পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সিগনাল বাতি আছে, কিন্তু জ্বলে না। গাড়ি চলে ট্রাফিক পুলিশের হাতের ইশারায়। থামেও ইশারায়। এতে করে যানজট নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। যদিও ট্রাফিক পুলিশের দাবি, হাতের ইশারাতেই ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে সেক্ষেত্রে ঝুঁকি একটু বেশি। কারণ অনেক সময় হাতের ইশারা না মেনে আগেভাগেই গাড়িগুলো চলতে থাকে অথবা থামেনা। বিশেষজ্ঞদের মতে, রিমোট কন্ট্রোলে ট্রাফিক বাতি নিয়ন্ত্রণ করলে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা অনেক সহজ হলেও যানজটের ভোগান্তি কমানো যাবে না। ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে তাদের টেকনিক্যাল ইউনিট গঠনের প্রস্তাব অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
জানা গেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন সিটিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সিগনাল বাতি আছে মোট একশ’ টি। এর মধ্যে ঢাকা উত্তরে আছে ৬০টি ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আছে ৪০টি। বর্তমানে বেশিরভাগই অচল। কোনটি বহুদিন ধরে জ্বলে না। আবার কোনটি মাঝে মধ্যে জ্বলে। এমনও মোড় আছে যেখানে সিগনাল বাতি জ্বললেও সেগুলোতে পাশ কাটিয়ে ট্রাফিক পুলিশের হাতের ইশারায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
সরেজমিনে রাজধানীর শাহবাগ, মালিবাগ, শিক্ষা ভবন ও জিরো পয়েন্ট মোড়ে দেখা গেছে, লাল-হলুদ-সবুজ যে বাতিই জ্বলুক না কেন হাত উঁচিয়ে সংকেত দিয়ে গাড়ি সামলাচ্ছেন রাস্তার মধ্যভাগে দাঁড়ানো ট্রাফিক সদস্যরা। গাড়িচালকেরা লক্ষ্য করছেন কখন কাঙ্খিত সংকেত আসবে। রাজধানীর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মোড়েরও একই অবস্থা। কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাতের ইশারায় কাজ করার সুবিধাও আছে আবার অসুাবিধাও আছে। একজন বলেন, ব্যস্ত সময়ে যখন কোনো একদিকে গাড়ির চাপ বেড়ে যায় তখন অটোমেটিক সিগনালের চেয়ে হাতের ইশারাতে কাজ হয় বেশি। কারণ তখন যেদিকে যানজট বেশি সেদিকের গাড়িগুলোতে বেশি প্রাধ্যান্য দিয়ে বিপরীতমুখি গাড়িগুলোতে আটকে রাখা যায়। একইভাবে ভিআইপি মুভমেন্টের সময়ও হাতের ইশারায় কাজ করতে সুবিধা। আরেকজন বলেন, হাতের ইশারায় কাজ করা কষ্টকর। সারাক্ষণ চারিদিকের গাড়ির প্রতি নজর রাখতে হয়। এরপর হুইসেল বাজিয়ে হাত উঁচিয়ে গাড়ি থামাতে হয়। তাতে কেউ থামে, কেউ থামে না। না দেখার ভান করে অনেকেই দ্রুত চলে যায়। তাতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। এমনকি আমাদেরও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। অনেক সময় আমাদের উপর গাড়ি তুলে দেয়ার মতো অবস্থা হয়। এভাবে কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশ প্রাণও হারিয়েছেন বলে জানান ওই ট্রাফিক পুলিশ।
জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২২ নভেম্বরে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ঢাকা আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের আওতায় ৭০টি স্থানে ট্রাফিক সিগনাল বাতি স্থাপন করা হয়। এতে খরচ হয় ২৫ কোটি টাকা। ওই ৭০টি সিগন্যাল বাতিতে বিদ্যুত খরচ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রতিবছর খরচ হয় প্রায় ৮০ লাখ টাকা, যা সিটি করপোরেশনই বহন করে থাকে। অথচ এই ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ের কোনো সুফলই পায় নি নগরবাসী।
ট্রাফিক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে সিগন্যাল বাতি চালু হওয়ার পর সবুজ-হলুদ-লাল বাতির মাধ্যমে যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করত ট্রাফিক পুলিশ। তবে দুই বছর না যেতেই সিগন্যাল বাতিতে দেখা দেয় ত্রু টি। এখন ৭০টি মোড়ে বেশিরভাগ সিগনাল বাতিই বিকল। এতে করে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ হয় এখন ট্রাফিক পুলিশের হাতের ইশারায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজধানীতে যানজটের সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে নিয়ম না মানার অভ্যাস। সিগন্যালের যন্ত্র তো যন্ত্রের মতোই কাজ করবে। সেক্ষেত্রে সিগনাল বাতি প্রতিস্থাপন করতে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রও লাগাতে হবে-যাতে কেউ সিগনাল অমান্য করলে স্বয়ংক্রিংভাবে মামলা করা যায়।
ডিএসসিসি ও ডিএনসিসির তথ্যমতে, যানজট নিরসনে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকার ৬৫টি ট্রাফিক সিগন্যাল মোড়ে টাইমার কাউন্টডাউন যন্ত্র বসানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৩৫টি মোড়ে পরীক্ষামূলকভাবে এ যন্ত্র চালু করা হয়েছে। এ প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা বলেন, যানজটের কষ্ট লাঘবেই সিগন্যাল বাতির পাশাপাশি অত্যাধুনিক টাইমার কাউন্টডাউন যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। মানুষের মধ্যে আইন মানার অভ্যাস না তৈরি হলে কোনো পদ্ধতিই কাজে আসবে না। বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর সামছুল হকের মতে, সিগন্যাল বাতি কিংবা টাইমার কাউন্টডাউন পুরোপুরি চালু হলেও যানজট নিরসন সম্ভব নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।