটছে অদ্ভূত সব ঘটনা। যে নিয়ন আলোয় চোখ জুড়াতো শখের সেই বাতিটি জ¦লছে না হঠাৎ করেই। সাধারন বাতিগুলোও এই জ¦লে এই নেভে। রুমে রুমে চলে অন্ধকারের রাজত্ব। সামান্য বৃষ্টি হলেই ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ে পানি। আর পানির ছোঁয়া পেলেই নড়ে না বিদেশ থেকে আনা দামী লিফটগুলো। এসব নানাবিধ সমস্যায় ভুগে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন নির্বাচন কমিশন ভবন সংশ্লিষ্টরা। ভুগতে হচ্ছে আগত দর্শণার্থীদেরও। সঙ্গত কারণেই গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত অধিদপ্তর বাস্তবায়িত প্রায় দু’শো কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সবমহলে।
এদিকে স্বপ্নের ভবনের এই বেহাল দশায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয় কর্মরতরা। অসন্তোষ বিরাজ করছে ইসি সচিবসহ নির্বাচন কমিশনারদের মনেও। ইসি সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সমস্যা সমাধানে কমিশন থেকে গণপূর্ত অধিদপ্তরকে বারবার তাগাদা দেয়া হলেও প্রতিষ্ঠানটি তা আমলে নিচ্ছে না। ক’দিন আগেও তাদের তাগাদা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে দক্ষিণ এশিয়ার নির্বাচন কমিশনাররা বাংলাদেশে নির্বাচন ভবনে আসবেন। কিন্তু গণপূর্ত অধিদপ্তর যেভাবে নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে তাতে মনে হচ্ছে বিদেশী এসব মেহমানদের কাছে ইসি এবং বাংলাদেশ সরকারের ইমেজ ধরে রাখাই মুশকিল হয়ে যাবে। ইসির তাগাদার বিষয়টি স্বীকার করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তরও। তবে নির্বাচন ভবনের কাজ অনেক আগে হওয়ায় বর্তমানে কর্মরতরা এর দায় নিতে চাইছেন না।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, নির্বাচন ভবন ও ইটিআই ভবনের নানা সমস্যার বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরকে কয়েক দফা চিঠি দেয়া হলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। কয়েকদিন আগেও তাদের চিঠির মাধ্যমে সমস্যাদি অবগত করা হয়েছে এবং এসব সমস্যা সমাধানে তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা জোন) মো. আব্দুল হাই দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, নির্বাচন ভবনে নানা ধরনের সমস্যা আছে বলে শোনা যাচ্ছে। অনেক আগেই এটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে কর্মরতদের অনেকেই এ কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তাই বিষয়টি সম্পর্কে তারা ভালভাবে ওয়াকিবহাল নন। ইসির সাম্প্রতিক তাগাদার বিষয়ে তিনি অবগত নন জানিয়ে এ বিষয়ে এখন যদি কোনো চিঠি আসে তবে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ইসি সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব নিয়ে আলোচনা করেছেন দায়িত্বশীলরা। আলোচনায় অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এক বছরেই নির্বাচন কমিশনের নতুন ভবনটি সমস্যা জর্জড়িত হয়ে পড়েছে। একই অবস্থায় ইটিআই ভবনও। একটু বৃষ্টি হলেই ভবনের ভেতরে পানি ঢুকে যাচ্ছে। কয়েকটি তলায় পানি জমে গুরুত্বপূর্ণ নথি নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া অন্তত ২২টি রুমের এসি ঠিকভাবে কাজ করে না। তিনটি লিফট ত্রু টিযুক্ত। ভবনের ভেতরে ও বাইরে বৈদ্যুতিক সমস্যাতো রয়েছেই। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই এসব সমস্যা জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করতে গণপূর্ত অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়েছে ইসি সচিবালয়। আগামী ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় দক্ষিণ এশিয়ার নির্বাচন কমিশনারদের সংগঠন ‘ফেমবোসা’র সম্মেলনের আগেই এসব সমাধানের জন্য বলা হয়েছে। ওই সম্মেলনে অংশ নেয়া বিভিন্ন দেশের নির্বাচন কমিশনারদের ইসি ভবন পরিদর্শনে আসার কথা রয়েছে।
গত বছরের জুনে ‘নির্বাচন ভবন’ ও ‘ইটিআই ভবন’ কমিশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ইলেকশন রিসোর্স সেন্টার (ইআরসি) নামে পরিচিত প্রকল্পের আওতায় ইসির নিজস্ব ভবন দুটি অংশে নির্মিত হয়। এর মধ্যে ইটিআই ভবন ১২ তলা এবং নির্বাচন ভবন ১১ তলাবিশিষ্ট। এতে ব্যয় হয় প্রায় ২০০ কোটি টাকা। বৈঠকের কার্যবিবরণীতে ভবনের সমস্যা সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচন ভবনের নিচ তলা, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম তলাসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে। বেজমেন্ট-১ এ পানি জমে থাকে এবং বেজমেন্ট-২ এ পানি আসায় লিফট বন্ধ রাখতে হয়। ভবনের চতুর্থ তলায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) ফ্লোরে ফোয়ারার ফিল্টার নষ্ট। এ ছাড়া দ্বিতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, সপ্তম ও অষ্টম তলার ১৪টি রুমের এসি ঠিকভাবে কাজ করে না। এসব রুম অল্প ঠান্ডা হয়। আর দ্বিতীয়, তৃতীয় ও সপ্তম তলার ৮টি রুমে এসি মোটেও ঠান্ডা বাতাস দেয় না।
এতে আরও বলা হয়, বেজমেন্ট অডিটোরিয়ামের দুটি এসি পুরাই নষ্ট। মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, সাউন্ড সিস্টেম, লাইটিং বক্স, স্ক্রিন কন্ট্রোলার ও ব্যানার কন্ট্রোলার নষ্ট হয়ে আছে। ভবনের তিনটি লিফটে ত্রু টি রয়েছে। এর মধ্যে দুটি প্রায়শ আটকে যায়। একটি উপরে উঠতেই জোরে ঝাঁকি দেয়। নির্বাচন ভবনের মূল নিয়ন বাতি ঠিকভাবে জ্বলে না। নির্বাচন ভবনের উত্তর দিকের বাগান স্বর্ণালী, দক্ষিণ দিকের বর্ণালী চত্বর, পশ্চিম দিকের বড় লেক ও ফোয়ারা এবং পশ্চিম দিকের ফোয়ারার মিউজিক লাইট, হ্যালোজেন নষ্ট হয়ে আছে। ওই বৈঠকে এসব সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে গণপূর্ত অধিদফতরকে নির্দেশনা দেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।